Dhaka ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে নির্যাতিত হচ্ছে সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধি: দেখার কেউ নাই

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলা সীমান্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য। রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ ও সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে নির্যাতিত হচ্ছে একাধিক সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধি। এই দুই উপজেলা সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন রাজস্ব ফাঁকি ভারত থেকে কয়লা, পাথর, কসমেটিকস, গরু, কমলা, ফুছকা, জিরা, নাসির উদ্দিন বিড়ি, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাচাঁর করাসহ দেশীয় পন্য রসুন, মাছ, শাক-সবজি ও সুপারীসহ বিভিন্ন মালামাল ভারতে পাচাঁর হলেও দেখার কেউ নাই।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল সোমবার (২৩শে ডিসেম্বর) রাত ১১টা থেকে চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য খ্যাত তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা, লালঘাট, কলাগাঁও মাইজহাটি ও জংগলবাড়ি এলাকা দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত প্রায় ৫শ মেঃটন কয়লা বিজিবি ক্যাম্পের আশেপাশে শুল্কস্টেশনের ৮-১০টি ডিপুতে মজুত করে সোর্স পরিচয়ধারী চিহ্নিত চোরাকারবারীরা।

এরপর আজ মঙ্গলবার (২৪শে ডিসেম্বর) ভোর থেকে পাচাঁরকৃত সেই কয়লা ট্রলি বোঝাই করে শুল্কস্টেশনের বৈধ কয়লার সাথে প্রকাশ্যে নৌকা বোঝাই করা হলেও বিজিবি কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট ও লাকমা, টেকেরঘাট সীমান্তের নীলাদ্রী, পুলিশ ফাঁড়ি ও হাইস্কুলের পিছন দিয়েসহ বুরুংগা, চাঁনপুর সীমান্তের রজনী লাইন, নয়াছড়া এলাকা দিয়ে দিনে ও রাতে অবাধে কয়লা পাচাঁর করে নিলাদ্রী লেক ও পাথরঘাটাসহ জয় বাংলা বাজারে পাশে ও বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে পাটলাই নদীর তীরে ও দুধের আউটা, বানিয়াগাও, তেলিগাঁও, জামালপুর গ্রামে পৃথক ভাবে ওপেন মজুত করা হচ্ছে।

এছাড়াও প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার (২৪শে ডিসেম্বর) ভোর থেকে লাউড়গড় সীমান্তের ১২০৩পিলার ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোষ্টের সামনে দিয়ে ভারতের ৩-৪শ গজ ভিতর থেকে ৪-৫শ লোক দিয়ে কয়লা ও পাথর শুরু হয়। পাচাঁরকৃত পাথর ৪০-৫০টা ঠেলাগাড়ি দিয়ে ও পাচাঁরকৃত কয়লা ১০-১২টা মোটর সাইকেল দিয়ে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে ওপনে লাউড়গড় বাজারে পাশে নিজে মজুত করা হয়। আর এই পাচাঁর চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। অন্যদিকে সন্ধ্যার পর থেকে জাদুকাটা নদী দিয়ে শতশত বারকি নৌকা বোঝাই করে ভারত থেকে পাচাঁর করা হয় কয়লা ও পাথরসহ কসমেটিকস, চিনি, ফুছকা ও মদসহ বিভিন্ন মালামাল। পাশের চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলার ১২০৩পিলার ও আনন্দপুরসহ কড়ইগড়, রাজাই এলাকা দিয়ে প্রতিরাতে কোটি টাকার মালামাল পাচাঁর করে বাদাঘাট, শিমুলতলা ও কামড়াবন্দ গ্রামে নিয়ে মজুত করে সোস পরিচয়ধারী চোরাকারবারীরা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে চাঁনপুর ও লাউড়গড় সীমান্ত চোরাচালান বন্ধ না হয়ে দিনদিন শুধু বেড়েই চলেছে। আর এই চোরাচালান ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করার কারণে গত ২০শে অক্টোবর সন্ধ্যায় উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার কফিল উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করে চোরাকারবারীরা।

