Dhaka ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুরে কপির দরপতন খাওয়ানো হচ্ছে গরু ছাগলকে

oppo_2

সৈয়দপুরে সবজির দাম মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ফুলকপি, বাধাকপি ও পেয়াজ চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। ফলন বেশি হওয়ায় সবজির দাম কমে গিয়ে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বর্গা চাষীরা।

সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩৬ টাকা আর ফুলকপি ও বাধাকপির প্রতি পিছ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩/৪ টাকায়। গত ১০ দিন আগেও পেয়াজ ৫০/৫৫ টাকা আর ফুলকপি ও বাধাকপির দাম ছিল ১৫/২০ টাকা কেজি। আর আলু ৩৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত মৌসুমে চাষিরা লাভের মুখ দেখলেও ৬/৭ দিনের ব্যবধানে চাষীদের মুখ মলিন হয়ে গেছে। বিশেষ করে বর্গা চাষীরা অনেকেই বড় ধাক্কা খেয়েছে সবজির দাম কমে যাওয়ায়।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় বলেন, চলতি মৌসুমে ৫০ হেক্টর জমিতে পেয়াজ, ১৩০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও বাধাকপির আবাদ করেছেন চাষীরা । বিনামুল্যে প্রায় শতাধিক চাষীকে বীজ দেয়া হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই পেয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তবে পিঁয়াজ ও কপির দাম হঠাৎ কমে যাওয়ায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন অর্ধেক চাষী।

বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন এর চাষী হেলাল জানান, গত মৌসুমে তিনি দুই বিঘা জমিতে পেয়াজ চাষ করেছিলেন। ওই সময় পেয়াজের দাম ভাল পাওয়ায় এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে পেয়াজ আবাদ করেছেন। এক বিঘা পেয়াজ চাষে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৫০ থেকে ৫৫ মন। চলতি মৌসুমে পেয়াজের দাম মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় অর্ধেক খরচ উঠবে না। মোটা অংকের টাকা লোকসান গুনতে হবে বলে জানান তিনি। বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর কপি চাষী রফিকুল জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাধাকপির আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা।

গত মৌসুমে বেশ ভাল দাম পেয়েছিলাম। ৬/৭ দিন আগেও বাজারে কপির কেজি বিক্রি হতো ২০/২৫ টাকা দরে। বর্তমানে প্রতিপিছ কপি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২/৩ টাকায়। দাম কমে যাওয়ায় এই কপি ক্রয় করে অনেক খামারি গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।

সৈয়দপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় আরো জানান, চলতি মৌসুমে চাষীরা ব্যাপকহারে সবজি চাষ করেছেন। তবে পেয়াজ ও কপির দাম কমে যাওয়ায় অনেক চাষী লোকসানে পড়বেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

সৈয়দপুরে কপির দরপতন খাওয়ানো হচ্ছে গরু ছাগলকে

Update Time : ০৬:৩৫:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

সৈয়দপুরে সবজির দাম মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ফুলকপি, বাধাকপি ও পেয়াজ চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। ফলন বেশি হওয়ায় সবজির দাম কমে গিয়ে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বর্গা চাষীরা।

সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩৬ টাকা আর ফুলকপি ও বাধাকপির প্রতি পিছ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩/৪ টাকায়। গত ১০ দিন আগেও পেয়াজ ৫০/৫৫ টাকা আর ফুলকপি ও বাধাকপির দাম ছিল ১৫/২০ টাকা কেজি। আর আলু ৩৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত মৌসুমে চাষিরা লাভের মুখ দেখলেও ৬/৭ দিনের ব্যবধানে চাষীদের মুখ মলিন হয়ে গেছে। বিশেষ করে বর্গা চাষীরা অনেকেই বড় ধাক্কা খেয়েছে সবজির দাম কমে যাওয়ায়।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় বলেন, চলতি মৌসুমে ৫০ হেক্টর জমিতে পেয়াজ, ১৩০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও বাধাকপির আবাদ করেছেন চাষীরা । বিনামুল্যে প্রায় শতাধিক চাষীকে বীজ দেয়া হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই পেয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তবে পিঁয়াজ ও কপির দাম হঠাৎ কমে যাওয়ায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন অর্ধেক চাষী।

বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন এর চাষী হেলাল জানান, গত মৌসুমে তিনি দুই বিঘা জমিতে পেয়াজ চাষ করেছিলেন। ওই সময় পেয়াজের দাম ভাল পাওয়ায় এবার তিনি তিন বিঘা জমিতে পেয়াজ আবাদ করেছেন। এক বিঘা পেয়াজ চাষে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৫০ থেকে ৫৫ মন। চলতি মৌসুমে পেয়াজের দাম মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় অর্ধেক খরচ উঠবে না। মোটা অংকের টাকা লোকসান গুনতে হবে বলে জানান তিনি। বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন এর কপি চাষী রফিকুল জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাধাকপির আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা।

গত মৌসুমে বেশ ভাল দাম পেয়েছিলাম। ৬/৭ দিন আগেও বাজারে কপির কেজি বিক্রি হতো ২০/২৫ টাকা দরে। বর্তমানে প্রতিপিছ কপি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২/৩ টাকায়। দাম কমে যাওয়ায় এই কপি ক্রয় করে অনেক খামারি গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।

সৈয়দপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ধীমান ভুষন রায় আরো জানান, চলতি মৌসুমে চাষীরা ব্যাপকহারে সবজি চাষ করেছেন। তবে পেয়াজ ও কপির দাম কমে যাওয়ায় অনেক চাষী লোকসানে পড়বেন।