সপ্তাহ না জেতেই এবার মাছ ব্যবসায়ীর উপর হামলা ও দু’দফায় বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । মাছ ব্যবসায়ীর নাম আরিফুল ইসলাম । তার বাড়ী রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউপির বাতাসপুর গ্রামে। গত শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে কামারগাঁ ইউপির মাদারিপুর বাজারে পেটানো হয় তাকে। বেধড়ক পেটানোর কারনে অচেতন হয় পরে আরিফুল। সাথে সাথে স্থানীয়রা ৯৯৯ কল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে তাকে। উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে দেন। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ভয়ে মেডিকেল ছাড়তে বাধ্য হয় আরিফুল। কামারগাঁ ইউপি বিএনপির একাংশের সভাপতি সিনিয়র নেতা খলিলুর রহমানের বাহিনী তাকে পেটায়। এঘটনায় শুকবারে আরিফুল বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে খলিল ও তার ছেলেসহ ৬ জনকে বিবাদী করা হয়। এঘটনায় মাদারিপুর বাজারসহ ইউপি জুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় মারপিট, সংঘর্ষ সহ চোরাগোপ্তার মত হামলার আশঙ্কা করেন স্থানীয়রা। একের পর এক এমন ঘটনা ঘটলেও পুলিশ প্রশাসন একেবারেই নির্বিকার। এতে করে এমন ঘটনা ঘটতেই আছে বলে মনে করছেন ইউপি বাসি।
অভিযোগে উল্লেখ, প্রতিদিনের ন্যায় গত শুক্রবার সকালের দিকে মাছ বিক্রির জন্য মাদারিপুর বাজারে যান আরিফুল। তাকে দেখামাত্রই একাংশের সভাপতি খলিল ও তার ছেলের বাহিনীরা রড, পাইপসহ লাঠি দিয়ে বাজারের কেজি স্কুলের সামনে বেধড়ক পেটায়। এরপরে তারা আরেক জায়গায় নিয়ে গিয়ে আরেক দফা পেটায়। কিন্তু স্থানীয়রা খলিল বাহিনীর ভয়ে এগিয়ে আসতে পারেন নি। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা ৯৯৯ কল করলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন।
আরো উল্লেখ, মাছ ব্যবসায়ী আরিফুলের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন খলিলসহ তার বাহিনীরা। টাকা দিতে অস্বীকার করলে আরিফুল কে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, খলিল বিএনপির সিনিয়র নেতা এবং একাংশের সভাপতি। শুধু তাই না বিগত ২০২১ সালে কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ ইউপির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। আর তিনিসহ তার ছেলে পশুর মত করে পিটিয়েছ। একজন সিনিয়র নেতা যদি এধরণের আচরণ করেন তাহলে তরুণরা তো বেপরোয়া হবেন এটাই স্বাভাবিক। গত ৪ জানুয়ারি শনিবার খলিলের দোকানে ভাংচুর করে সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীরা। কিন্তু তারেকের অনুসারীদেরকেও পেটানো হয়। উভয়ে পক্ষের আহত হন অনেকে। তবে তার দোকান ভাংচুর করলেও কোন লুটপাট করা হয়নি। তাহলে খলিলের মত ব্যক্তি কিভাবে চাদা চায় মাছ ব্যবসায়ীর কাছে। আরিফুলের অপরাধ সে তারেকের অনুসারী। কিন্তু সে তো বিএনপির কর্মী। ক্ষমতায় না যেতেই মারামারি শুরু করেছে বিএনপি।
মাছ ব্যবসায়ী আহত আরিফুল জানান, আমি বিএনপিকে ভালোবাসি। যারাই সভা সমাবেশ, মিছিল মিটিং করে সেখানেই উপস্থিত হয়। তবে কাজ থাকলে যেতে পারিনা। গত শুক্রবার মাদারিপুর বাজারে মাছ বিক্রি করতে আসামাত্রই খলিল তার ছেলেসহ কয়েক তুলে নিয়ে গিয়ে দুই দফায় পেটায়। শরীরে মারাত্মক জখম হয়েছে। পুরো শরীরে এতই জখন কোন কাজ করার উপায় নাই। অথচ একদিন মাছ বিক্রি করতে না পারলে ভাত জুটেনা। আপনি নাকি গত শনিবারে খলিলের দোকান ভাংচুর করেছেন জানতে তিনি জানান প্রশ্নই উঠেনা।
বিএনপির একাংশের সভাপতি খলিলুর রহমান জানান, গত শনিবারে আরিফুলসহ অনেকে দোকান ভাংচুর করেছে। অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পুরুনের জন্য আরিফুলকে বলা হয়েছে। দিতে না চাওয়ার কারনে পেটানো হয়েছে। আপনি নাকি ২ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছেন এমন অভিযোগ পেয়েছি জানতে চাইলে তিনি জানান আমার দোকান ভাংচুর ও ব্যাপক ক্ষতি করেছে এজন্য তার কাছ থেকে ক্ষতি পুরুন চাওয়া হয়েছে। যত খুশি অভিযোগ করুক না কেন ক্ষতি পুরুন নিয়েই ছাড়ব বলেও দাম্ভিকতা দেখান তিনি।
থানার ওসি মিজানুর রহমান মিজান জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।