Dhaka ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জয়পুরহাট সুগার মিলস্ ৭৯৩ কোটি টাকা লোকসানে বোঝা মাথায় নিয়ে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে

২০ ডিসেম্বর ২০২৪ দেশের বৃহত্তম জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেড ৭৯৩ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়েই

আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় ২০২৪-২৫ মৌসুমের ৬২তম আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রমের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।  গত আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন  মৌসুমে এক কেজি চিনিতে মিলের লোকসান হয়েছে ৪০২ টাকা! বিপুল অঙ্কের টাকা লোকসান নিয়ে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে । ২০২৪-২৫ মৌসুমের ৬২তম আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন উদ্বোধনের পর তা চলবে টানা ৩৪ দিন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে জয়পুরহাট সুগার মিলস লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩-৬৪ সাল থেকে চিনি উৎপাদন শুরু হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার আওতাধীন এই মিলটি আখ মাড়াই মৌসুম শুরুর পর প্রায় ৩০ বছর লাভ-লোকসান মিলিয়ে চলে। এরপর ১৯৯৪-৯৫ আখ মাড়াই মৌসুমের পর থেকে মিলটি আর লাভের মুখ দেখেনি। প্রতি বছরই লোকসান গুনতে হয় মিলটির। আর এই লোকসান বাড়তে বাড়তে এ পর্যন্ত মোট প্রায় ৭৯৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

মিলটির সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন মৌসুমে ৩৭ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন আখ মাড়াই হয়েছে। এতে এক হাজার ১১৩ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। এখনও ৩৭০ মেট্রিক টন চিনি মজুদ রয়েছে। ওই মৌসুমে ব্যাংক ঋণের সুদসহ প্রতি কেজি চিনি উৎপাদনে ৫২৭ টাকা ব্যয় হয়েছে। আর সুদ ছাড়া ব্যয় হয়েছে ৩৮১ টাকা। উৎপাদিত চিনি বাজারে ১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। সেই হিসাবে এক কেজি চিনিতে লোকসান গুনতে হয়েছে সুদসহ ৪০২ টাকা ও সুদ ছাড়া ২৫৬ টাকা। এক কেজি চিনিতে সুদসহ লোকসানের পরিমাণ বেশি। সবমিলিয়ে ওই মৌসুমে মোট প্রায় ৫৩ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। ২০২২-২৩ মৌসুমে লোকসান ছিল ৬৯ কোটি টাকা।

জয়পুরহাট সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (কৃষি) ফরহাদ হোসেন জানান,  এবার চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে ৩ হাজার ২ একর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। এসব জমির ৫৫ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৫ মেট্রিক টন। মিলটির আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রম শুক্রবার শুরু হয়ে তা আগামী ৩৪ দিন চলানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

জয়পুরহাট চিনিকল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. আখলাছুর রহমান বলেন, আগের তুলনায় দিনদিন আখের আবাদ বাড়ছে। গত মৌসুমে ৭৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা চাষিদের ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এই মৌসুমেও চাষিদের ভর্তুকি দেওয়া হবে। প্রতি মৌসুমে আখের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত মৌসুমে কুইন্টাল প্রতি ৫৫০ টাকা দরে আখ কেনা হলেও এবার ৬০০ টাকা দরে কেনা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংকল্পবদ্ধ হওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের

জয়পুরহাট সুগার মিলস্ ৭৯৩ কোটি টাকা লোকসানে বোঝা মাথায় নিয়ে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে

Update Time : ০৩:৩৮:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

২০ ডিসেম্বর ২০২৪ দেশের বৃহত্তম জয়পুরহাট সুগার মিলস্ লিমিটেড ৭৯৩ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়েই

আজ শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় ২০২৪-২৫ মৌসুমের ৬২তম আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রমের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।  গত আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন  মৌসুমে এক কেজি চিনিতে মিলের লোকসান হয়েছে ৪০২ টাকা! বিপুল অঙ্কের টাকা লোকসান নিয়ে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে । ২০২৪-২৫ মৌসুমের ৬২তম আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন উদ্বোধনের পর তা চলবে টানা ৩৪ দিন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে জয়পুরহাট সুগার মিলস লিমিটেড প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩-৬৪ সাল থেকে চিনি উৎপাদন শুরু হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার আওতাধীন এই মিলটি আখ মাড়াই মৌসুম শুরুর পর প্রায় ৩০ বছর লাভ-লোকসান মিলিয়ে চলে। এরপর ১৯৯৪-৯৫ আখ মাড়াই মৌসুমের পর থেকে মিলটি আর লাভের মুখ দেখেনি। প্রতি বছরই লোকসান গুনতে হয় মিলটির। আর এই লোকসান বাড়তে বাড়তে এ পর্যন্ত মোট প্রায় ৭৯৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

মিলটির সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন মৌসুমে ৩৭ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন আখ মাড়াই হয়েছে। এতে এক হাজার ১১৩ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। এখনও ৩৭০ মেট্রিক টন চিনি মজুদ রয়েছে। ওই মৌসুমে ব্যাংক ঋণের সুদসহ প্রতি কেজি চিনি উৎপাদনে ৫২৭ টাকা ব্যয় হয়েছে। আর সুদ ছাড়া ব্যয় হয়েছে ৩৮১ টাকা। উৎপাদিত চিনি বাজারে ১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। সেই হিসাবে এক কেজি চিনিতে লোকসান গুনতে হয়েছে সুদসহ ৪০২ টাকা ও সুদ ছাড়া ২৫৬ টাকা। এক কেজি চিনিতে সুদসহ লোকসানের পরিমাণ বেশি। সবমিলিয়ে ওই মৌসুমে মোট প্রায় ৫৩ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। ২০২২-২৩ মৌসুমে লোকসান ছিল ৬৯ কোটি টাকা।

জয়পুরহাট সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (কৃষি) ফরহাদ হোসেন জানান,  এবার চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে ৩ হাজার ২ একর জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। এসব জমির ৫৫ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৫ মেট্রিক টন। মিলটির আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন কার্যক্রম শুক্রবার শুরু হয়ে তা আগামী ৩৪ দিন চলানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

জয়পুরহাট চিনিকল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. আখলাছুর রহমান বলেন, আগের তুলনায় দিনদিন আখের আবাদ বাড়ছে। গত মৌসুমে ৭৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা চাষিদের ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এই মৌসুমেও চাষিদের ভর্তুকি দেওয়া হবে। প্রতি মৌসুমে আখের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত মৌসুমে কুইন্টাল প্রতি ৫৫০ টাকা দরে আখ কেনা হলেও এবার ৬০০ টাকা দরে কেনা হবে।