সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মোস্তফা জাকির হাসান( ডিএস) যোগদানের পরপরই রেলকোচ তৈরি বৃদ্ধি পেয়েছে, একই সাথে বন্ধ হয়েছে দুর্নীতি অনিয়ম ও যন্ত্রাংশ চুরি। ১০ ফেব্রুয়ারী সকালে কারখানায় কর্মরত একাধিক ঠিকাদার ও শ্রমিকদের সাথে আলাপকালে এমনই তথ্য পাওয়া যায়।
জানা যায় দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে কারখানাটি স্হপিত হয় নীলফামারীর সৈয়দপুরে। ১৮৭০ সালে স্হাপিত এই কারখানায় নির্মিত রেলওয়ে কোচ দেশের যাত্রীসেবার মান বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিগত ১৬ টা বছর জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে এই কারখানায় কোন কিছুরই উন্নয়ন লক্ষ্য করা যায়নি। আধুনিকতার নামে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ মিললেও সিকি ভাগও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি এই কারখানায়। অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকার পরেও বছরে একটি কোচও নির্মাণ হয়নি। মেরামত হয়নি কোন ট্রেনের বগি। কারখানা জুড়ে সিসি ক্যামেরা থাকার পরও বন্ধ হয়নি লোহার যন্ত্রাংশ চুরি। সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থে কারখানার উন্নয়ন না হলেও লোহা চোরদের মদদ দিয়ে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন রেলওয়ে শ্রমিক লীগ নেতা মোখছেদুল মোমিন সহ অনেকে। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর এ কারখানায় মোস্তফা জাকির হাসান যোগদানের পর থেকে প্রায় প্রতি মাসেই তৈরি হচ্ছে আধুনিক কোচের শতশত বগি। গত মাসে এই কারখানায় মেট্রোরেলের মত আধুনিক কোচ নির্মাণ করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে দেশ জুড়ে। যা জয়দেবপুর থেকে ঢাকা রুটে চলাচল করছে। একই সাথে ডিএস মোস্তফা জাকির হাসান এর নির্দেশে কারখানা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যার কারনে ৫ আগষ্টের পর থেকে কোন প্রকার চুরির ঘটনা ঘটেনি।
কারখানা সূত্রে জানা যায়।সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় বিভিন্ন ইউনিটে,বিভিন্ন ধরনের কাজ করা হয় কোচ মেরামতের।এই কারখানার একাধিক সপে যন্ত্রাংশ সহ বিভিন্ন ধরনের মেশিন তৈরি করা হয় । যা রেলকোচ, ওয়াগন ও ইঞ্জিনে ব্যবহার করা হয়।
রেলওয়ে কারখানায় কর্মরত একাধিক শ্রমিক জানান,সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় বিভাগীয় তত্বাবধায়ক( ডিএস) যোগদানের পর থেকে কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাজে ফাঁকি দিতে পাছেন না। যার ফলে গতমাসের শুরু’র দিকে মেট্রোরেল এর মতো আধুনিক কোচ নির্মাণ করা হয়েছে। নুতুন আংগিকে মেরামত হয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক বগি। এছাড়া কারখানার লোহা চুরি প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে। আগামী ২/৪ বছর যদি এই ডিএস সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় কর্মরত থাকেন তাহলে এখানে রেলওয়ের বগির পাশাপাশি অনেক কিছুই তৈরি করা সম্ভব হবে বলে জানান শ্রমিকরা ।
কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান বলেন, আমি সরকারের একজন নগন্য কর্মচারী। আমাকে এই কারখানায় দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছেন বর্তমান সরকার। সরকারের বদনাম হয় এমন কোন কাজ আমার দ্বারা সম্ভব নয়। তিনি বলেন আগামী ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় সঠিক সময়ে আউটটান দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। সেই সাথে কারখানার লোহা চুরিসহ অনিয়ম দূর্নীতির বিরুদ্ধে আমার বিন্দু মাত্র ছাড় নেই। কারখানার উৎপাদন বাড়াতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গতদিনে যেসব ঠিকাদার যন্ত্রাংশ সরবারাহে দুর্নীতি করেছে তাদের কোন ধরনের কন্ট্রাক না দিয়ে ন্যায় পরায়ন ঠিকাদারদের যন্ত্রাংশ সরবরাহে কন্ট্রাক দেয়া হয়েছে। চোর প্রকৃতির কোন অস্থায়ী শ্রমিককে এই কারখানায় রাখা হয়নি এবং হবে না বলে জানান তিনি। সরকারের অর্থ অপচয় না করে এ কারখানার উন্নয়নের স্বার্থে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ারও কথা বলেন তিনি।