যশোরের রামনগরের জামিয়া ইসলামীয়া মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত একটি প্রোগাম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়ানোকে ঘিরে তুমুল আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। অস্ত্রহাতে মুখে মুখোশ পরা দুইজন দুই পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। আর মাঝে বক্তব্য দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। তবে বাংলায় নয় আরবি ভাষায় দেয়া হচ্ছে এই ভাষণ। গতকাল নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হলে নানামুখি আলোচনার একপর্যায়ে রাতে বিভিন্ন সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গেছে। আলেমদের কারো কারো দাবি এটি ইসলামী কোনো অভিনয় অনুষ্ঠানের ভিডিও চিত্র। আবার কেউ কেউ ফেইসবুকে পোস্ট করে বলছেন একে ফোরটি সেভেন অস্ত্র হাতে এটি জঙ্গিদের সমাবেশ। এ ভিডিওকে ঘিরে আতঙ্কেরও সৃষ্ট হচ্ছে সাধারন জনমনে। এদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এটি যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতার একটি ভিডিও চিত্র।
নেট দুনিয়ায় যে ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে একজন বক্তা উচ্চ কণ্ঠে আরবি ভাষার ভাষণ দিচ্ছেন এবং কালো পোশাক পরা দুজন বডিগার্ড সশস্ত্র অবস্থায় বক্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। দু’জনের হাতেই একে ৪৭ সদৃশ অস্ত্র।
চোখ ছাড়া তিনজনেরই মুখ ঢাকা। ৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি অনেকের ফেইসবুকে ভাসছে । পোস্ট ও শেয়ারের কারণে তা রাতে নেট দুনিয়া সয়লাব হয়। অনেকেই সাংবাদিকদের কাছে ফোন দিয়ে আসলে ঘটনাটি কি এ নিয়ে নানা কৌতুহলি প্রশ্ন করছেন। অনেকে ফেইবুক পেজে ওই ভিডিও পোস্ট করে বলছেন রাজারহাট রামনগরে ওটা জঙ্গিদের কোনো সমাবেশ। অনুষ্ঠানের ব্যাক স্কিনে লেখা রয়েছে যশোর জামিআ ইসলামীয়া মাদ্রাসা। তবে খোঁজ নিতে গেলে কয়েকজন আলেম জানান, ওটা কোনো জঙ্গিদের অনুষ্ঠান নয় ওটা ইসলামী অনুষ্ঠানের অভিনয়। একটি পক্ষ ওটাকে পুজি করে ফেইসবুক গরম করছে। এমনকি আইনশৃংখলা বাহিনীকেও ভুল ম্যাসেজ দেয়ার চেষ্টা করছে। রীতিমত জঙ্গি কর্মকান্ড বলেও অপপ্রচার করছে। সত্য হল এটা একটি অভিনয় অনুষ্ঠান মাত্র। আর ওগুলো খেলনা রাইফেল।
এব্যাপারে ১৮ ডিসেম্বর রাতে বক্তব্য নেয়ার জন্য জামিআ ইসলামীয়ার মুহতামিম মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকীর ০১৭১৩- ০৬০৬৪০ নাম্বারে কথা বলতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কয়েক দফা ফোন করলেও রিসিভ হয়নি। তথ্য মিলেছে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।
তবে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাখফুর রহমান জানিয়েছেন, ফেইসবুকে যেভাবে প্রচার করছেন আসলে ঘটনাটি তা নয। মূলত কয়েকদিন আগে জামিআ ইসলামীয়াতে বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যেমন খুশি তেমন সাজো একটি ইভেন্ট ছিল। সেখানে হামাস নেতা সেজে একজন বক্তব্য দিয়েছিলেন। পাশে ছিলেন নিরাপত্তা প্রহরী সেজে দুইজন। তাদের হাতের ওই অস্ত্র আসল নয় বরং নকল। কাজেই বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। এদিকে রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে তল্লাশী চালিয়ে কর্কশীট দিয়ে তৈরী খেলনা অস্ত্র দুটি উদ্ধার করেছে। কোতয়ালি ওসি বলেছেন এটি অভিনয় ছিল।