Dhaka ০১:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলায় শীতের তীব্রতা বাড়ার আগেই শীতবস্ত্রের দিকে ঝুঁকছেন নিন্ম ও মধ্যবিত্তরা

সারাদেশের মত ভোলাতেও বইছে হালকা শীতের তীব্রতা। তাই শীত বেড়ে যাওয়ার আগেই শীতবস্ত্রের দিকে ছুটছেন ক্রেতারা। কম দামে শীতবস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন ঝুঁকছেন ফুটপাত কিংবা অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা শীতবস্ত্রের দোকানগুলোর দিকে। তারা হালকার চেয়ে ভারী শীতবস্ত্র কেনার দিকেই বেশি মনোনিবেশ করছেন। শীত বাড়ার সাথে সাথেই জমে উঠেবে ভোলার শীতবস্ত্রের বাজার। ফুটপাত কিংবা অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা শীতবস্ত্রের এসব দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নিন্মবিত্ত, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উদ্দেশ্য একটাই কম দামে ভালো মানের পোষক কেনা। যদিও কাপড়গুলো পুরাতন, তবে দেখে পুরাতন মনে হয় না। তাই ভিড় ঠেলে পছন্দের পোশাক কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। প্রায় ৩০ বছর আগের হকারদের হাত ধরে শুরু হয় পুরাতন কাপড় বিক্রির এই মার্কেটের। প্রত্যেক বছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে চলে শীতবস্ত্র বেচা-কেনা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভোলা পৌরসভার নতুন বাজার এলাকায় শীতের পোশাক সাজিয়ে বসেছেন প্রায় এখানে ২৫টির মতো দোকান রয়েছে। কয়েকদিন শীত পড়ায় পোশাক কিনতে ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতারা। প্রতিদিন এ সব দোকানে ভিড় লেগেই থাকছে। কোন দোকানে একদামে আবার কোথাও দামাদামি করে চলছে বিক্রি। বলছিলাম ভোলা শহরের নতুন বাজার টাউন হলের সামনে পুরাতন জামা কাপড়ের গাউন হকার মার্কেটের কথা।

আরো জানা গেছে, শীত আসলেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আসে এসব পুরনো কাপরের গাইড। মূলত শীত যতদিন থাকে ততদিন এ ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকেন ব্যবসায়ীরা। এই গাইডগুলোর মধ্যে শিশু ও বড়দের পোষাক সুয়েটার, গরম কাপর, কম্বলসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় থাকে। মূলত নিন্ম-আয়ের মানুষদের টার্গেট করে এসব কাপর এখানে বিক্রি হয়। শীতের উপর নির্ভরশীল এ ব্যবসা, শীত যত বেশি হবে ব্যবসাও হবে জমজমাট। গত কয়েক বছর ধরে ঠান্ডার প্রকোপ ছিল অনেক কম। এ কারণে লোকশানে পড়তে হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। তবে এবার ভালো ব্যবসার আশাবাদ ব্যবসায়ীদের।

চাকুরীজীবী মোঃ ফেরদৌস বলেন, আমি এই মার্কেটে কয়েকবার এসেছি, এখানে অনেক চয়েজফুল জামাকাপড় পাওয়া যায়। এগুলো সব বাহিরের ১শ’ ৫০ টাকার একটি সোয়েটার যদি ধোলায়ের পর আয়রন করার হয় তা হলে কেউ বলবে পারবে না এটা আমি এই পুরাতন মার্কেট থেকে কিনেছি। মনে হবে এটা আমি ১ হাজার ২শ’ টাকা দিয়ে কিনেছি।

ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বোরাক চালক মোঃ লিটন বলেন, ২শ’ ৫০ টাকায়ে একটি জ্যাকেট কিনেছি, ছোট মেয়ের জন্য ৫টা শীতের সোয়েটার কিনেছি ৩শ’ ২০ টাকায়ে। এই মার্কেটে কম দামে শীতের পোশাক পাওয়া।

নতুন বাজারের গাউন হকার মার্কেটের বিক্রেতা মোঃ ইয়াছিন বলেন, এখানে খুব সীমিত দামে বিক্রি করি। শীত একটু কম হওয়ায় বেচা-বিক্রি কম। গত বছর ভালোই ছিলো, এবার আশাকরি শীত পরলে ভালো বেচা-কেনা হবে ইনশাল্লাহ।

বিক্রেতা মোঃ আল-আমীন বলেন, বর্তমানে বেচা-কেনা ভালো যাচ্ছে না, শীত বাড়লে বেচা-কেনা বাড়বে। বর্তমানে শীত কম, তাই আমাদের বেচা-কেনাও কম। আমরা মূলত ব্যবসা করি ৪ মাস। তাঁর মধ্যে ব্যবসা হয় ২ মাস। আর এই দুইমাসের ইনকাম দিয়ে বাকী ৮ মাস চলতে হয় আমাদের।

উল্লেখ্য, শুধু ভোলা পৌরসভার টাউন হলের সামনে নয়, ছোট-বড় অসংখ্য দোকান রয়েছে শহরের সদর রোডের জিয়া মার্কেটের সামনে, কে জাহান মার্কেটের সামনে, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স এর সামনে। এছাড়া ভোলা শহর নয় এমন অনেক ভ্রাম্যমান দোকান রয়েছে ভোলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এবং বড় বড় বাজারগুলোতে। সেখান থেকে কম দামে সাধ্যের মধ্যে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় ক্রয় করছেন নিন্মবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংকল্পবদ্ধ হওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের

