Dhaka ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রৌমারতে মুসলমানরাই খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন পালন করলো

রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টা পাড়া গ্রামে মুসলমানরাই খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীর যীশু খৃষ্টের জন্মদিন স্বরনে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করেছে। শিশু নারি পুরুষরা সমবেত প্রার্থনায় খৃষ্টান উপাসালয়ে (গির্জা) মিলিত হয়ে আগামী দিনের সুখের জন্য বিশেষ প্রার্থনা আলোচনা করেন ভক্তরা। ২৫ ডিসেম্বর বুধবার গয়টাড়া গ্রামে সকাল থেকে সারাদিন ব্যাপী উৎসব শেষে এলাকার শিশু বাচ্চাদেরকে উপহার হিসাবে খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন ধরণের উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

গয়টা পাড়া হাউজ চার্চ অব বাংলাদেশ শৌলমারী। তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব এই প্রতিপাদ্যের উপর এলাকার অবুঝ, অশিক্ষিত দরিদ্র মুসলমানদেরকে নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী ১০০ থেকে দেড়শত মহিলা শিশু ও পুরুষদেরকে নিয়ে আলোচনা করা হয়। গির্জা প্রতিষ্টাতা হাজ্বি জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন আলোচনায় উল্লেখ করেন, হযরত বিবি হাওয়া ও আদম (আঃ) এর জীবনী নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ইসা (আঃ) আল্লাহর ছেলে বলে উল্লেখ করেন। তারা আরো বলেন, যিশু খৃষ্ট ছাড়া কেউ বেহেস্তে যেতে পারবে না। এমন উৎভট কথা বলে তাদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে এসব কথা বলে তাদেরকে খাষ্টানধর্মাবলম্বীতে ধাবিত করা হয়। আলোচনা শেষে শিশুদেরকে বিস্কুট, খেলনাসহ বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।

এলাকার অবুঝ অশিক্ষিত মহিলাদেরকে বড়দিন উৎসব সম্পর্কে বললে তারা বলেন, এটা তো মুসলমানদের একটি বড়দিন। এখানে ভালো ভালো শিক্ষা দেয়। আমাদের শুনতে ভালো লাগে। তাই আমরা প্রায় প্রতি রবিবার করে আলোচনা শুনতে আসি।

চার্চ পালক শফিয়ার রহমান মন্টু বলেন, আমি দীর্ঘ তিন বছর যাবত চার্চের পালক হিসেব দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমাদের যীশু খৃষ্টের ধর্মাবলম্বী হিসাবে গ্রহন করেছি। আমাদের এ ধর্ম ভালো লাগে। আজ যীশু খৃষ্টের জন্মদিন স্বরনে বড়দিন হিসাবে এলাকার শিশু, মহিলা পুরুষ নিয়ে দিনটি উৎসব হিসাবে পালন করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হাজ্বি জয়নাল আবেদীন বলেন, ২৫ ডিসেম্বর যীশু খৃষ্টের জন্মদিন স্বরনে আজ উৎসব হিসেবে পালন করা হচ্ছে। আমি এ ধর্ম গ্রহন করেছি এবং আমি নিজেই প্রচার করি। এ ধর্ম আমার ভালো লাগে। কোরাআনও পড়ি কিতাবুল মোকাদ্দেস ও বাইবেলও পড়ি। আমরা বেশ কয়েকটি আয়াতে পেয়েছি ইসামসিহ তিনি নাযাতদাতা। আরো কিছু আয়াতে পেয়েছি, ইসামসিহ ছাড়া আল্লাহর কাছে কেউ যেতে পারবে না। আমরা ১০ টি পরিবারের প্রায় ৮০ জন মানুষ এর সাথে জরিত রয়েছি।

শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, গতকাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার গির্জাটি দেখার বিষয়ে মোবাইলে কথা বলেছিল। আজ বড়দিন হিসাবে একটু দেখতে গিয়েছিলাম।

অফিসার ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, বড়দিনের উৎসব পালন উপলক্ষে সাবির্ক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এসআই খালেকুল বাদশাহসহ দুই কনষ্ট্রবল ও গ্রাম পুলিশ শাহজাহান, হোসেন আলী ও জহির উদ্দিন দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত ছিলেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, রৌমারীতে গির্জা রয়েছে জানতাম না। তাই গতকাল মঙ্গলবার দেখতে গিয়েছিলাম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

পত্নীতলায় পৃথক পৃথক অভিযানে ভুয়া ডাক্তার আটক জেল ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়

