Dhaka ০৭:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালিয়াকৈরে শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের প্রতিবাদে মানববন্ধন,মহাসড়ক অবরোধ,শিক্ষিকা বহিষ্কার

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দশম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর চুল কাটা ও এলোপাথারী বেত্রাঘাতের প্রতিবাদে রোববার সকালে মানববন্ধন করেছে বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। এসময় মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে শোকজ ও সাময়িক বহিষ্কার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাসী, শিক্ষার্র্থী-শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার কালিয়াকৈর উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকায় বেগম সুফিয়া মডেল হাই স্কুলের আইসিটি শিক্ষিকা শারমিন খন্দকার বিরুদ্ধে দশম শ্রেনীর ইমনের চুল কাটাকে কেন্দ্র করে তাকে এলোপাথারী বেত্রাঘাতের অভিযোগ উঠেছে। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ ও ওই শিক্ষিকার প্রদত্যাগের দাবীতে রোববার সকালে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায় তারা পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ করে। এসময় ওই মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হলে দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে তাদের বিক্ষোভের মুখে ওই শিক্ষিকা শারমিন খন্দকারকে শোকজ ও সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপর শান্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলে ফিরে যায়।

বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই শিক্ষিকা দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ইমনকে চুল কাটার জন্য ১৭টি বেত্রাঘাত করলে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শুধু ইমনকেই নয়, এর আগেও তিনি একাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে বেত্রাঘাত করে আহত করেন। ওই শিক্ষিকা এছাড়াও কিছু শিক্ষকও ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সাথে অশ্লীল গালিগালাজও করেন। তবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাঁর বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এবিষয়ে জানতে ওই স্কুলে গিয়েও ওই শিক্ষিকাকে পাওয়া যায়নি।

ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল আলম জানান, যখন ঘটনা ঘটে, তখন স্কুলে ছিলাম না। কিন্তু সবার সঙ্গে কথা বলে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। যেহেতু মিমাংসার দিকে যাচ্ছিলাম, সেহেতু তাৎক্ষণিক বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তপক্ষেকে অবগত করেছিলাম না। তবে এর সুষ্ঠ বিচার করা হবে।

এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা শওকত আকবর খান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে বসে মারধরের প্রমাণ পেয়েছি। এরপর ওই শিক্ষিকাকে প্রাথমিকভাবে শোকজ ও সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তবে সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে উনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ছয় সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ওয়েব সাইটে প্রকাশ

কালিয়াকৈরে শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের প্রতিবাদে মানববন্ধন,মহাসড়ক অবরোধ,শিক্ষিকা বহিষ্কার

Update Time : ০৫:৪০:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দশম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর চুল কাটা ও এলোপাথারী বেত্রাঘাতের প্রতিবাদে রোববার সকালে মানববন্ধন করেছে বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। এসময় মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে শোকজ ও সাময়িক বহিষ্কার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাসী, শিক্ষার্র্থী-শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার কালিয়াকৈর উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকায় বেগম সুফিয়া মডেল হাই স্কুলের আইসিটি শিক্ষিকা শারমিন খন্দকার বিরুদ্ধে দশম শ্রেনীর ইমনের চুল কাটাকে কেন্দ্র করে তাকে এলোপাথারী বেত্রাঘাতের অভিযোগ উঠেছে। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ ও ওই শিক্ষিকার প্রদত্যাগের দাবীতে রোববার সকালে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায় তারা পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ রেখে বিক্ষোভ করে। এসময় ওই মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হলে দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে তাদের বিক্ষোভের মুখে ওই শিক্ষিকা শারমিন খন্দকারকে শোকজ ও সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপর শান্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলে ফিরে যায়।

বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই শিক্ষিকা দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ইমনকে চুল কাটার জন্য ১৭টি বেত্রাঘাত করলে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শুধু ইমনকেই নয়, এর আগেও তিনি একাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে বেত্রাঘাত করে আহত করেন। ওই শিক্ষিকা এছাড়াও কিছু শিক্ষকও ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সাথে অশ্লীল গালিগালাজও করেন। তবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাঁর বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এবিষয়ে জানতে ওই স্কুলে গিয়েও ওই শিক্ষিকাকে পাওয়া যায়নি।

ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল আলম জানান, যখন ঘটনা ঘটে, তখন স্কুলে ছিলাম না। কিন্তু সবার সঙ্গে কথা বলে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। যেহেতু মিমাংসার দিকে যাচ্ছিলাম, সেহেতু তাৎক্ষণিক বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তপক্ষেকে অবগত করেছিলাম না। তবে এর সুষ্ঠ বিচার করা হবে।

এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা শওকত আকবর খান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে বসে মারধরের প্রমাণ পেয়েছি। এরপর ওই শিক্ষিকাকে প্রাথমিকভাবে শোকজ ও সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তবে সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে উনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।