বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ইতিহাস স্বাক্ষী এ দেশে বারবার গণতন্ত্র হরণ হয়েছে আর সেই গণতন্ত্র বারবার পূণ:প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি, শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়া। জুলাই-আগষ্টের আন্দোলন এই কয়দিনে হয় নাই। বাংলাদেশের জনগণ কি অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কি প্রচন্ড চাপের মুখে জীবন ধারণ করতে হয়েছে। গুম-খুন হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জুলাই-আগষ্টের পরির্তণ হলো। আমাদের দাবী ছিল স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদের পতন করে গণতন্ত্র পূণ:প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র পূণ:প্রতিষ্ঠা হয় নাই। যারা দায়িত্বে আছেন তারা জোর করে সেখানে বসেন নাই। আমরা তাদেরকে সেখানে বসিয়েছি মানুষের আকাