সৈয়দপুরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সমর্থন প্রায় শূণ্যের কোঠায়। বিগত প্রায় ১৬টা বছর ওই সরকারের শাসনামলে হত্যা, গুম ও উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করায় মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়েছে স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ। পক্ষান্তরে স্বৈরশাসকের যাঁতাকলে পিষ্ট বিএনপির সমর্থন বেড়েছে ৬০ শতাংশ। আর জামায়াতের জনসমর্থন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ শতাংশে। আওয়ামী লীগ ও জাপার সমর্থন ১০ শতাংশের কম বলে জানা যায়।
৫ আগস্ট স্বৈরশাসক আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে সৈয়দপুরে প্রায় ৬০% মানুষ বিএনপিকে ভোট দিতে চান। আর জামায়াতকে ভোট দিতে চান ৩০% মানুষ। বিগত দিনে স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করায় জনসমর্থন হারিয়েছে জাতীয়পার্টিও। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয় তাহলে সৈয়দপুরসহ দেশের ৬০ ভাগ মানুষ বিএনপিকে সমর্থন করবে বলে মন্তব্য গণমানুষের।
সৈয়দপুরসহ নীলফামারী-৪ আসনের মানুষ জানান, এ আসনটি ছিল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দখলে। কিন্তু বিগত ১৬টা বছর জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে একতরফা নির্বাচন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের জেল-জুলুম, অত্যাচার ও নিরাপরাধ জামায়াতের নেতাকর্মীদের ফাঁসির কাষ্টে তুলে মৃত্যুদন্ড দেওয়ায় ফুঁসে উঠে দেশের মানুষ। ফলশ্রুতিতে ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র/জনতার আন্দোলনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকার।
অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা আওয়ামী লীগকে ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া ঠিক হবে কিনা জানতে চাইলে সৈয়দপুরসহ নীলফামারী-৪ আসনের মানুষ জানান, অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। কিন্তু আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীকেই ওই নির্বাচনে সুযোগ দেয়া ঠিক হবে না। কারণ ফ্যাসিবাদি আওয়ামী লীগ সরকার ১৬টা বছর ক্ষমতায় থেকে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা ও বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম ও হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতসহ গণমাধ্যম কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার লেলিয়া দেয়া আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে সৈয়দপুরসহ নীলফামারী-৪ আসনের মানুষও রক্ষা পায়নি। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ দূরের কথা তাদের ট্রাইব্যুনাল আদালতে বিচারের পাশাপাশি দেশ থেকে চিরবিদায় করা দরকার বলে জানান এ আসনের গণমানুষ।
সৈয়দপুরের মানুষ বলছেন, স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের লেলিয়া দেয়া হেলমেট বাহিনী, সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন, নীলফামারী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মহসিন মন্ডল মিঠুর অত্যাচারে অতিষ্ট এ আসনের প্রায় ৩ লাখ মানুষ। তাদের কেউ রেলওয়ে কারখানার খালাসি থেকে রেলের জমি দখল বিক্রয় করে বিগত ১৬ বছরে হয়েছেন শত কোটি টাকার মালিক। গড়েছেন বহুতল ভবন। কিনেছেন মূল্যবান গাড়ি। আবার কেউবা টোকাই থেকে স্বেচ্ছাসেবক নেতা পরিচয়ে রেলওয়ে জমি দখল বিক্রি করে হয়েছেন ২০/৩০ কোটি টাকার মালিক। গড়েছেন রেলওয়ের জমিতে বহুতল ভবনসহ বাড়ি গাড়ী। অপরদিকে সৈয়দপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকের জামাতা পরিচয়ে সোহেল নামের এক যুবক রেলের লোহা বিক্রি করে এবং রেলের জমি দখল বিক্রি করে হয়েছেন কোটিপতি। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রায় শূণ্যের কোঠায়।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাচন কমিশন আব্দুল কুদ্দুস সরকার জানান, নীলফামারী-৪ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪,৩১,৯৩৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২,১৭,১৩৩ জন, আর মহিলা ভোটার ২,১৪,৯৫৬ জন। হিজড়া ভোটার সংখ্যা মোট ৫টি।
অর্ন্তবর্তী সরকারের আমলে এখনই ভোট হলে মহিলা ভোটাররাই বেশি বিএনপির পক্ষে সমর্থন দিবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।