ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে সামনে এসেছে বলে জানালেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমিতে অমর একুশের বইমেলার উদ্বোধন শেষে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জাতির ঘাড়ে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চেপে থাকা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটেছে। আমাদের সাহসী তরুণদের এই অভূতপূর্ব আত্মত্যাগ বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। এই বিজয়ের মাধ্যমে এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ইস্পাত কঠোর প্রতিজ্ঞা। যাদের মহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত অভ্যুত্থান এবারের বইমেলায় নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে এসেছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,আমি আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জুলাইয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানে যেসব দুঃসাহসী ছাত্র-জনতা-শ্রমিক প্রাণ দিয়েছেন এবং নির্মমভাবে আহত হয়েছেন তাদের সবাইকে। এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং তার মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,বরাবরই একুশে মানে জেগে ওঠা। একুশে মানে আত্মপরিচয়ের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া। একুশে মানে অবিরাম সংগ্রাম। নিজের পরিধিকে আরও অনেক বাড়িয়ে নেওয়া। এবারের একুশের পরিপ্রেক্ষিত আমাদেরকে নতুন দিগন্তে প্রতিস্থাপন করেছে।
তিনি বলেন,বরকত, সালাম, রফিক, জাব্বারের বুকের রক্তে যে অঙ্গীকার মাখা ছিল তাতে ছিল জুলাই অভ্যুত্থানকে নিশ্চিত করার মহা বিস্ফোরক শক্তি। অর্ধশতাব্দী পর এই মহাবিস্ফোরণ গণঅভ্যুত্থান হয়ে দেশ পাল্টে দিল। এই বিস্ফোরণ আমাদের মধ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় গ্রোথিত করে দিয়ে গেল। অমর একুশের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা এই প্রত্যয়ে শপথ নিতে এসেছি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,একুশ আমাদের মূল সত্তার পরিচয়। একুশ আমাদের ঐক্যের দৃঢ় বন্ধন। এই বন্ধন ছোট-বড়, যৌক্তিক-অযৌক্তিক, ক্ষণস্থায়ী- দীর্ঘস্থায়ী সব দূরত্বের ঊর্ধ্বে। এ জন্য সব ধরনের জাতীয় উৎসবে, সংকটে, দুর্যোগে আমরা শহীদ মিনারে ছুটে যাই। সেখানে আমরা শান্তি পাই। স্বস্তি পাই। সমাধান পাই। সাময়িকভাবে অদৃশ্য ঐক্যকে আবার খুঁজে পায়। ২১ আমাদের মানসকে এভাবে তৈরি করে দিয়েছে। একুশ আমাদের পথ দেখায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্র্বতী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।