সুনামগঞ্জে লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একদিকে চলছে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর আর অন্যদিকে ইয়াবার চালানসহ ২জনকে গ্রেফতার করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ মঙ্গলবার (৩১শে ডিসেম্ভর) সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন মিজানের ডিপু, নিজামের ডিপু, পায়েলের ডিপু ও ফজলু মিয়ার ডিপুর পাশের জায়গায়, বিশু ও মারফতের বাড়ি ও আবুনীর বাড়ির ডিপুসহ আরো একাধিক ডিপুতে মজুত করে রাখা পাচাঁরকৃত প্রায় ৫শ মেঃটন অবৈধ কয়লার মধ্যে ২শত টন কয়লা, ট্রলি বোঝাই করে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে ওপেন সমসার হাওর পাড়ের পাথরঘাটায় নিয়ে নৌকা বোঝাই করে সোর্স ও চোরাকারবারীরা। অন্যদিকে প্রতিদিনের মতো ভোর ৫টা থেকে লাউড়গড় সীমান্তের ১২০৩এর ৩এস পিলার ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোষ্টের সামনে দিয়ে ভারতের ৩-৪শ গজ ভিতর থেকে ৪-৫শ লোক দিয়ে ১০-১৫লাখ টাকার কয়লা ও পাথর শুরু করে এবং ৪০-৫০টা ঠেলাগাড়ি দিয়ে পাথর ও ১০-১৫টা মোটর সাইকেল দিয়ে কয়লা পরিবহণ করে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা হয়ে ওপনে লাউড়গড় বাজারের চারপাশে নিজে মজুত করে বিক্রি করে স্থানীয় প্রভাবশালী চোরাকারবারীরা। কিন্তু এব্যাপারে বিজিবির পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া খবর পাওয়া যায়নি। অথচ সাবেক বিজিবি অধিনায়ক তসলিম এহসান সুনামগঞ্জে কর্মরত থাকাকালীন সময় এই সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত কয়েক কোটি টাকার অবৈধ পাথর ও কয়লা বোঝাই ১৫-২০টি ট্রাক ও লড়িসহ ৫ শতাধিক ঠেলাগাড়ি ও বারকি নৌকাসহ ৬-৭টি স্টিলবডি নৌকা আটক করেছেন। কিন্তু তিনি বদলি হয়ে যাওয়ার পর থেকে সীমান্তে চোরাচালান বাণিজ্য জমজমাট হয়ে উঠে এবং সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাকারবারীদের দাপট বেড়ে যায়। এছাড়াও পাশের চাঁনপুর সীমান্তের আনন্দপুর, বারেকটিলার ১২০৩পিলার ও কড়ইগড়, রাজাই এলাকা দিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে পৃথক ভাবে শুরু হয় ঘোড়া, গরু, ফুছকা, চিনি, চিনি, কম্বল, বিড়ি, কমলা ও জিরাসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর। একই ভাবে সারারাত জাদুকাটা নদী দিয়ে শতশত বারকি নৌকা বোঝাই করে ভারত থেকে পাচাঁর করা হয় কয়লা ও পাথরসহ কসমেটিকস, চিনি, ফুছকা ও মদসহ বিভিন্ন মালামাল। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সীমান্ত চোরাচালান বন্ধ না হয়ে দিনদিন শুধু বেড়েই চলেছে। তাই র্যাব ও সেনা বাহিনীর অভিযান জরুরী প্রয়োজন।
অন্যদিকে পাশের বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার মাছিমপুর, চিনাকান্দি ও ডলুরা সীমান্ত এলাকা দিয়ে পৃথক ভাবে পাচাঁরকৃত ১৮লাখ ৭৮হাজার টাকার মূল্যের ৬হাজার পিস ইয়াবার চালানসহ মাদক ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন (৩০) ও তার সহযোগী জিয়াউর রহমান (৩৫) কে আটক করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
এব্যাপারে সিলেট মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পলাশ পাল সাংবাদিকদের জানান- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার (৩০শে ডিসেম্বর) দুপুরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবাসহ ২জন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় তাদেরকে থানায় হস্থান্তর করে রাতেই মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।