ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশ সীমান্তে ‘অপস অ্যালার্ট’ জারি করেছে। এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে, ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমান্তে মহড়া চালানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
বার্তাসংস্থা বলছে, ভারতে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের আগে উচ্চতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ১০ দিনের ‘অপস অ্যালার্ট’ মহড়া শুরু করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৭৬তম প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মোট ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি জারি করে সীমান্তের দায়িত্বে থাকা সবগুলো বর্ডার আউট পোস্টগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২৩ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিএসএফকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। এই নির্দেশনাকে বিএসএফের পরিভাষায় নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপস অ্যালার্ট’ (OPS ALERT)।
বৃহস্পতিবার জারি করা এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্তে বারবার মহড়া চালাতে হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করতে হবে। প্রয়োজনে রাতে অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েন করে নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। বিএসএফের আশঙ্কা, প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সীমান্তে পরিস্থিতি খারাপ করার জন্য ওপার থেকে উসকানি আসতে পারে। আর বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের ভালো করে বোঝাতে হবে। সেই দায়িত্ব নিতে হবে বিএসএফের শীর্ষ কর্মকর্তাদের।
ইতোমধ্যেই বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের স্পেশাল ডিজি রবি গান্ধী একাধিক বর্ডার আউট পোস্ট এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এদিনের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সীমান্তের একাধিক অংশ রয়েছে যেখানে কাঁটাতার নেই। সবচেয়ে বেশি নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে অরক্ষিত এলাকায়। আগামী সাতদিন এই এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৪০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর উচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপস অ্যালার্ট শুরু হয়েছে এবং সীমান্ত ফাঁড়িগুলোকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এই মহড়ার সময় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে টহল এবং অন্যান্য দায়িত্ব আরও জোরালো করা হবে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অপস অ্যালার্ট’ মহড়ার সময় সেনারা সীমান্তে বিভিন্ন নিরাপত্তা মহড়া পরিচালনা করবে। এছাড়াও সীমান্তে যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন অপারেশনাল পদ্ধতি অনুশীলনের পাশাপাশি সীমান্ত অঞ্চলের জনসংখ্যার সঙ্গে পুনর্মিলন কর্মসূচিও পরিচালিত হবে।
প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা দেখা গেছে বিএসএফ এবং বাংলাদেশ সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবির মধ্যে।