Dhaka ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৬বছর অনুপস্থিতি থেকেও তথ্য গোপন করে কলেজে ফেরার চেষ্টা বরখাস্তকৃত ৩ শিক্ষকের

টানা ১৬ বছর কলেজে অনুপস্থিত থাকার তথ্য গোপন করে আবারো কলেজে ফেরার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে বরখাস্তকৃত তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে।

বরখাস্তকৃত ওই তিন শিক্ষক হলেন, ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মো. জাহাঙ্গীর আলম, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে প্রভাষক কিশোর কুমার সরকার ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে ফাতেমা পারভীন। ওই কলেজ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯৯৭ সালে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

২০১৬ সালে সরকারিকরণ করা হয়। বর্তমানের ওই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রী, অনার্স এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা রয়েছে। কলেজে একজন অধ্যক্ষসহ ৫৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। কিন্তু কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূগোল বিভাগের প্রভাষক হিসাবে যোগদেন। এরপর ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে এমপিওভুক্ত হয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে ২০০৪ সালের ১৮ জুন নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। একই বছরে ২৩ জুন গভর্ণিং বডির সভাপতি বরাবর আবেদনের মাধ্যমে তিনি প্রভাষক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। অফিস তথ্য মতে গত ২০০৮ সালের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত উপাধ্যক্ষ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।

কিন্তু পরবর্তীতে তিনি কলেজে উপস্থিত থেকে আর কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেননি। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে কলেজ গভর্নিংবডি ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে উপধ্যক্ষ পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি

মোতাবেক গঠিত তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার প্রভাষক পদের এমপিওভুক্তিও বাতিল করা হয়। ২০১৩ সালের ২৯ জুন কলেজটি জাতীয়করণের জন্য পরিদর্শনকালেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। এরপর থেকে তিনি আর কলেজে যায়নি বলে জানা গেছে। অপর শিক্ষক কিশোর কুমার সরকার। তিনি ২০০৪ সালে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন।

নিয়োগের পর তিনি প্রায় দুই মাস অনিয়মিতভাবে কলেজে উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করণের সময়ও তিনি (১ জুলাই ২০০৮ হতে ১৮ জুলাই ২০১০পর্যন্ত ) কলেজে নিয়মিত ছিলেন না। এছাড়াও তিনি অন্যত্র চাকুরী করার কারণে তার এমপিও হয়নি। তাকে কারণ দর্শানোসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার হয়।

নোটিসের জবাব না দেয়ায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় বিধি মোতাবেক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। পরে তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তে কিশোর কুমার সরকারকে প্রভাষক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আরেক শিক্ষক ফাতেমা পারভীন। গত ২০০৪ সালের ২৩ জুন অতিরিক্ত শিক্ষক হিসাবে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের পর থেকেই তিনি কলেজ নিয়মিতভাবে উপস্থিত থাকতেন না। পরে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। নোটিশের জাবাব না পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ২০১১ সালে ১৩ আগষ্ট প্রভাষকের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

ওই কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরা অভিযোগ তোলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই তিন শিক্ষক কালেজে নাম অন্তভূক্তি করেছে এবং নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। কলেজে কোনো ক্লাস ও পরীক্ষার কাযক্রমে অংশগ্রহন করেননি। দীর্ঘ ১৬ বছর কলেজে উপস্থিত না থেকেও তা গোপনে কলেজের জাতীয় করণে তালিকায় তাদের নাম অন্তভূক্তি করেন। কলেজ সরকারি হওয়ার পর সরকারি চাকুরীর আশায় সম্প্রতি আদালতে মামলাও করেছেন বরখাস্তকৃত তিন শিক্ষক। এসব বিষয়ে তিনটি মামলা এখনো চলমান। কিন্তু মামলার বিষয় গোপন রেখে তারা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য নানা অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (কলেজ-১) মুহাম্মদ সফিউল বশর স্বাক্ষরিত একটি পত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজের তিনজন শিক্ষকের এডহক নিয়োগ সংক্রান্ত সকাল কাগজপত্রসহ অধ্যক্ষকে তলব করেছেন। তবে দুর্ণীতিদমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন কর্মরত শিক্ষকরা।

