Dhaka ০৫:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পর্যটনের হাতছানি দিচ্ছে ‘তারুয়া’ সমুদ্র সৈকত

পর্যটনের অপার সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে তারুয়া সমুদ্র সৈকত। যার একদিকে সবুজ বন, অন্যদিকে সৈকত পাড়ে বালুর ঝলকানি আর লাল কাঁকড়ার বিচরণসহ জীব বৈচিত্রের সমারোহে ভরপুর এ চরটি যেন প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। প্রায় ৪ দশক আগে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা এই চরের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য প্রতিনিয়ত ভ্রমণ পিপাসুদের মুগ্ধ করছে। বলছিলাম ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সাগর মোহনায় অবস্থিত তারুয়া সমুদ্র সৈকতের কথা। এই চরটি প্রকৃতির সুনিপুণ নিখুঁত এক অপরূপ সৃষ্টি।

জানা গেছে, জেলা শহর থেকে প্রথমে চরফ্যাশনে যেতে হবে। যার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। এরপর চরফ্যাশন উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়কপথ এবং ১৫ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিলেই দেখা মিলবে তারুয়া চরের। প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘের এই চরটি দেখতে অবিকল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতই। সৈকতের একপাশে বঙ্গোপসাগর আর অন্য পাশে বিস্তীর্ণ চারণভূমি, যা শেষ হয়েছে সৈকত ঘেরা ম্যানগ্রোভ বনে গিয়ে। এই চরের মোহনীয় রূপ সকলকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

স্থানীয় জেলে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ বছর আগে বঙ্গোপসাগরের বুকচিরে জেগে ওঠে এই চর। ওই চর মোহনায় একসময়ে শত শত তারুয়া নামের এক প্রকার মাছ ধরা পড়ত জেলেদের জালে। তাই সেই মাছের কারণেই এ চরের নামকরণ করা হয়েছে তারুয়া। শীত মৌসূমে এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো পর্যটক ঘুরতে আসে। অধিকাংশ পর্যটক তাঁবু টানিয়ে রাত্রী যাপন করে থাকেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।

তারুয়া সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা লিটন, আরিফ ও শাহাবুদ্দিন বলেন, তারুয়া সৈকত প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য চমৎকার জায়গা। এখানে অপার সৌন্দর্যের মাঝে হারিয়ে যেতে যে কারো ইচ্ছা করবে। এটা দেখতে অবিকল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতই।

ঘুরতে আসা পর্যটক মামুন বলেন, আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিগত বছরে কক্সবাজার, কুয়াকাটা গিয়েছি। সেখানকার থেকে কোনো অংশে কম না তারুয়া সমুদ্র সৈকত। পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং যাতায়াত ব্যবস্থা যদি সহজ করা যায়, তাহলে এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে দিতে পারে। সরকার যদি এখানে পৃষ্ঠপোষকতা করে তাহলে বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম পর্যটন স্পটে পরিনত হবে।

জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, পুরো দ্বীপজেলাতেই পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো মনপুরা, ঢালচরের তারুয়া সৈকত ও চর কুকরি-মুকরি। এই জায়গাগুলোতে পর্যটকদের জন্য নিরাপদ ও সহজ যোগাযোগব্যবস্থার জন্য পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে তারুয়া সমুদ্র সৈকতের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব, যাতে পর্যটকরা এখানে নির্বিঘেœ যাতায়াত ও থাকতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

পর্যটনের হাতছানি দিচ্ছে ‘তারুয়া’ সমুদ্র সৈকত

জন দেখেছেন : ০২:৩৮:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পর্যটনের অপার সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে তারুয়া সমুদ্র সৈকত। যার একদিকে সবুজ বন, অন্যদিকে সৈকত পাড়ে বালুর ঝলকানি আর লাল কাঁকড়ার বিচরণসহ জীব বৈচিত্রের সমারোহে ভরপুর এ চরটি যেন প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। প্রায় ৪ দশক আগে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা এই চরের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য প্রতিনিয়ত ভ্রমণ পিপাসুদের মুগ্ধ করছে। বলছিলাম ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সাগর মোহনায় অবস্থিত তারুয়া সমুদ্র সৈকতের কথা। এই চরটি প্রকৃতির সুনিপুণ নিখুঁত এক অপরূপ সৃষ্টি।

জানা গেছে, জেলা শহর থেকে প্রথমে চরফ্যাশনে যেতে হবে। যার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। এরপর চরফ্যাশন উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়কপথ এবং ১৫ কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিলেই দেখা মিলবে তারুয়া চরের। প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘের এই চরটি দেখতে অবিকল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতই। সৈকতের একপাশে বঙ্গোপসাগর আর অন্য পাশে বিস্তীর্ণ চারণভূমি, যা শেষ হয়েছে সৈকত ঘেরা ম্যানগ্রোভ বনে গিয়ে। এই চরের মোহনীয় রূপ সকলকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

স্থানীয় জেলে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ বছর আগে বঙ্গোপসাগরের বুকচিরে জেগে ওঠে এই চর। ওই চর মোহনায় একসময়ে শত শত তারুয়া নামের এক প্রকার মাছ ধরা পড়ত জেলেদের জালে। তাই সেই মাছের কারণেই এ চরের নামকরণ করা হয়েছে তারুয়া। শীত মৌসূমে এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো পর্যটক ঘুরতে আসে। অধিকাংশ পর্যটক তাঁবু টানিয়ে রাত্রী যাপন করে থাকেন। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।

তারুয়া সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা লিটন, আরিফ ও শাহাবুদ্দিন বলেন, তারুয়া সৈকত প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য চমৎকার জায়গা। এখানে অপার সৌন্দর্যের মাঝে হারিয়ে যেতে যে কারো ইচ্ছা করবে। এটা দেখতে অবিকল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতই।

ঘুরতে আসা পর্যটক মামুন বলেন, আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিগত বছরে কক্সবাজার, কুয়াকাটা গিয়েছি। সেখানকার থেকে কোনো অংশে কম না তারুয়া সমুদ্র সৈকত। পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং যাতায়াত ব্যবস্থা যদি সহজ করা যায়, তাহলে এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে দিতে পারে। সরকার যদি এখানে পৃষ্ঠপোষকতা করে তাহলে বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম পর্যটন স্পটে পরিনত হবে।

জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, পুরো দ্বীপজেলাতেই পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো মনপুরা, ঢালচরের তারুয়া সৈকত ও চর কুকরি-মুকরি। এই জায়গাগুলোতে পর্যটকদের জন্য নিরাপদ ও সহজ যোগাযোগব্যবস্থার জন্য পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে তারুয়া সমুদ্র সৈকতের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব, যাতে পর্যটকরা এখানে নির্বিঘেœ যাতায়াত ও থাকতে পারে।