রৌমারতে মুসলমানরাই খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন পালন করলো

Update Time : ১১:৪০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের গয়টা পাড়া গ্রামে মুসলমানরাই খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীর যীশু খৃষ্টের জন্মদিন স্বরনে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন পালন করেছে। শিশু নারি পুরুষরা সমবেত প্রার্থনায় খৃষ্টান উপাসালয়ে (গির্জা) মিলিত হয়ে আগামী দিনের সুখের জন্য বিশেষ প্রার্থনা আলোচনা করেন ভক্তরা। ২৫ ডিসেম্বর বুধবার গয়টাড়া গ্রামে সকাল থেকে সারাদিন ব্যাপী উৎসব শেষে এলাকার শিশু বাচ্চাদেরকে উপহার হিসাবে খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন ধরণের উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

গয়টা পাড়া হাউজ চার্চ অব বাংলাদেশ শৌলমারী। তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব এই প্রতিপাদ্যের উপর এলাকার অবুঝ, অশিক্ষিত দরিদ্র মুসলমানদেরকে নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ ঘন্টাব্যাপী ১০০ থেকে দেড়শত মহিলা শিশু ও পুরুষদেরকে নিয়ে আলোচনা করা হয়। গির্জা প্রতিষ্টাতা হাজ্বি জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন আলোচনায় উল্লেখ করেন, হযরত বিবি হাওয়া ও আদম (আঃ) এর জীবনী নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ইসা (আঃ) আল্লাহর ছেলে বলে উল্লেখ করেন। তারা আরো বলেন, যিশু খৃষ্ট ছাড়া কেউ বেহেস্তে যেতে পারবে না। এমন উৎভট কথা বলে তাদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে এসব কথা বলে তাদেরকে খাষ্টানধর্মাবলম্বীতে ধাবিত করা হয়। আলোচনা শেষে শিশুদেরকে বিস্কুট, খেলনাসহ বিভিন্ন ধরনের উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন।

এলাকার অবুঝ অশিক্ষিত মহিলাদেরকে বড়দিন উৎসব সম্পর্কে বললে তারা বলেন, এটা তো মুসলমানদের একটি বড়দিন। এখানে ভালো ভালো শিক্ষা দেয়। আমাদের শুনতে ভালো লাগে। তাই আমরা প্রায় প্রতি রবিবার করে আলোচনা শুনতে আসি।

চার্চ পালক শফিয়ার রহমান মন্টু বলেন, আমি দীর্ঘ তিন বছর যাবত চার্চের পালক হিসেব দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমাদের যীশু খৃষ্টের ধর্মাবলম্বী হিসাবে গ্রহন করেছি। আমাদের এ ধর্ম ভালো লাগে। আজ যীশু খৃষ্টের জন্মদিন স্বরনে বড়দিন হিসাবে এলাকার শিশু, মহিলা পুরুষ নিয়ে দিনটি উৎসব হিসাবে পালন করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হাজ্বি জয়নাল আবেদীন বলেন, ২৫ ডিসেম্বর যীশু খৃষ্টের জন্মদিন স্বরনে আজ উৎসব হিসেবে পালন করা হচ্ছে। আমি এ ধর্ম গ্রহন করেছি এবং আমি নিজেই প্রচার করি। এ ধর্ম আমার ভালো লাগে। কোরাআনও পড়ি কিতাবুল মোকাদ্দেস ও বাইবেলও পড়ি। আমরা বেশ কয়েকটি আয়াতে পেয়েছি ইসামসিহ তিনি নাযাতদাতা। আরো কিছু আয়াতে পেয়েছি, ইসামসিহ ছাড়া আল্লাহর কাছে কেউ যেতে পারবে না। আমরা ১০ টি পরিবারের প্রায় ৮০ জন মানুষ এর সাথে জরিত রয়েছি।

শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, গতকাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার গির্জাটি দেখার বিষয়ে মোবাইলে কথা বলেছিল। আজ বড়দিন হিসাবে একটু দেখতে গিয়েছিলাম।

অফিসার ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, বড়দিনের উৎসব পালন উপলক্ষে সাবির্ক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এসআই খালেকুল বাদশাহসহ দুই কনষ্ট্রবল ও গ্রাম পুলিশ শাহজাহান, হোসেন আলী ও জহির উদ্দিন দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত ছিলেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, রৌমারীতে গির্জা রয়েছে জানতাম না। তাই গতকাল মঙ্গলবার দেখতে গিয়েছিলাম।