ভোলায় শীতের তীব্রতা বাড়ার আগেই শীতবস্ত্রের দিকে ঝুঁকছেন নিন্ম ও মধ্যবিত্তরা

Update Time : ০২:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সারাদেশের মত ভোলাতেও বইছে হালকা শীতের তীব্রতা। তাই শীত বেড়ে যাওয়ার আগেই শীতবস্ত্রের দিকে ছুটছেন ক্রেতারা। কম দামে শীতবস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন ঝুঁকছেন ফুটপাত কিংবা অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা শীতবস্ত্রের দোকানগুলোর দিকে। তারা হালকার চেয়ে ভারী শীতবস্ত্র কেনার দিকেই বেশি মনোনিবেশ করছেন। শীত বাড়ার সাথে সাথেই জমে উঠেবে ভোলার শীতবস্ত্রের বাজার। ফুটপাত কিংবা অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা শীতবস্ত্রের এসব দোকানগুলোতে ভিড় করছেন নিন্মবিত্ত, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উদ্দেশ্য একটাই কম দামে ভালো মানের পোষক কেনা। যদিও কাপড়গুলো পুরাতন, তবে দেখে পুরাতন মনে হয় না। তাই ভিড় ঠেলে পছন্দের পোশাক কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। প্রায় ৩০ বছর আগের হকারদের হাত ধরে শুরু হয় পুরাতন কাপড় বিক্রির এই মার্কেটের। প্রত্যেক বছরের নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে চলে শীতবস্ত্র বেচা-কেনা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভোলা পৌরসভার নতুন বাজার এলাকায় শীতের পোশাক সাজিয়ে বসেছেন প্রায় এখানে ২৫টির মতো দোকান রয়েছে। কয়েকদিন শীত পড়ায় পোশাক কিনতে ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতারা। প্রতিদিন এ সব দোকানে ভিড় লেগেই থাকছে। কোন দোকানে একদামে আবার কোথাও দামাদামি করে চলছে বিক্রি। বলছিলাম ভোলা শহরের নতুন বাজার টাউন হলের সামনে পুরাতন জামা কাপড়ের গাউন হকার মার্কেটের কথা।

আরো জানা গেছে, শীত আসলেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আসে এসব পুরনো কাপরের গাইড। মূলত শীত যতদিন থাকে ততদিন এ ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকেন ব্যবসায়ীরা। এই গাইডগুলোর মধ্যে শিশু ও বড়দের পোষাক সুয়েটার, গরম কাপর, কম্বলসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় থাকে। মূলত নিন্ম-আয়ের মানুষদের টার্গেট করে এসব কাপর এখানে বিক্রি হয়। শীতের উপর নির্ভরশীল এ ব্যবসা, শীত যত বেশি হবে ব্যবসাও হবে জমজমাট। গত কয়েক বছর ধরে ঠান্ডার প্রকোপ ছিল অনেক কম। এ কারণে লোকশানে পড়তে হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। তবে এবার ভালো ব্যবসার আশাবাদ ব্যবসায়ীদের।

চাকুরীজীবী মোঃ ফেরদৌস বলেন, আমি এই মার্কেটে কয়েকবার এসেছি, এখানে অনেক চয়েজফুল জামাকাপড় পাওয়া যায়। এগুলো সব বাহিরের ১শ’ ৫০ টাকার একটি সোয়েটার যদি ধোলায়ের পর আয়রন করার হয় তা হলে কেউ বলবে পারবে না এটা আমি এই পুরাতন মার্কেট থেকে কিনেছি। মনে হবে এটা আমি ১ হাজার ২শ’ টাকা দিয়ে কিনেছি।

ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বোরাক চালক মোঃ লিটন বলেন, ২শ’ ৫০ টাকায়ে একটি জ্যাকেট কিনেছি, ছোট মেয়ের জন্য ৫টা শীতের সোয়েটার কিনেছি ৩শ’ ২০ টাকায়ে। এই মার্কেটে কম দামে শীতের পোশাক পাওয়া।

নতুন বাজারের গাউন হকার মার্কেটের বিক্রেতা মোঃ ইয়াছিন বলেন, এখানে খুব সীমিত দামে বিক্রি করি। শীত একটু কম হওয়ায় বেচা-বিক্রি কম। গত বছর ভালোই ছিলো, এবার আশাকরি শীত পরলে ভালো বেচা-কেনা হবে ইনশাল্লাহ।

বিক্রেতা মোঃ আল-আমীন বলেন, বর্তমানে বেচা-কেনা ভালো যাচ্ছে না, শীত বাড়লে বেচা-কেনা বাড়বে। বর্তমানে শীত কম, তাই আমাদের বেচা-কেনাও কম। আমরা মূলত ব্যবসা করি ৪ মাস। তাঁর মধ্যে ব্যবসা হয় ২ মাস। আর এই দুইমাসের ইনকাম দিয়ে বাকী ৮ মাস চলতে হয় আমাদের।

উল্লেখ্য, শুধু ভোলা পৌরসভার টাউন হলের সামনে নয়, ছোট-বড় অসংখ্য দোকান রয়েছে শহরের সদর রোডের জিয়া মার্কেটের সামনে, কে জাহান মার্কেটের সামনে, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স এর সামনে। এছাড়া ভোলা শহর নয় এমন অনেক ভ্রাম্যমান দোকান রয়েছে ভোলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এবং বড় বড় বাজারগুলোতে। সেখান থেকে কম দামে সাধ্যের মধ্যে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় ক্রয় করছেন নিন্মবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।