Dhaka ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তানোরে লীজকৃত ভিপি সম্পত্তি বিক্রি দখল ছাড়ছেনা প্রভাবশালীরা

রাজশাহীর তানোরে লীজকৃত ভিপি সম্পত্তি আদালতের রায়ে প্রাপ্ত হওয়ার পরও ভূমি অফিস চেক কেটে দেয়নি এবং সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কলমা ইউনিয়ন ইউপির বিল্লি মৌজায় ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে গত অক্টোবর মাসের ১৭ তারিখে সহকারী কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন অসহায় বয়োবৃদ্ধ ভুক্তভোগী শামসুল তাবরেজ। কিন্তু অভিযোগের কোন প্রতিকার না পাওয়ায় চলতি মাসের ২৭ জানুয়ারি সোমবার উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরে পুনরায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ বিবাদী করা হয় কিসমত বিল্লি গ্রামের প্রভাবশালী আজিজের পুত্র সোহেল রানা ও সেলিম এবং মাসুদ রানা কে।

এঘটনায় ভুক্তভোগী অসহায় শামসুল ও প্রভাবশালী সোহেল ও সেলিমদের মাঝে এক প্রকার উত্তেজনা বিরাজ করছে।

অভিযোগে উল্লেখ, উপজেলার কলমা ইউনিয়ন ইউপির বিল্লি মৌজায় আরএস ২৭৮ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত আরএস ৯৭১ দাগে ৬৬ শতাংশ ভিটে মাটি রয়েছে। পুরো জমিটি ভিপি সম্পত্তি। ওই জমি লীজ নিয়ে বিগত প্রায় ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন কিসমত বিল্লি গ্রামের শামসুল তাবরেজ। কিন্তু সম্পত্তির উপর নজর পড়ে একই গ্রামের আব্দুল আজিজের। জমি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে বিগত ২০০২ সালে শামসুল তাবরেজ ও সরকারের বিপক্ষে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৮৪/২০০২। মামলার প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে বিজ্ঞ আদালত শামসুল তাবরেজ ও সরকারের  পক্ষে  রায় দেন। মামলা চলমান অবস্থায় ২০১০-১১ সনের খাজনা দেয়ার জন্য ভূমি অফিসে আসলে ওই সময়ের সহকারী কমিশনার ভূমি জয়নাল আবেদীন চেক কেটে দেয়নি। তাকে চেক কেটে না দিলেও অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে ৬৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৪৫ শতাংশ জমি অভিযোগের এক নম্বর বিবাদী আজিজের পুত্র সোহেল রানার নামে লীজের চেক কেটে দেয়া হয়। লীজ নেয়ার পর সোহেল রানা অভিযোগের তিন নম্বর বিবাদী কিসমত বিল্লি গ্রামের মাসুদ রানার কাছে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন।

স্থানীয়রা জানান, বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ৪৫ শতাংশ জমি লীজ দেয় ভূমি কর্তারা। শুধু তাই না ওই জমির জন্য শামসুল তাবরেজের নামে আদালতে ৪ টি মামলা করেন। সব মামলা থেকে খালাস পায় শামসুল। আদালত থেকে খালাস ও জমির রায় পক্ষে পেলেও তারা কোন কিছুই মানেন নি। এমনকি তাদের ভয়ে কোন অভিযোগও করতে পারেনি শামসুল। কিন্তু গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হলেও দোসররা তাদের কব্জায় জমি রেখেছে। ভিপি জমি কিভাবে বিক্রি করতে পারে সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি তুলেছেন জনসাধারণ।

ভুক্তভোগী শামসুল তাবরেজ জানান, মামলার রায় পাওয়ার পর পুনরায় ভূমি অফিসে চেক কাটতে গেলে তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভূমি জয়নাল আবেদীন সাব জানিয়ে দেয় ৬৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৪৫ শতাংশ জমি লীজ অন্যের নামে হয়েছে। বাকি ২১ শতাংশ জমির চেক দিতে চাই। আমি সহকারী কমিশনার ভূমি কে জানায় আদালতের ডিগ্রি তে ৬৬ শতাংশ জমির রায় আমার পক্ষে আছে। সে আমার কোন কথায় শোনেননি। আমি সামান্য  জায়গার উপরে বাড়ি করে আছি। আর তারা সব দখলে নিয়েছে। পরপর দুটি অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোন প্রতিকার পায়নি। তাদের কে জমি দখল মুক্ত করতে বললেই প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তারা অত্যান্ত প্রভাবশালী দাপটে ব্যক্তি। তাদের ভয়ে কোন কথা বলা যায় না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম জানান, অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সুন্দরগঞ্জে প্রস্তুতি মূলক সভা