এব্যাপারে আহত ইউপি সদস্য কফিল উদ্দিন বলেন- চাঁনপুর সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে কোটিকোটি টাকার মালামাল পাচাঁর করা হয়সহ চাঁদাবাজির বিষয়ে বিজিবি ও পুলিশকে জানানোর কারণে চোরাকারবারীরা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সুনামগঞ্জ জেলার সিনিয়র সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া বলেন- সীমান্ত চোরাচালান  ও চাঁদাবাজি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে মিথ্যা মামলা ও হামলার শিকার হতে হয়। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার (১৯ শে ডিসেম্বর) দুপুরে মধ্যনগর উপজেলার মাটিরাবন ও বাঙ্গালভিটা সীমান্ত দিয়ে গরু, মহিষ, কসমেটিকস, চিনি, শাড়ী, মাছ, সুপারী ও মাদক পাঁচারসহ বেপরোয়া চোরাচালান বাণিজ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক কলেরকণ্ঠের প্রতিনিধি আল-আমিন আহমেদ (২৭) ও দৈনিক সোনালী কণ্ঠের প্রতিনিধি অনুপ তালুকদার অভির ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে স্থানীয় চোরাকারবারীরা। পরে ওই দুই সাংবাদিককে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এব্যাপারে আহত সাংবাদিক আল-আমিন বলেন- সীমান্ত চোরাচালানের সংবাদ প্রকাশের জের ধরে বিএনপি নামধারী চোরাকারবারীরা পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়ে আমাকে আহত করেছে। সাংবাদিক অনুপ তালুকদার বলেন- লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে কোটি টাকার মালামাল পাচাঁর করে তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। এব্যাপারে মধ্যনগর থানার ওসি সজীব রহমান জানান- সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৬ই ডিসেম্ভর দুপুরে টেকেরঘাট সীমান্তের বড়ছড়া শুল্কস্টেশনে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ১টি রাইফেলসহ জালাল মিয়া (২০), রাজু মিয়া (২০) ও রাসেল মিয়া (২০) গ্রেফতার করাসহ চলতি বছরের ২৩শে অক্টোবর ভোরে চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলার আনন্দপুর ও ১২০৩পিলার সংলগ্ন বড়গোফ নামকস্থানে অভিযান চালিয়ে ৬টি ডেটেনেটর ও ৬টি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছিল র‌্যাব। এছাড়াও এই সীমান্তে অস্ত্র নিয়ে চোরাকারবারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০১৯সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী টেকেরঘাট সীমান্তের রজনী লাইন এলাকা থেকে ৪৪ পিস ইলেকটিক ডেটোনেটর, ৬২ পিস কেলভেক্স ও ১৫ বোতল মদসহ আবুল কাসেম (২৮) কে বিজিবি গ্রেফতার করাসহ ওই বছরের ১৭ই মার্চ টেকেরঘাট নীলাদ্রী লেকপাড়ের কোয়ারী থেকে অভিযান চালিয়ে গুলি ভর্তি বিদেশী রিভলবারসহ শহিদ মিয়া (৩৫) কে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তাছাড়া কয়লা পাচাঁর করতে গিয়ে ভারতের গুহায় মাটি চাপা পড়ে ১০জন, বালিয়াঘাটে ৩৫জন, টেকেরঘাটে ২৮জন, চানপুরে ১৬জন ও লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে ও নদীতে ডুবে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বিনামূল্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ জিংক ধানের বীজ বিতরণ

সুনামগঞ্জে নির্যাতিত হচ্ছে সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধি: দেখার কেউ নাই

Update Time : ০৬:২৯:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলা সীমান্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য। রাষ্ট্রীয় স্বার্থে এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ ও সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে নির্যাতিত হচ্ছে একাধিক সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধি। এই দুই উপজেলা সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন রাজস্ব ফাঁকি ভারত থেকে কয়লা, পাথর, কসমেটিকস, গরু, কমলা, ফুছকা, জিরা, নাসির উদ্দিন বিড়ি, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাচাঁর করাসহ দেশীয় পন্য রসুন, মাছ, শাক-সবজি ও সুপারীসহ বিভিন্ন মালামাল ভারতে পাচাঁর হলেও দেখার কেউ নাই।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল সোমবার (২৩শে ডিসেম্বর) রাত ১১টা থেকে চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য খ্যাত তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা, লালঘাট, কলাগাঁও মাইজহাটি ও জংগলবাড়ি এলাকা দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত প্রায় ৫শ মেঃটন কয়লা বিজিবি ক্যাম্পের আশেপাশে শুল্কস্টেশনের ৮-১০টি ডিপুতে মজুত করে সোর্স পরিচয়ধারী চিহ্নিত চোরাকারবারীরা।

এরপর আজ মঙ্গলবার (২৪শে ডিসেম্বর) ভোর থেকে পাচাঁরকৃত সেই কয়লা ট্রলি বোঝাই করে শুল্কস্টেশনের বৈধ কয়লার সাথে প্রকাশ্যে নৌকা বোঝাই করা হলেও বিজিবি কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট ও লাকমা, টেকেরঘাট সীমান্তের নীলাদ্রী, পুলিশ ফাঁড়ি ও হাইস্কুলের পিছন দিয়েসহ বুরুংগা, চাঁনপুর সীমান্তের রজনী লাইন, নয়াছড়া এলাকা দিয়ে দিনে ও রাতে অবাধে কয়লা পাচাঁর করে নিলাদ্রী লেক ও পাথরঘাটাসহ জয় বাংলা বাজারে পাশে ও বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সামনে পাটলাই নদীর তীরে ও দুধের আউটা, বানিয়াগাও, তেলিগাঁও, জামালপুর গ্রামে পৃথক ভাবে ওপেন মজুত করা হচ্ছে।

