বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কলঙ্ক। উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনা দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। খোকলা করে দিয়েছে দেশের অর্থনীতি। ভারতের কাছে বিকিয়ে দিয়েছে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব। স্বাধীনতার ঠিকাদার সেজে চেতনার নামে জাতিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে সব লুটে-পুটে নিজেদের পুষ্ট করেছে।
এরফলে তারা নতুন প্রজন্মের কাছে ধরা পড়ে তাদের শুধু পতনই হয়নি, দেশ থেকে পালানোর ৪০ মিনিটের বেশি সময় পায়নি। ২৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দপুর উপজেলা ও শহর জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত ওই পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, নীলফামারী জেলা আমীর অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার সহ অনেকে।
সৈয়দপুর উপজেলা আমীর হাফেজ আব্দুল মুনতাকিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী আলহাজ্ব মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী, জেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শিল্পপতি রাজ কুমার পোদ্দার রাজু, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী অধ্যাপক মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, নায়েবে আমীর অধ্যাপক ড. খায়রুল আনামসহ স্থানীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
ওই পথসভায় ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, দেশকে আমরা একটি সুন্দর বাগান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য সকলের ঐক্যবদ্ধের পাশাপাশি সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তাহলে অর্থনৈতিক ভাবে খোকলা করে দেয়া দেশকে আবার সমৃদ্ধ ও কল্যাণমুখী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
আমীরে জামায়াত আরো বলেন, আমরা এমন একটা দেশ গড়তে চাই যে দেশে কোন বৈষম্য থাকবেনা। সকল ধর্মের, সকল বর্ণের মানুষ মিলেমিশে সমান অধিকারের ভিত্তিতে বসবাস করবে। সর্বক্ষেত্রে দেশাত্ববোধের মাধ্যমে দেশকে উন্নত করতে সচেষ্ট থাকবে। কোন চাঁদাবাজ, দুষ্কৃতিকারী, দূর্নীতিবাজ থাকবেনা। কেউ কোনভাবে অন্যায়ের শিকার হবেনা। কল্যাণমুখী এমন দেশ গঠনের মাধ্যমে কল্যাণ রাষ্ট্রের মডেল উপস্থাপন করা হবে। এরজন্য চাই সকলের ঐক্য বদ্ধ।
এজন্য তিনি উপস্থিত সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, চব্বিশের তরুণ যোদ্ধারা যে লক্ষ্য ও চেতনা নিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করেছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের সফলতাকে নস্যাৎ করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার। সর্বশেষ তারা সচিবলায়ে অগ্নিকান্ড ঘটিয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র ধ্বংস করেছে। এই ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের মুখোশ উম্মোচন করে উপযুক্ত বিচার করতে হবে।
একইভাবে তিনি জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার দাবি করেন। সেই সাথে অন্তবর্তিকালীন সরকারের প্রতি ১৭ বছর পর্যন্ত ভোটার করার প্রস্তাব বাস্তবায়নেরও দাবি জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিশু-কিশোর ও যুবকরাই আমাদেরকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। তাই তাদেরকে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। তাহলে আমরা কিছুটা হলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের প্রতি আমাদের দায় শোধ করতে পারবো।
সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, যারা আয়না ঘরের প্রতিষ্ঠা করে, জাতিকে দুঃসহ অপশাসনে নিপতিত করে দেশকে বিক্রির পায়তারা করেছিল তাদের জাতি আর কখনই ফিরতে দিবেনা। ফ্যাসিবাদ বিদায় হয়েছে তা চিরদিনই এদেশ থেকে বিতারিত থাকবে। আওয়ামীলীগ তাদের দোষ স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এ প্রজন্ম তাদের ঘৃণা করবেই। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের, সমৃদ্ধির ও কল্যাণের। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে তিনি বক্তব্যে উল্লেখ করেন।