রাজধানীর কলাবাগান গ্রীনরোডে কল্যান সমিতির নামে চলছে চাঁন্দাবাজী ও দখলবাজীর রমরমা ব্যবসা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য চিত্র নায়ক ফেরদোস এবং স্বৈরচারী সরকারের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপশের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও গ্রীন স্কয়ার কল্যান সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ এলাকায় চাঁন্দাবাজী, দখলবাজী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অবিযোগ রয়েছে। গত ৫ই আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনের পর এই দোসররা তাদের ঘোল পাল্টায়। এখন তারা বি.এন.পি ও জামায়েতে ইসলামী নাম ভাঙ্গিয়ে তাদের হেন কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, বর্তমান গ্রীন স্কায়ার সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সেক্রেটারী শামীম আহমেদ বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের দোষর হিসাবে এলাকায় চিহ্নিত। তারা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতার ছত্রছায়ায় ভোট জালিয়াতী, চাঁন্দাবাজী ও সস্ত্রাশী কাজের সংঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের এই ধরনের কার্যকলাপের ফলে এলাকায় সামাজিক পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই দোষররা সমিতির নামে এলাকার বাড়ীতে বাড়ীতে মোট অংকের চাঁন্দা দাবী করছে বলে অভিযোগ করেন। স্থানীয় বাড়ীওয়ালারা চাঁন্দা দিতে অস্কীকার কারায় এই দোষররা তাদেরকে চান্দা না দিলে বাড়িতে তালা লাগিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। রাস্তায় বের হতে পারবেন না। আপনাদের গাড়ী রস্তায় আটকিয়ে রাখবো বলে হুমকি দিচ্ছে। রাতের বেলায় বাড়িতে গিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে মোহরা দেয়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, গত ৫ই আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনের সময় গ্রীন স্কোয়ার সমিতিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত মিটিং করতেন। বিভিন্ন যড়যন্ত্রমূলক আলোচনা ও পরিকল্পনা করা হয় এবং সন্ত্রাসীদের নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের উপর আক্রোমন করতেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়।
গ্রীন স্বোয়ারের বাসিন্দা নূর টাওয়ারের বসবাসকারী জানায়, তাদের চাঁন্দাবাজীতে অতিষ্ঠ হয়ে আমরা স্থানীয় কলাবাগান থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করি।
ভোক্তবোগীরা আরো বলেন, আমার ভাই গত ২০২২ সালে এই বাড়ীটি ক্রয় করে। সমিতির সেক্রেটারী ও সভাপতি শামীম আহমেদ ও রেজাউল ইসলাম আমার বাড়ীর কাগজ পত্র দেখতে চায়। আমি কাগজপত্র দেখাতে রাজী না হওয়ায় আমাকে বাড়ীতে থাকতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। কিভাবে এই এলাকায় বসবাস করবেন আমরা দেখে নিব। এর বেশ কিছুদিন পর সমিতির সেক্রেটারী শামীম আহমেদ আমার বাড়ীতে এসে বলেন আপনাকে সমিতির সসদ্যদের সাথে পরিচয় এবং ওয়াই, ডাব্লিউ, সি, এ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কালের অভিভাবক প্রতিনিধিদের সাথে পরিচয় করিয়া দিবেন বলে ৫ লাখ টাকা নেয়। এর কিছুদিন পরে এলাকার উন্নয়ন এবং সবুজ সিড়ি ম্যাগাজিন প্রকাশনা হবে বলে ১ লাখ টাকা আমার কাছে থেকে নিয়ে যায়। শামীম আহমেদ তার কিছুদিন পর আমার বাড়ীতে এসে ৫০ হাজার টাকা উন্নয়নের নামে আমার কাছে চায়। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে সে আমাকে এলাকায় কিভাবে বসবাস করি তা দেখে নিব বলে হুমকি দেয়।
নূর টাওয়ারের সিকিউরিটি দিন ইসলাম বলেন, গত ৫ই আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনরত আহত ছাত্রদের খাবার পানি দিয়ে সহযোগিতা করি। সেই সময় রাতের বেলায় সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারীসহ বেশ কিছু সন্ত্রাসী লোকজন এসে কেন ছাত্রদের এই বাড়ীতে আশ্রয় ও সহযোগিতা করছি বলে আমাকে গালাগালি ও আন্দোলনের পর দেখে নিব বলে হুমকি ও ভয়ভীতি দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারী এলাকায় বহুদিন যাবৎ চাঁন্দাবাজী ও দখলবাজী সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে চড়িত। ১২ গ্রীনরোড এই বাড়ীটি তারা দখল করার উদ্দেশ্যে আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানী, হুমকি ও ভায়ভীতি দেখাতেন। এই ভাড়ী দখলের জন্য বহুভাবে চেষ্টা করেন। আমরা তাদের অত্যচারে এই বাড়ীটি বিক্রি করতে বাধ্য হই।
গ্রীন স্কায়ারের বাসিন্দা মামুন বলেন সমিতির নামে প্রত্যেক ফ্ল্যাট থেকে মাসিক হারে ২০০ টাকা এবং প্রত্যেক বাড়ী থেকে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা সোসাইটি উন্নয়ন বাবদ নেন। সোসাইটিতে নতুন বাড়ীওয়ালাদের কাছ থেকে ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই অত্যচার ও জুলুম থেকে রেহাই পাওয়ার আশায় সংশ্লিষ্টি কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে। গ্রীন স্কোয়ার সমিতির অফিসে গিয়ে দায়ত্বরত কাউকে পাওয়া যায়নি।