বরখাস্তকৃত ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, দুদক, থানা , পূলিশ সুপার, জেলা দায়রা জজ আদালতসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে, হয়রানি মূলক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে সাময়িক বরখাস্ত করে রেখে ছিল। বরখাস্তকৃত ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে প্রভাষক কিশোর কুমার সরকার জানান, যেসমস্ত অভিযোগ দিয়ে আমাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তার সবই মিথ্যা। নানা ভাবে আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। তবে এ বিষয়ে বরখাস্তকৃতইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের শিক্ষক ফাতেমা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

ওই কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুফিয়া বেগম জানান, এ বিষয়ে মাউশি থেকে কলেজের রেজুলেশনসহ আমাকে তলব করেছে। আমি কলেজে যেসকল কাগজপত্রগুলি পেয়েছি, সেগুলিই উপস্থাপন করেছি। এই চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা চলমান আছে। তবে মাউশি তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিবে। সেটা মন্ত্রণালয় ঠিক করবে।

মাউশির সহকারী পরিচালক (কলেজ-১) মুহাম্মদ সফিউল বশর জানান, বরাখাস্তকৃতরা তাদের মতো করে চাকরি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা তাদের মতো বিভিন্ন তথ্য বা ডকুমেন্ট দিয়ে আবেদন করছেন। সেগুলি যাচাই বাছাই করে ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে। যারা সংক্ষুদ্ধ হয় তাদের কথাও ম্যানেজমেন্ট শুনছে। তিনি আরো বলেন, এতোদিন যারা বৈষম্য করেছে এখন তারাও বলছে বৈষম্যের শিকার। আমরা এখানে বসে প্রতিনিয়ত এগুলো দেখছি বা শুনছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সাক্ষাৎ

১৬বছর অনুপস্থিতি থেকেও তথ্য গোপন করে কলেজে ফেরার চেষ্টা বরখাস্তকৃত ৩ শিক্ষকের

Update Time : ০৫:৪৬:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

টানা ১৬ বছর কলেজে অনুপস্থিত থাকার তথ্য গোপন করে আবারো কলেজে ফেরার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে বরখাস্তকৃত তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে।

বরখাস্তকৃত ওই তিন শিক্ষক হলেন, ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মো. জাহাঙ্গীর আলম, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে প্রভাষক কিশোর কুমার সরকার ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে ফাতেমা পারভীন। ওই কলেজ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯৯৭ সালে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

২০১৬ সালে সরকারিকরণ করা হয়। বর্তমানের ওই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রী, অনার্স এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা রয়েছে। কলেজে একজন অধ্যক্ষসহ ৫৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার। কিন্তু কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূগোল বিভাগের প্রভাষক হিসাবে যোগদেন। এরপর ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে এমপিওভুক্ত হয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে ২০০৪ সালের ১৮ জুন নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। একই বছরে ২৩ জুন গভর্ণিং বডির সভাপতি বরাবর আবেদনের মাধ্যমে তিনি প্রভাষক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। অফিস তথ্য মতে গত ২০০৮ সালের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত উপাধ্যক্ষ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।

কিন্তু পরবর্তীতে তিনি কলেজে উপস্থিত থেকে আর কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেননি। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে কলেজ গভর্নিংবডি ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে উপধ্যক্ষ পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি

মোতাবেক গঠিত তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার প্রভাষক পদের এমপিওভুক্তিও বাতিল করা হয়। ২০১৩ সালের ২৯ জুন কলেজটি জাতীয়করণের জন্য পরিদর্শনকালেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। এরপর থেকে তিনি আর কলেজে যায়নি বলে জানা গেছে। অপর শিক্ষক কিশোর কুমার সরকার। তিনি ২০০৪ সালে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন।

নিয়োগের পর তিনি প্রায় দুই মাস অনিয়মিতভাবে কলেজে উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করণের সময়ও তিনি (১ জুলাই ২০০৮ হতে ১৮ জুলাই ২০১০পর্যন্ত ) কলেজে নিয়মিত ছিলেন না। এছাড়াও তিনি অন্যত্র চাকুরী করার কারণে তার এমপিও হয়নি। তাকে কারণ দর্শানোসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার হয়।

নোটিসের জবাব না দেয়ায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় বিধি মোতাবেক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। পরে তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তে কিশোর কুমার সরকারকে প্রভাষক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আরেক শিক্ষক ফাতেমা পারভীন। গত ২০০৪ সালের ২৩ জুন অতিরিক্ত শিক্ষক হিসাবে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের পর থেকেই তিনি কলেজ নিয়মিতভাবে উপস্থিত থাকতেন না। পরে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। নোটিশের জাবাব না পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ২০১১ সালে ১৩ আগষ্ট প্রভাষকের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

ওই কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরা অভিযোগ তোলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই তিন শিক্ষক কালেজে নাম অন্তভূক্তি করেছে এবং নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। কলেজে কোনো ক্লাস ও পরীক্ষার কাযক্রমে অংশগ্রহন করেননি। দীর্ঘ ১৬ বছর কলেজে উপস্থিত না থেকেও তা গোপনে কলেজের জাতীয় করণে তালিকায় তাদের নাম অন্তভূক্তি করেন। কলেজ সরকারি হওয়ার পর সরকারি চাকুরীর আশায় সম্প্রতি আদালতে মামলাও করেছেন বরখাস্তকৃত তিন শিক্ষক। এসব বিষয়ে তিনটি মামলা এখনো চলমান। কিন্তু মামলার বিষয় গোপন রেখে তারা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য নানা অপকৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (কলেজ-১) মুহাম্মদ সফিউল বশর স্বাক্ষরিত একটি পত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজের তিনজন শিক্ষকের এডহক নিয়োগ সংক্রান্ত সকাল কাগজপত্রসহ অধ্যক্ষকে তলব করেছেন। তবে দুর্ণীতিদমন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য উদঘাটনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন কর্মরত শিক্ষকরা।

বরখাস্তকৃত ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, দুদক, থানা , পূলিশ সুপার, জেলা দায়রা জজ আদালতসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে, হয়রানি মূলক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে সাময়িক বরখাস্ত করে রেখে ছিল। বরখাস্তকৃত ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিষয়ে প্রভাষক কিশোর কুমার সরকার জানান, যেসমস্ত অভিযোগ দিয়ে আমাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তার সবই মিথ্যা। নানা ভাবে আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। তবে এ বিষয়ে বরখাস্তকৃতইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের শিক্ষক ফাতেমা পারভীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

ওই কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুফিয়া বেগম জানান, এ বিষয়ে মাউশি থেকে কলেজের রেজুলেশনসহ আমাকে তলব করেছে। আমি কলেজে যেসকল কাগজপত্রগুলি পেয়েছি, সেগুলিই উপস্থাপন করেছি। এই চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা চলমান আছে। তবে মাউশি তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিবে। সেটা মন্ত্রণালয় ঠিক করবে।

মাউশির সহকারী পরিচালক (কলেজ-১) মুহাম্মদ সফিউল বশর জানান, বরাখাস্তকৃতরা তাদের মতো করে চাকরি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা তাদের মতো বিভিন্ন তথ্য বা ডকুমেন্ট দিয়ে আবেদন করছেন। সেগুলি যাচাই বাছাই করে ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে। যারা সংক্ষুদ্ধ হয় তাদের কথাও ম্যানেজমেন্ট শুনছে। তিনি আরো বলেন, এতোদিন যারা বৈষম্য করেছে এখন তারাও বলছে বৈষম্যের শিকার। আমরা এখানে বসে প্রতিনিয়ত এগুলো দেখছি বা শুনছি।