আমন ধান মাঠ থেকে ঘরে তুলে এখন আম বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর পোরশা উপজেলার আম চাষীরা। গাছের ডালে মুকুল আসার আগ মুহূর্তে বাগানের বাড়তি যতেœর প্রয়োজন হয়। তাই আম বাগান পরিচর্যায় চাষিরা বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাষিরা বাগানের আগাছা পরিষ্কার করে পানি সেচ ও সার দিচ্ছেন। পোকা দমনে স্প্রে করছেন কীটনাশক। গাছ ও গাছের ডাল পালাকে স্বাস্থ্যবান করতে স্প্রে করছেন ভিটামিন। এতে পোকা যেমন দূর হবে, তেমনি গাছে দেখা দেবে স্বাস্থ্যকর মুকুল। ফলনও হবে ভাল।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর দেশে উৎপাদিত মোট আমের সিংহভাগ নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলের। গত দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলে গোপালভোগ, হিমসাগর, লেংড়া, ফজলি, আশ্বিনা, আমরূপালী, বারী-৩, বারী-৪ ও লখনাসহ নানান জাতের আম চাষ হয়ে আসছে। এর সাথে গত তিন বছরে নতুন নতুন বিভিন্ন জাতের আমের জাত যুক্ত হয়েছে নওগাঁর এই বরেন্দ্র অঞ্চলের আমরাজ্যে। এদের মধ্যে কার্টিমন, চোষা, বউ সোহাগী, আলতাপেটি, রানি পছন্দ, দুধসর, লক্ষনভোগ, মল্লিকা, মিছরি দানা অন্যতম।
পোরশা উপজেলার সহড়ন্দ গ্রামের আমচাষী রেজাউল করিম ও পোরশা সদরের আমচাষী কাদের শাহ্ জানান, অধিক মুনাফার আশায় মৌসুমের আগেই বাগানের যতœ নেয়া শুরু করেছেন তারা। এ সময়ে বাগানের ঠিকমত পরিচর্যা করতে পারলে গাছে গাছে মুকুলে ভরে উঠবে। আর মুকুল বেশি হলে গাছে আমও বেশি ধরবে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে তারা গাছে কীটনাশক স্প্রে করার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করছেন।
পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মামুনূর রশিদ জানান, নওগাঁ জেলায় আম চাষ হচ্ছে প্রায় ৩০হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধুমাত্র পোরশা উপজেলায় ১০হাজার ৬৫০ হেক্টরের অধিক জমিতে আমের চাষ হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এ উপজেলায় প্রতিবছর নতুন নতুন জমিতে নতুন করে আম বাগান তৈরি হচ্ছে। এ এলাকায় অনান্য ফসলের চেয়ে আমে লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন চাষিরা আম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আবহাওয়া ভাল থাকলে অন্যান্য বছরের মতো এবারেও আমের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।