Dhaka ০৭:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার জেলায় প্রাথমিকে বই পৌঁছেছে ৫১ শতাংশ

বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারী শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই উৎসব হচ্ছে না। নানা কারণে এই বছর বছরের প্রথম দিনে বই পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন বইয়ের পরিমার্জন ও কিছু সংখ্যক বইয়ে পরিবর্তন আনার কারণে এই বছর বই ছাপাতে বিলম্ব হওয়া এর প্রধান কারণ। ফলে বছরের শুরুতেই বই উৎসব হওয়ার কথা থাকলেও যথা সময়ে বই ছাপানো না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিনে বই পাচ্ছে না ৩য় থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত । কক্সবাজার জেলায় ইতিমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে ৫১ শতাংশ বই পৌঁছলেও মাধ্যমিকে কোন বই পৌঁছেনি। জানুয়ারির শেষ নাগাদ শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়ার চিন্তা অন্তবর্তী সরকারের।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসসূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, কক্সবাজারে ৬৫৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ১২ লক্ষ ৯০ হাজার ৮২৪ টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে গতকাল পর্যন্ত কক্সবাজারে বই পৌঁছেছে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার ৬৬৬ কপি। এখনো পর্যন্ত বই পাওয়া যায়নি ৬ লাখ ৩০ হাজার ১৬৮ কপি। প্রাথমিকে বই প্রাপ্তের হার ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে মাধ্যমিক স্তরের এখনো পর্যন্ত কোন বই কক্সবাজারে পৌঁছেনি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়-কক্সবাজারে ৯ উপজেলায় ৬৫৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য বইয়ের চাহিদা ছিল ১২ লক্ষ ৯০ হাজার ৮২৪ টি। এর মধ্যে বই পৌঁছেছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ১৬৮ টি। কক্সবাজারে শুধু মাত্র বই এসেছে প্রাক প্রাথমিক, প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণী এবং তৃতীয় শ্রেণীর জন্য । চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত কোন বই কক্সবাজারে পৌঁছেনি। প্রাথমিক স্তরের চতুর্থ  ও পঞ্চম শ্রেণীর কোন বই জেলা প্রাথমিক শিক্ষক অফিসে আসেনি বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

কক্সবাজারে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণীর জন্য ৪৭হাজার ৪২০ টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে শতভাগ বই কক্সবাজারে পৌঁছেছে। প্রথম শ্রেণীর ১ লক্ষ ৫২ হাজার তিনশো একটি বই এর চাহিদার বিপরীতে শতভাগ বই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর ১ লক্ষ ৫২ হাজার ১১৫ কপি বই চাহিদার বিপরীতে শতভাগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ লক্ষ দশ হাজার ৫২০ বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বই পৌঁছেছে ৩ লক্ষ ৮ হাজার ৮২০ টি। বাকি রয়েছে ১৮০০ বই। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৭২৮ টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে কিন্তু চাহিদার বিপরীতে কোন বই বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য তিন লক্ষ আট হাজার চল্লিশটি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে এখনো পর্যন্ত কোন বই বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। উপজেলা ভিত্তিক বইপ্রাপ্তির হার হলো কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৫০ দশমিক ৯৬ শতাংশ, রামু উপজেলায় ৫১ দশমিক ২৪ শতাংশ, ঈদগাঁও উপজেলায় ৫০ দশমিক ১৩ শতাংশ, চকরিয়া উপজেলায় ৫১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, পেকুয়া উপজেলায় ৫১ দশমিক ৭১ শতাংশ, কুতুবদিয়া উপজেলায় ৫২ দশমিক ২৮ শতাংশ, মহেশখালী উপজেলায় ৫১ দশমিক ৮০ শতাংশ, উখিয়া উপজেলায় ৫০ দশমিক ৩২ শতাংশ, টেকনাফ উপজেলায় ৪৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহীন মিয়া জানান, চাহিদার বিপরীতে বই পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাওয়া না গেলেও শিক্ষার্থীদের শিখন শিখনে কোন ঘাটতি হবে না। ইতিমধ্যে বরাদ্দ পাওয়া বইগুলো সকল বিদ্যালয়ে পৌঁছেছে।

বরাদ্দপ্রাপ্ত বইগুলো শিক্ষকগণ আজকে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেবেন। ইতিমধ্যে সকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা যেন বই বিতরণ যথাযথভাবে মনিটরিং করেন। এছাড়া আগামী ৫ জানুয়ারি সকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরী বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাশ কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেব। বই যথাসময়ে না পৌঁছালেও শ্রেণী কার্যক্রমে যাতে ঘাটতি না হয় আমাদের সে দিকে লক্ষ্য রয়েছে। নতুন বছরের বইয়ে ছোটখাটো পরিবর্তন ছাড়া অন্য কিছু না হওয়াতে পুরাতন বই দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। শিখন ঘাটতি পূরণ করতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে  নিয়মিতভাবে শ্রেণী কার্যক্রম চালানোর জন্য সকল শিক্ষকদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বই পৌঁছাতে দেরি হলেও শ্রেণী কার্যক্রম যথা নিয়মে যথাযথভাবে চলবে বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

পত্নীতলায় পৃথক পৃথক অভিযানে ভুয়া ডাক্তার আটক জেল ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়

