গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দিনে-দুপুরে গরু চুরির চেষ্টাকালে চোরকে আটকের পর গণধোলাই দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে মৃত্যুর হাত থেকে ওই চোরকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বেতারকেন্দ্র কম্বলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরু চুরির প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডাকাতির ঘটনাও। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। গত বুধবার সকালে উপজেলার জামালপুর এলাকায় ডাকাত সন্দেহে সাগর আলী নামে এক যুবককে
গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। এ সময় তার কাছ থেকে নাম্বার বিহীন একটি পিকআপভ্যানটি আটক ও বড় দা, বড় কাটার, রড, লাঠিসোটাসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার জের কাটতে না কাটতে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বেতারকেন্দ্র কম্বলপাড়া এলাকায় দিনে-দুপুরে গরু চুরি করার চেষ্টা করে একদল চোর। তারা কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া-মাওনা সড়কের ওই এলাকায় ট্রাক থামিয়ে ওই গরুটি তাদের ব্যবহৃত ট্রাকে তোলার চেষ্টা করে। এ ঘটনাটি দেখতে পেয়ে চোর চোর বলে ডাকচিৎকার করে কয়েকজন লোক।
এসময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে এক চোরকে আটক করলেও বাকী চোর সদস্যরা ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। তার নাম ফজলু। পরে ওই চোরকে আটক গণধোলাই দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানাধীন ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে যান। এসময় ওই পুলিশ সদস্যদের উপরও হামলা করেন বিক্ষুব্দ এলাকাবাসী।
পরে বিক্ষুব্দ লোকজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে ওই চোর ফজলু নামে একজনকে আটক করে বিকেলে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরার স্বার্থে পুলিশ ওই চোরের ঠিকানা জানায়নি। বিক্ষুব্দদের অভিযোগ, কয়েক দিন পর পর এলাকায় ডাকাতি ও গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। চোর ও ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বহারা হচ্ছেন অনেক মানুষ। বুধবারও জামালপুর এলাকায় দেশীয় অস্ত্রসহ এক ডাকাত সদস্যকে আটক করে গণধোলাই দেওয়া হয়। ওই ঘটনার জের কাটতে না কাটতে বেতারকেন্দ্র কম্বলপাড়া
এলাকায় দিনে-দুপুরে ট্রাকে গরু তোলার চেষ্টা করলে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে এসব চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরো নজরদারী বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ওই ফুলবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) আব্বাস আলী জানান, ওই চোরকে গণধোলাই কালে পুলিশ তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে যায়। এসময় বিক্ষুব্দ লোকজনের ধাক্কাগুতো লাগলেও কোনো পুলিশ সদস্য আহত হননি। ওই চোরকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে থানায় পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।