হাড় কাঁপানো শীত আর হিম বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের দক্ষিণের জনপদ দ্বীপজেলা ভোলা। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন এখানকার মানুষ। তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষসহ নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে আকাশে হালকা সূর্যেও দেখা মিললেও ছিল না সূর্যের তাপ। কিছুক্ষণ পরপর ফের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
ভোলা জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে শুক্রবার সকালে জেলায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি বছরে ভোলায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।
সরেজমিনে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদী তীরবর্তী কয়েকটি এলাকা ঘুওে দেখা গেছে হিম বাতাসে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন এখানে বসবাসকারী মানুষজন। কেউ কেউ দিনের আলোতেও আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। আবার কেউ সূর্যের একটু তাপের আশায় নদীর তীরে বসে আছেন। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হয়নি।
এদিকে সকালে শীতের তীব্রতায় জেলা শহরের কালিবাড়ি রোড মোড়ের ভাসমান দিনমজুর বিক্রির হাটও বসেনি। অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে চলাচলকারী রিকশার সংখ্যাও তুলনামূলক কম দেখা গেছে। এ সময় কথা হয় তেঁতুলিয়া নদী তীরের বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসকারী জেলে মো. এমরানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ বছর গত দুই দিন সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। শীতের কারণে নদীতে যেতে পারিনি।
মেঘনা নদীর তুলাতুলি এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, একদিকে শীত; আরেক দিকে প্রচুর ঠান্ডা বাতাস, ঘর থেকে বের হওয়াই কষ্টের। আমরা গরিব মানুষ, সরকারিভাবে এখনো শীতের গরম কাপড় পাইনি, পেলে উপকার হতো। ব্যাটারি চালিত রিকশাচালক মো. রতন বলেন, পেট তো আর শীত-বর্ষা মানে না, তাই রিকশা নিয়ে বের হইছি। শুক্রবার অন্যদিনের চেয়ে ভাড়া বেশি হওয়ার কথা, কিন্তু রাস্তায় যাত্রী কম, তাই ভাড়াও পেয়েছি কম।
ভোলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে শনিবারও এমন অবস্থা বিরাজ করতে পারেও বলে জানান তিনি।