Dhaka ১০:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: ড. ইউনূস

অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন। সংস্কার ও সংসদ নির্বাচনের পর নিজ কাজে ফিরতে চান এই নোবেলীজয়ী।তিনি আরো আশ্বস্ত করেছেন জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে মাথাচাড়া দেবে না বলে, তরুণরা ধর্মনিরেপক্ষ এবং তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়।

ড. ইউনূস বলেন, শপথ নেয়ার পর থেকে দুর্নীতি ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি সংস্কারে নেমেছেন অন্তর্র্বতী সরকার। সেই প্রচেষ্টায় সুনাম কুড়িয়ে যাচ্ছেন বিশ্ব মহলে। তারই অংশ হিসেবে এ বছর দ্য ইকোনোমিস্টের বর্ষসেরা দেশের তালিকায় জায়গায় করে নেয় বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছে এ ব্রিটিশ সাময়িকী।

সংবাদমাধ্যমটির সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে আসে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে।আশ্বস্ত করে বলেন, তরুণরা ধর্মনিরপেক্ষ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগোচ্ছে। অভ্যুত্থানে তরুণদের কৃতিত্বও দেন ইউনূস। তরুণদের দিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

১৫ বছরের স্বৈরাচার সরকারের পতন হওয়ায় সম্প্রতি ইকোনমিস্টের কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার খেতাব জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারটি নেয় ব্রিটিশ সাময়িকীটি। পে-অফ…।

প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে এবার বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম। এ উপলক্ষে সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব। যা আমি সারা জীবন ধরে করেছি এবং তরুণরাও এটিকে ভালোবাসে। সুতরাং আমি আমার সেই দলে বা কার্যক্রমে ফিরে যাব যেটা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।

প্রসঙ্গত, বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম বলেছে- সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকারী কি না, সেই হিসাবে নয়; সেরা দেশ বেছে নেওয়া হয় আগের ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে কি না, সেই বিচারে।

এবারের সেরা দেশ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত তালিকায় ছিল পাঁচটি দেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড রয়েছে এই তালিকায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকেই বেছে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সম্পর্কে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করছিলেন। দেশের স্বাধীনতার হিরোর এক কন্যা হিসেবে তিনি একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

তারা আরও বলেছে, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে। ২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি

আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: ড. ইউনূস

Update Time : ০৪:২৩:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন। সংস্কার ও সংসদ নির্বাচনের পর নিজ কাজে ফিরতে চান এই নোবেলীজয়ী।তিনি আরো আশ্বস্ত করেছেন জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে মাথাচাড়া দেবে না বলে, তরুণরা ধর্মনিরেপক্ষ এবং তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়।

ড. ইউনূস বলেন, শপথ নেয়ার পর থেকে দুর্নীতি ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি সংস্কারে নেমেছেন অন্তর্র্বতী সরকার। সেই প্রচেষ্টায় সুনাম কুড়িয়ে যাচ্ছেন বিশ্ব মহলে। তারই অংশ হিসেবে এ বছর দ্য ইকোনোমিস্টের বর্ষসেরা দেশের তালিকায় জায়গায় করে নেয় বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের বিশেষ সাক্ষাৎকার নিয়েছে এ ব্রিটিশ সাময়িকী।

সংবাদমাধ্যমটির সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে আসে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে।আশ্বস্ত করে বলেন, তরুণরা ধর্মনিরপেক্ষ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগোচ্ছে। অভ্যুত্থানে তরুণদের কৃতিত্বও দেন ইউনূস। তরুণদের দিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

১৫ বছরের স্বৈরাচার সরকারের পতন হওয়ায় সম্প্রতি ইকোনমিস্টের কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার খেতাব জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারটি নেয় ব্রিটিশ সাময়িকীটি। পে-অফ…।

প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে এবার বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম। এ উপলক্ষে সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব। যা আমি সারা জীবন ধরে করেছি এবং তরুণরাও এটিকে ভালোবাসে। সুতরাং আমি আমার সেই দলে বা কার্যক্রমে ফিরে যাব যেটা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।

প্রসঙ্গত, বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম বলেছে- সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকারী কি না, সেই হিসাবে নয়; সেরা দেশ বেছে নেওয়া হয় আগের ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে কি না, সেই বিচারে।

এবারের সেরা দেশ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত তালিকায় ছিল পাঁচটি দেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড রয়েছে এই তালিকায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকেই বেছে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সম্পর্কে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করছিলেন। দেশের স্বাধীনতার হিরোর এক কন্যা হিসেবে তিনি একসময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

তারা আরও বলেছে, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে। ২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।