Dhaka ০৩:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েই চলেছে চুরি সন্ধ্যারপর বসে মাদক সেবীদের আখড়া

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিনদিন বেড়েই চলছে চুরি। গত চার মাসে ছোট বড় মিলে ১০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও বেশ কিছুদিন আগে হাসপাতালের জানালা ভেঙে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও তা রহস্যজনক কারনে আর উদঘাটন হয়নি। এদিকে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে ঘুপে ঘাপে বসে মাদক সেবীদের আখড়া। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নেই কোন গুরুত্ব।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, হাসপাতাল চত্ত্বরে প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় চুরির ঘটনা। সম্প্রতি হাসপাতাল চত্ত্বরে রাখা এ্যাম্বুলেন্স থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরি হয়। একই সময় অন্য একটি গাড়ি থেকে সাইরেন মেশিন চুরি হয়। এক মহিলা রোগীর গলা থেকে স্বর্ণের চেইন চুরি হয়। গত ১০ দিন আগেও এক মহিলার ১৫ হাজার টাকা এবং অন্য মহিলার মোবাইল ফোন চুরি হয়।

কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এখানে এক ধরনের চোর চক্র বিচরণ করে। তাদের চক্রে রয়েছে মহিলা সদস্যও। কোন কোন ক্ষেত্রে হাতে নাতে ধরা পড়লেও চক্রের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ছাড়িয়ে নেন। ফলে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগের কোন সুযোগ থাকেনা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো জানলেও কোন পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, হাসপাতালে চুরির ঘটনা খুবই দুঃখ জনক, ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়ত সেবা নিতে আসা রোগীদের টাকা কৌশলে ভ্যানেটি ব্যাগ কেটে চুরি হয়ে যাচ্ছে। একে একে লাগাতার বেশ কয়েকটি চুরির খবর শুনেছি ডাক্তার দেখাতে এসে সিরিয়ালে দাঁড়ানোর সময় চিকিৎসা নিতে আসা নারী রোগীদের টাকা চুরি হয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে একজন নারী কাঁদছিলো তার ১৫ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। এরপর কয়েকদিনের মাথায় আরেক জন নারী বলেন তারও নাকি ৫ হাজার টাকা চুরি হয়েগেছে। তারা বলেন, শুধু টাকা নয়, হাসপাতাল থেকে কয়েকটি অটো রিক্সা, মোটরসাইকেলসহ বেসরকারী এম্বুলেন্স থেকে মাঝে মাঝে অক্সিজেন সিলিন্ডার, সাইরেন মেশিনসহ নানা রকম জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই হাসপাতালের ভিতরে ঘোপে ঘাপে বসে মাদক সেবনকারীরা মাদক সেবন করে। এসব বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন গুরুত্ব নেই। এ কারনে জনগনের নিরাপত্তাসহ মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তারা।

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম খন্দকার মুহিব্বুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে গত ২৯আগষ্ট মোস্তাফিজুর নামে একজন অটো রিক্সা চুরির বিষয়ে একজন অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে চোর সনাক্ত করে একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা যায়নি।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান জানান, গত মাসে আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়েরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য লিখিত ভাবে আনসার সদস্যের চাহিদা দিতে বলেন। আমরা আনসার সদস্যের চাহিদার চিঠি দিলেও তিনি এখনও পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। মূলত এটা তো আইনশৃঙ্খলার ব্যাপার। তা রক্ষা করা তো পুলিশ এবং উনারাই দায়ীত্ব। সেজন্য লিখিত ভাবেই জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, আনসার সদস্য চেয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি। আনসার সম্পূর্ণ একটি আলাদা বাহিনী। আমরা ওই চিঠি জেলা আনসার অফিসে পাঠিয়েছি। হয়ত শীঘ্রই এটির সমাধান হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড়েই চলেছে চুরি সন্ধ্যারপর বসে মাদক সেবীদের আখড়া

Update Time : ০৭:১৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিনদিন বেড়েই চলছে চুরি। গত চার মাসে ছোট বড় মিলে ১০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও বেশ কিছুদিন আগে হাসপাতালের জানালা ভেঙে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও তা রহস্যজনক কারনে আর উদঘাটন হয়নি। এদিকে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে ঘুপে ঘাপে বসে মাদক সেবীদের আখড়া। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নেই কোন গুরুত্ব।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, হাসপাতাল চত্ত্বরে প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় চুরির ঘটনা। সম্প্রতি হাসপাতাল চত্ত্বরে রাখা এ্যাম্বুলেন্স থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরি হয়। একই সময় অন্য একটি গাড়ি থেকে সাইরেন মেশিন চুরি হয়। এক মহিলা রোগীর গলা থেকে স্বর্ণের চেইন চুরি হয়। গত ১০ দিন আগেও এক মহিলার ১৫ হাজার টাকা এবং অন্য মহিলার মোবাইল ফোন চুরি হয়।

কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এখানে এক ধরনের চোর চক্র বিচরণ করে। তাদের চক্রে রয়েছে মহিলা সদস্যও। কোন কোন ক্ষেত্রে হাতে নাতে ধরা পড়লেও চক্রের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ছাড়িয়ে নেন। ফলে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগের কোন সুযোগ থাকেনা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো জানলেও কোন পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, হাসপাতালে চুরির ঘটনা খুবই দুঃখ জনক, ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিনিয়ত সেবা নিতে আসা রোগীদের টাকা কৌশলে ভ্যানেটি ব্যাগ কেটে চুরি হয়ে যাচ্ছে। একে একে লাগাতার বেশ কয়েকটি চুরির খবর শুনেছি ডাক্তার দেখাতে এসে সিরিয়ালে দাঁড়ানোর সময় চিকিৎসা নিতে আসা নারী রোগীদের টাকা চুরি হয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে একজন নারী কাঁদছিলো তার ১৫ হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। এরপর কয়েকদিনের মাথায় আরেক জন নারী বলেন তারও নাকি ৫ হাজার টাকা চুরি হয়েগেছে। তারা বলেন, শুধু টাকা নয়, হাসপাতাল থেকে কয়েকটি অটো রিক্সা, মোটরসাইকেলসহ বেসরকারী এম্বুলেন্স থেকে মাঝে মাঝে অক্সিজেন সিলিন্ডার, সাইরেন মেশিনসহ নানা রকম জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই হাসপাতালের ভিতরে ঘোপে ঘাপে বসে মাদক সেবনকারীরা মাদক সেবন করে। এসব বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন গুরুত্ব নেই। এ কারনে জনগনের নিরাপত্তাসহ মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তারা।

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম খন্দকার মুহিব্বুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে গত ২৯আগষ্ট মোস্তাফিজুর নামে একজন অটো রিক্সা চুরির বিষয়ে একজন অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে চোর সনাক্ত করে একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা যায়নি।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান জানান, গত মাসে আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়েরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য লিখিত ভাবে আনসার সদস্যের চাহিদা দিতে বলেন। আমরা আনসার সদস্যের চাহিদার চিঠি দিলেও তিনি এখনও পর্যন্ত কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। মূলত এটা তো আইনশৃঙ্খলার ব্যাপার। তা রক্ষা করা তো পুলিশ এবং উনারাই দায়ীত্ব। সেজন্য লিখিত ভাবেই জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, আনসার সদস্য চেয়ে হাসপাতালের পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি। আনসার সম্পূর্ণ একটি আলাদা বাহিনী। আমরা ওই চিঠি জেলা আনসার অফিসে পাঠিয়েছি। হয়ত শীঘ্রই এটির সমাধান হবে।