মাদক বিক্রির টাকা আনতে গিয়ে স্থানীয়দের ধাওয়ায় পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী উপ-পরিদর্শক সোহরাব হোসেন (৪০) বলে জানা গেছে। অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল মোড় এলাকার মৃত ইব্রাহিম মন্ডলের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী ইসরাইল মন্ডল (৪০) এর সাথে মাদক ব্যবসা করে আসছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। মাদক ছাড়াও নারী দিয়ে দেহব্যবসা ও চুরির অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত ইসরাইলের বিরুদ্ধে।
রবিবার (১৩ জানুয়ারি ২০২৫) দুপুর ১২ টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের বটতৈল মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে খবর পাওয়া যায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরও বলেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তা প্রায়ই অভিযুক্ত ইসরাইলের বাড়িতে আসে। সাধারণত সকাল ১০ টার পরে যখন এলাকার পুরুষ মানুষ কাজে চলে যায় তখন অভিযুক্ত কর্মকর্তা একা অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে যায়। গিয়ে বিক্রির জন্য মাদকদ্রব্য দিয়ে আসে এবং পূর্বে দেওয়া মাদক বিক্রির টাকা নিয়ে আসে বলে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়। ঘটনার দিন অভিযুক্ত কর্মকর্তা যথারীতি মাদকদ্রব্য দিতে ও টাকা আনতে গেলে স্থানীয়রা তাকে আটক এবং মুঠোফোন ছবি ও ভিডিও ধারণের চেষ্টা করে। এসময় অভিযুক্ত কর্মকর্তা স্থানীয়দের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে দেন। পরে তাঁদের আটক করে আসামি হিসাবে কোর্টে চালান দেবেন বলে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। এমতাবস্থায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হলে অভিযুক্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীকে নিয়ে পালিয়ে যান। এছাড়াও অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী তার ভাইদের সহায়তায় প্রায় দশ বছর ধরে সস্ত্রীক মাদক ব্যবসা করে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। মাদক ব্যবসা ছাড়াও অভিযুক্তরা বাইরে থেকে নারী এনে দেহব্যবসা করান বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে। এসব কাজে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ীর ভাই তারিফের স্ত্রী রাশিদা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন বলে জানান সূত্রটি। মাদক সেবন ও অসামাজিক কর্মকান্ড করতে আসা ব্যক্তিরা আশেপাশের বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র সহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যান বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
তাছাড়াও অভিযুক্তদের অসামাজিক কার্যালাপের শ্রুটিকটু আওয়াজে আশেপাশের মানুষ ঘুমাতে পারেন না বলে জানান তাঁরা। তাদের এসব মাদক ও অসামাজিক কার্যালাপের কুপ্রভাব সমাজের কিশোর ও যুবকদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছেন বলে। এমতাবস্থায় স্থানীয়রা অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও মাদক ব্যবসায়ীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও স্থায়ীভাবে এসব কর্মকান্ড বন্ধের দাবি জানান। এবিষয়ে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ইসরাইলের বক্তব্য নিতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, ” আমি একাই গিয়েছিলাম। কোনো হামলা হয়নি। ওখানে মহিলারা আমার ছবি তুলছিল,ভিডিও করছিল। তখন আমার খারাপ লাগছিল। আমি চার বছর কুষ্টিয়াতে আছি। মহিলাকে বললাম, কেন ছবি তুলছেন? পরে উনি বলছে, ভিডিয়ো মুছে দিচ্ছি। আমি চলে আসলাম। ওর ওকানে অনেক কম্প্লেইন। আমার ওয়াইফের আপন বড়ো ভাই ভোলার ডিসি। আমার ছোট ভাই যমুনা টেলিভিশনের তুহিন আব্দুল্লাহ। আমার ওয়াইফ গভরমেন্ট প্রাইমারি স্কুলের টিচার। আমার তো টাকার অভাব নেই। দুইজন সরকারি চাকরি করি। মানুষ আসলে ভালো কাজে হেল্প করে না। আমার ডিপার্টমেন্টও হেল্প করছে না।” কুষ্টিয়া মাদকব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, একা একা কোনো অভিযান পরিচালনা করা যায় না।”