কুয়াশার কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন সৈয়দপুরের আলু ও বোরো বীজতলা চাষীরা।আলু ও বীজতলা রক্ষায় প্রতিদিনই ছত্রাক নাশক ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে এই অঞ্চলে উৎপাদনে ব্যয় বেড়েছে বলে জানান কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শুরুতে ১৯৮ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু উৎপাদন করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে প্রায় ১ হাজার ৩২৯ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরের শুরুতে আগাম আলু বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজিতে। বর্তমানে আলুর দরপতন হয়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৬ টাকায়।
সরজমিনে উপজেলার কামারপুকুর, বাঙ্গালীপুর ও বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা ছত্রাকনাশক ওষুধ ব্যবহার করছেন। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক আমিনুর রহমান নিজের পাঁচ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করছেন। লোক লাগিয়ে ওই জমিতে ছত্রাকনাশক দিচ্ছেন। তিনি বলেন কুয়াশায় আলুর গাছ কোকরা হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে জমিতে ছত্রাক নাশক ব্যবহার করছি। এই সময় জমিতে ঔষধ না দিলে আলু পঁচে যেতে পারে।
উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার কৃষক মতিয়ার রহমান (৫৫) বলেন, চার বিঘা জমির আলুর চাষাবাদ করেছি। কিন্ত কুয়াশা সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। প্রত্যেক দিন জমিতে ঔষধ দিতে হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, আলু মৌসুমে বীজআলু ১০০ টাকা কেজি হিসাবে কিনে জমিতে লাগানো হয়েছে। কুয়াশা ও শীতের কারণে এবার ঘন ঘন স্প্রে করার কারণে প্রতিকেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২৫ টাকা আর বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৮ টাকায়। এর মধ্যে কুয়াশা কেটে না গেলে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হবে। এরই মধ্যে লেটব্রাইট রোগ ক্ষতি করছে আলু ক্ষেতের।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, গত কয়েকদিন ধরে সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। সেই সাথে কুয়াশা ও ঠান্ডা অব্যাহত রয়েছে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষন জানান, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে ক্ষতির সম্ভাবণা রয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, গত বছর আলুর চাহিদা বেশি ছিল। সে তুলনায় জোগান ছিল কম। তাই ভালো দাম পেয়েছে কৃষক। গতবারের দেখাদেখি এবার আবাদ বাড়িয়ে বিপদে পড়েছেন চাষিরা। তবে সঠিক পরিচর্যা করা হলে আলুর কোন ক্ষতিই হবে না বলে জানান তিনি।