তানোরে লীজকৃত ভিপি সম্পত্তি বিক্রি দখল ছাড়ছেনা প্রভাবশালীরা

Update Time : ০৯:০২:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে লীজকৃত ভিপি সম্পত্তি আদালতের রায়ে প্রাপ্ত হওয়ার পরও ভূমি অফিস চেক কেটে দেয়নি এবং সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কলমা ইউনিয়ন ইউপির বিল্লি মৌজায় ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা। এঘটনার প্রতিকার চেয়ে গত অক্টোবর মাসের ১৭ তারিখে সহকারী কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন অসহায় বয়োবৃদ্ধ ভুক্তভোগী শামসুল তাবরেজ। কিন্তু অভিযোগের কোন প্রতিকার না পাওয়ায় চলতি মাসের ২৭ জানুয়ারি সোমবার উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরে পুনরায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ বিবাদী করা হয় কিসমত বিল্লি গ্রামের প্রভাবশালী আজিজের পুত্র সোহেল রানা ও সেলিম এবং মাসুদ রানা কে।

এঘটনায় ভুক্তভোগী অসহায় শামসুল ও প্রভাবশালী সোহেল ও সেলিমদের মাঝে এক প্রকার উত্তেজনা বিরাজ করছে।

অভিযোগে উল্লেখ, উপজেলার কলমা ইউনিয়ন ইউপির বিল্লি মৌজায় আরএস ২৭৮ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত আরএস ৯৭১ দাগে ৬৬ শতাংশ ভিটে মাটি রয়েছে। পুরো জমিটি ভিপি সম্পত্তি। ওই জমি লীজ নিয়ে বিগত প্রায় ৪৫ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন কিসমত বিল্লি গ্রামের শামসুল তাবরেজ। কিন্তু সম্পত্তির উপর নজর পড়ে একই গ্রামের আব্দুল আজিজের। জমি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে বিগত ২০০২ সালে শামসুল তাবরেজ ও সরকারের বিপক্ষে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৮৪/২০০২। মামলার প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে বিজ্ঞ আদালত শামসুল তাবরেজ ও সরকারের  পক্ষে  রায় দেন। মামলা চলমান অবস্থায় ২০১০-১১ সনের খাজনা দেয়ার জন্য ভূমি অফিসে আসলে ওই সময়ের সহকারী কমিশনার ভূমি জয়নাল আবেদীন চেক কেটে দেয়নি। তাকে চেক কেটে না দিলেও অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে ৬৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৪৫ শতাংশ জমি অভিযোগের এক নম্বর বিবাদী আজিজের পুত্র সোহেল রানার নামে লীজের চেক কেটে দেয়া হয়। লীজ নেয়ার পর সোহেল রানা অভিযোগের তিন নম্বর বিবাদী কিসমত বিল্লি গ্রামের মাসুদ রানার কাছে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন।

স্থানীয়রা জানান, বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ৪৫ শতাংশ জমি লীজ দেয় ভূমি কর্তারা। শুধু তাই না ওই জমির জন্য শামসুল তাবরেজের নামে আদালতে ৪ টি মামলা করেন। সব মামলা থেকে খালাস পায় শামসুল। আদালত থেকে খালাস ও জমির রায় পক্ষে পেলেও তারা কোন কিছুই মানেন নি। এমনকি তাদের ভয়ে কোন অভিযোগও করতে পারেনি শামসুল। কিন্তু গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হলেও দোসররা তাদের কব্জায় জমি রেখেছে। ভিপি জমি কিভাবে বিক্রি করতে পারে সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি তুলেছেন জনসাধারণ।

ভুক্তভোগী শামসুল তাবরেজ জানান, মামলার রায় পাওয়ার পর পুনরায় ভূমি অফিসে চেক কাটতে গেলে তৎকালীন সহকারী কমিশনার ভূমি জয়নাল আবেদীন সাব জানিয়ে দেয় ৬৬ শতাংশ জমির মধ্যে ৪৫ শতাংশ জমি লীজ অন্যের নামে হয়েছে। বাকি ২১ শতাংশ জমির চেক দিতে চাই। আমি সহকারী কমিশনার ভূমি কে জানায় আদালতের ডিগ্রি তে ৬৬ শতাংশ জমির রায় আমার পক্ষে আছে। সে আমার কোন কথায় শোনেননি। আমি সামান্য  জায়গার উপরে বাড়ি করে আছি। আর তারা সব দখলে নিয়েছে। পরপর দুটি অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোন প্রতিকার পায়নি। তাদের কে জমি দখল মুক্ত করতে বললেই প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তারা অত্যান্ত প্রভাবশালী দাপটে ব্যক্তি। তাদের ভয়ে কোন কথা বলা যায় না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম জানান, অভিযোগ হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।