এছাড়াও প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার (২৪শে ডিসেম্বর) ভোর থেকে লাউড়গড় সীমান্তের ১২০৩পিলার ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোষ্টের সামনে দিয়ে ভারতের ৩-৪শ গজ ভিতর থেকে ৪-৫শ লোক দিয়ে কয়লা ও পাথর শুরু হয়। পাচাঁরকৃত পাথর ৪০-৫০টা ঠেলাগাড়ি দিয়ে ও পাচাঁরকৃত কয়লা ১০-১২টা মোটর সাইকেল দিয়ে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে ওপনে লাউড়গড় বাজারে পাশে নিজে মজুত করা হয়। আর এই পাচাঁর চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। অন্যদিকে সন্ধ্যার পর থেকে জাদুকাটা নদী দিয়ে শতশত বারকি নৌকা বোঝাই করে ভারত থেকে পাচাঁর করা হয় কয়লা ও পাথরসহ কসমেটিকস, চিনি, ফুছকা ও মদসহ বিভিন্ন মালামাল। পাশের চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলার ১২০৩পিলার ও আনন্দপুরসহ কড়ইগড়, রাজাই এলাকা দিয়ে প্রতিরাতে কোটি টাকার মালামাল পাচাঁর করে বাদাঘাট, শিমুলতলা ও কামড়াবন্দ গ্রামে নিয়ে মজুত করে সোস পরিচয়ধারী চোরাকারবারীরা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে চাঁনপুর ও লাউড়গড় সীমান্ত চোরাচালান বন্ধ না হয়ে দিনদিন শুধু বেড়েই চলেছে। আর এই চোরাচালান ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করার কারণে গত ২০শে অক্টোবর সন্ধ্যায় উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার কফিল উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করে চোরাকারবারীরা।

এব্যাপারে আহত ইউপি সদস্য কফিল উদ্দিন বলেন- চাঁনপুর সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে কোটিকোটি টাকার মালামাল পাচাঁর করা হয়সহ চাঁদাবাজির বিষয়ে বিজিবি ও পুলিশকে জানানোর কারণে চোরাকারবারীরা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সুনামগঞ্জ জেলার সিনিয়র সাংবাদিক মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া বলেন- সীমান্ত চোরাচালান  ও চাঁদাবাজি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে মিথ্যা মামলা ও হামলার শিকার হতে হয়। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতারের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার (১৯ শে ডিসেম্বর) দুপুরে মধ্যনগর উপজেলার মাটিরাবন ও বাঙ্গালভিটা সীমান্ত দিয়ে গরু, মহিষ, কসমেটিকস, চিনি, শাড়ী, মাছ, সুপারী ও মাদক পাঁচারসহ বেপরোয়া চোরাচালান বাণিজ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক কলেরকণ্ঠের প্রতিনিধি আল-আমিন আহমেদ (২৭) ও দৈনিক সোনালী কণ্ঠের প্রতিনিধি অনুপ তালুকদার অভির ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে স্থানীয় চোরাকারবারীরা। পরে ওই দুই সাংবাদিককে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এব্যাপারে আহত সাংবাদিক আল-আমিন বলেন- সীমান্ত চোরাচালানের সংবাদ প্রকাশের জের ধরে বিএনপি নামধারী চোরাকারবারীরা পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়ে আমাকে আহত করেছে। সাংবাদিক অনুপ তালুকদার বলেন- লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে কোটি টাকার মালামাল পাচাঁর করে তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না। এব্যাপারে মধ্যনগর থানার ওসি সজীব রহমান জানান- সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৬ই ডিসেম্ভর দুপুরে টেকেরঘাট সীমান্তের বড়ছড়া শুল্কস্টেশনে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ১টি রাইফেলসহ জালাল মিয়া (২০), রাজু মিয়া (২০) ও রাসেল মিয়া (২০) গ্রেফতার করাসহ চলতি বছরের ২৩শে অক্টোবর ভোরে চাঁনপুর সীমান্তের বারেকটিলার আনন্দপুর ও ১২০৩পিলার সংলগ্ন বড়গোফ নামকস্থানে অভিযান চালিয়ে ৬টি ডেটেনেটর ও ৬টি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছিল র‌্যাব। এছাড়াও এই সীমান্তে অস্ত্র নিয়ে চোরাকারবারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০১৯সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী টেকেরঘাট সীমান্তের রজনী লাইন এলাকা থেকে ৪৪ পিস ইলেকটিক ডেটোনেটর, ৬২ পিস কেলভেক্স ও ১৫ বোতল মদসহ আবুল কাসেম (২৮) কে বিজিবি গ্রেফতার করাসহ ওই বছরের ১৭ই মার্চ টেকেরঘাট নীলাদ্রী লেকপাড়ের কোয়ারী থেকে অভিযান চালিয়ে গুলি ভর্তি বিদেশী রিভলবারসহ শহিদ মিয়া (৩৫) কে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তাছাড়া কয়লা পাচাঁর করতে গিয়ে ভারতের গুহায় মাটি চাপা পড়ে ১০জন, বালিয়াঘাটে ৩৫জন, টেকেরঘাটে ২৮জন, চানপুরে ১৬জন ও লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে ও নদীতে ডুবে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে।