বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান মূখপাত্র সারজিস আলম বলেছেন, ২৪ শের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দায়বদ্ধতায় ঘোষণা পত্রে প্রত্যেক শ্রেণী পেশার মানুষের কথা থাকতে হবে। নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির কথায় যেনো ঘোষণা পত্র সীমাবদ্ধ না থাকে, এটাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার দাবী।
তিনি আরো বলেন, বিগত ১৬ বছরে খুনি হাসিনা দেশে যে সৌরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল তা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারকে সামনে রেখে সারাদেশের ছাত্র-জনতা ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে এবং খুনি হাসিনাকে দেশ থেকে বিতারিত করে ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেই ব্যানার ঘোষণা পত্রে উল্লেখ থাকতে হবে। শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) সকাল ১১টায় জুলাই ঘোষণা পত্রের পক্ষে জনমত গঠনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে গণসংযোগ ও লিপলেট বিতরণ শেষে ভোলা শহরের ইলিশ চত্বরে এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, আমরা মনে করি ঢাকা শহর থেকে দুরত্ব কখনও অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে না। অগ্রাধিকার নির্ধারণ হবে কোন জায়গার কতটুকু ত্যাগ আছে। সেই ভিত্তিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে ভোলা একটি বীরের জেলা। এ অভ্যুত্থানে ভোলা জেলার ৫২ জন বীর শহীদ হয়েছে। তাই ভোলা জেলা একক জেলা হিসাবে বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। ভোলাসহ সারাদেশে পুলিশ গুলি করে যাদেরকে নিহত ও রক্তাক্ত করেছে সেই পুলিশ সুপার ও পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ভোলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে আমরা জানতে পেড়েছি জুলাই ঘোষণা পত্রে সবার আগে তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার ফাঁসি চায়। খুনী হাসিনা সারাদেশ জুড়ে যে গোপালী সিন্ডিকেট বসিয়েছে তা ভেঙ্গে একটি সমতার বাংলাদেশ তৈরী করতে হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রধান মূখপাত্র আরো বলেন, যে ভোলায় গ্যাস উৎপাদন হয় সেই ভোলার মানুষ কেনো গ্যাস পাবেনা। ভোলা থেকে অসুস্থ্য রোগী নিয়ে লঞ্চে বা স্পীডবোট যোগে বরিশাল মেডিক্যালে যেতে যেতে পথেই মারা যায়। সেই ভোলায় কেনো মেডিক্যাল কলেজ হবে না। ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে যদি পদ্মা সেতু করা হয় তাহলে গ্যাস ও বিদ্যুৎ নির্ভর ভোলা জেলায় কেনো ৫/১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলা-বরিশাল সেতু করা হবে না। ভোলাবাসির যে কোনো যৌক্তিক দাবীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ঐক্যবদ্ধভাবে প্রাণের দাবী হিসেবে সরকার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
এছাড়া তিনি সকালে ভোলার নতুন বাজারে পুলিশের গুলিতে শহীদ জসিম উদ্দিনের বাড়ীতে গিয়ে তার পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং কবরস্থানে গিয়ে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মুনাজাত করেন এবং শহেরর সদর রোডে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে ঘোষণা পত্রের লিফলেট বিতরণ ও তাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় বৈষম্য বিরোধী ও জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং ভোলার বৈষম্য বিরোধী নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।