Dhaka ০২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিরাজগঞ্জ আইনজীবি সমিতিতে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীরা বিনা ভোটে জয়ী

সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন বিএনপি ও জাময়াতপন্থী আইনজীবীরা।  বুধবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে কোন প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী না থাকায় বিএনপি ও জামায়াতপন্থী একক প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, বাঁধা প্রদান ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করায় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজয়ী প্যানেলের সভাপতি।

সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনার এ্যাড: কায়ছার আহমেদ লিটন জানান, ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হয়। ৩০ জানুয়ারী এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তফসিল অনুযায়ী ১৬ জানুয়ারী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে ৩টি পদ ছাড়া বাকি ১৪টি পদে একটি করে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়। ২২ জানুয়ারী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত সভাপতি পদে এ্যাড: কামরুজ্জামান কামাল (জাপা), সাধারন সম্পাদক পদে এ্যাড: আব্দুল হামিদ (বিএনপি) ও এ্যাড: আমিনুল ইসলাম (আওয়ামীলীগ) এবং ক্রীড়া ও সাস্কৃতিক সম্পাদক পদে এ্যাড: মুজাহিদ বিন রহমান মিঠুন (জাপা) মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করে নেন। এ অবস্থায় ১৭টি পদে সবাই একক প্রার্থী হওয়ায় এ্যাড: শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার রফিক সরকার (বিএনপি) ও এ্যাড: রফিকুল ইসলাম সেলিম (জামায়াত) সমর্থিত রফিক-সেলিম একক প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামীপন্থী কয়েকজন আইনজীবী জানান, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গনে বহিরাগত লোকজন এসে আমাদের প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ্যাড: গোলাম হায়দারকে লাঞ্চিত করে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের নির্বাচনে অংশ না নিতে প্রকাশ্যে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে। পাশাপাশি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ও দেখানো হয়। ৫ আগষ্ট পটপরিবর্তের পর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অপসারিত পিপি এ্যাড: আব্দুর রহমান ও অপসারিত জিপি এ্যাড: রাখালের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা করায় তারা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। যে কারনে ঝামেলা এড়াতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা এবারের নির্বাচনে অংশ নেননি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে সিনিয়র কয়েকজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত সরকারের আমলে সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতিতে সব দলের অংশ গ্রহনে উৎসব মুখর পরিবেশে প্রতি বছর প্রতিদ্বন্ধিতাপুর্ন নির্বাচন হতো। যে নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরাও বিজয়ী হয়েছেন। এবারই প্রথম বিনা ভোটে আইনজীবী সমিতির কমিটি গঠিত হওয়ায় আইনজীবীরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হলেন। অথচ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভোটাধিকার নিয়ে নানা আন্দোলন করলেও এখন তারাই বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেন।

এ বিষয়ে নবনির্বাচিত সভাপতি ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এ্যাড: রফিক সরকার বলেন, সমিতির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ১২টিতে বিএনপি এবং সাধারন সম্পাদকসহ ৫টি পদে জামায়াত সমর্থক আইনজীবীরা বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয় ভাবে কাউকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়নি। বহিরাগত লোকজনের ভয়ে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এমন বাধা আমরাও অতীতে অনেক পেয়েছি, কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

সিরাজগঞ্জ আইনজীবি সমিতিতে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীরা বিনা ভোটে জয়ী

Update Time : ০৮:২৪:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন বিএনপি ও জাময়াতপন্থী আইনজীবীরা।  বুধবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে কোন প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী না থাকায় বিএনপি ও জামায়াতপন্থী একক প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, বাঁধা প্রদান ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করায় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজয়ী প্যানেলের সভাপতি।

সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনার এ্যাড: কায়ছার আহমেদ লিটন জানান, ৩১ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হয়। ৩০ জানুয়ারী এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তফসিল অনুযায়ী ১৬ জানুয়ারী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে ১৭টি পদের বিপরীতে ৩টি পদ ছাড়া বাকি ১৪টি পদে একটি করে মনোনয়নপত্র দাখিল হয়। ২২ জানুয়ারী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত সভাপতি পদে এ্যাড: কামরুজ্জামান কামাল (জাপা), সাধারন সম্পাদক পদে এ্যাড: আব্দুল হামিদ (বিএনপি) ও এ্যাড: আমিনুল ইসলাম (আওয়ামীলীগ) এবং ক্রীড়া ও সাস্কৃতিক সম্পাদক পদে এ্যাড: মুজাহিদ বিন রহমান মিঠুন (জাপা) মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করে নেন। এ অবস্থায় ১৭টি পদে সবাই একক প্রার্থী হওয়ায় এ্যাড: শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার রফিক সরকার (বিএনপি) ও এ্যাড: রফিকুল ইসলাম সেলিম (জামায়াত) সমর্থিত রফিক-সেলিম একক প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামীপন্থী কয়েকজন আইনজীবী জানান, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গনে বহিরাগত লোকজন এসে আমাদের প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ্যাড: গোলাম হায়দারকে লাঞ্চিত করে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের নির্বাচনে অংশ না নিতে প্রকাশ্যে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে। পাশাপাশি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ও দেখানো হয়। ৫ আগষ্ট পটপরিবর্তের পর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অপসারিত পিপি এ্যাড: আব্দুর রহমান ও অপসারিত জিপি এ্যাড: রাখালের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা করায় তারা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। যে কারনে ঝামেলা এড়াতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা এবারের নির্বাচনে অংশ নেননি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে সিনিয়র কয়েকজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিগত সরকারের আমলে সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতিতে সব দলের অংশ গ্রহনে উৎসব মুখর পরিবেশে প্রতি বছর প্রতিদ্বন্ধিতাপুর্ন নির্বাচন হতো। যে নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরাও বিজয়ী হয়েছেন। এবারই প্রথম বিনা ভোটে আইনজীবী সমিতির কমিটি গঠিত হওয়ায় আইনজীবীরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হলেন। অথচ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভোটাধিকার নিয়ে নানা আন্দোলন করলেও এখন তারাই বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেন।

এ বিষয়ে নবনির্বাচিত সভাপতি ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এ্যাড: রফিক সরকার বলেন, সমিতির ১৭টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ ১২টিতে বিএনপি এবং সাধারন সম্পাদকসহ ৫টি পদে জামায়াত সমর্থক আইনজীবীরা বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

অভিযোগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয় ভাবে কাউকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়নি। বহিরাগত লোকজনের ভয়ে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এমন বাধা আমরাও অতীতে অনেক পেয়েছি, কিন্তু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়নি।