কক্সবাজার জেলায় প্রাথমিকে বই পৌঁছেছে ৫১ শতাংশ

Update Time : ০৮:৫৩:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫

বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারী শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই উৎসব হচ্ছে না। নানা কারণে এই বছর বছরের প্রথম দিনে বই পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন বইয়ের পরিমার্জন ও কিছু সংখ্যক বইয়ে পরিবর্তন আনার কারণে এই বছর বই ছাপাতে বিলম্ব হওয়া এর প্রধান কারণ। ফলে বছরের শুরুতেই বই উৎসব হওয়ার কথা থাকলেও যথা সময়ে বই ছাপানো না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিনে বই পাচ্ছে না ৩য় থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত । কক্সবাজার জেলায় ইতিমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে ৫১ শতাংশ বই পৌঁছলেও মাধ্যমিকে কোন বই পৌঁছেনি। জানুয়ারির শেষ নাগাদ শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়ার চিন্তা অন্তবর্তী সরকারের।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসসূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, কক্সবাজারে ৬৫৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ১২ লক্ষ ৯০ হাজার ৮২৪ টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে গতকাল পর্যন্ত কক্সবাজারে বই পৌঁছেছে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার ৬৬৬ কপি। এখনো পর্যন্ত বই পাওয়া যায়নি ৬ লাখ ৩০ হাজার ১৬৮ কপি। প্রাথমিকে বই প্রাপ্তের হার ৫১ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে মাধ্যমিক স্তরের এখনো পর্যন্ত কোন বই কক্সবাজারে পৌঁছেনি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়-কক্সবাজারে ৯ উপজেলায় ৬৫৬ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য বইয়ের চাহিদা ছিল ১২ লক্ষ ৯০ হাজার ৮২৪ টি। এর মধ্যে বই পৌঁছেছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ১৬৮ টি। কক্সবাজারে শুধু মাত্র বই এসেছে প্রাক প্রাথমিক, প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণী এবং তৃতীয় শ্রেণীর জন্য । চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত কোন বই কক্সবাজারে পৌঁছেনি। প্রাথমিক স্তরের চতুর্থ  ও পঞ্চম শ্রেণীর কোন বই জেলা প্রাথমিক শিক্ষক অফিসে আসেনি বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

কক্সবাজারে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণীর জন্য ৪৭হাজার ৪২০ টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে শতভাগ বই কক্সবাজারে পৌঁছেছে। প্রথম শ্রেণীর ১ লক্ষ ৫২ হাজার তিনশো একটি বই এর চাহিদার বিপরীতে শতভাগ বই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণীর ১ লক্ষ ৫২ হাজার ১১৫ কপি বই চাহিদার বিপরীতে শতভাগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ লক্ষ দশ হাজার ৫২০ বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বই পৌঁছেছে ৩ লক্ষ ৮ হাজার ৮২০ টি। বাকি রয়েছে ১৮০০ বই। চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৭২৮ টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে কিন্তু চাহিদার বিপরীতে কোন বই বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য তিন লক্ষ আট হাজার চল্লিশটি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে এখনো পর্যন্ত কোন বই বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। উপজেলা ভিত্তিক বইপ্রাপ্তির হার হলো কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৫০ দশমিক ৯৬ শতাংশ, রামু উপজেলায় ৫১ দশমিক ২৪ শতাংশ, ঈদগাঁও উপজেলায় ৫০ দশমিক ১৩ শতাংশ, চকরিয়া উপজেলায় ৫১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, পেকুয়া উপজেলায় ৫১ দশমিক ৭১ শতাংশ, কুতুবদিয়া উপজেলায় ৫২ দশমিক ২৮ শতাংশ, মহেশখালী উপজেলায় ৫১ দশমিক ৮০ শতাংশ, উখিয়া উপজেলায় ৫০ দশমিক ৩২ শতাংশ, টেকনাফ উপজেলায় ৪৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহীন মিয়া জানান, চাহিদার বিপরীতে বই পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাওয়া না গেলেও শিক্ষার্থীদের শিখন শিখনে কোন ঘাটতি হবে না। ইতিমধ্যে বরাদ্দ পাওয়া বইগুলো সকল বিদ্যালয়ে পৌঁছেছে।

বরাদ্দপ্রাপ্ত বইগুলো শিক্ষকগণ আজকে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেবেন। ইতিমধ্যে সকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা যেন বই বিতরণ যথাযথভাবে মনিটরিং করেন। এছাড়া আগামী ৫ জানুয়ারি সকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরী বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাশ কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেব। বই যথাসময়ে না পৌঁছালেও শ্রেণী কার্যক্রমে যাতে ঘাটতি না হয় আমাদের সে দিকে লক্ষ্য রয়েছে। নতুন বছরের বইয়ে ছোটখাটো পরিবর্তন ছাড়া অন্য কিছু না হওয়াতে পুরাতন বই দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। শিখন ঘাটতি পূরণ করতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে  নিয়মিতভাবে শ্রেণী কার্যক্রম চালানোর জন্য সকল শিক্ষকদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বই পৌঁছাতে দেরি হলেও শ্রেণী কার্যক্রম যথা নিয়মে যথাযথভাবে চলবে বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান।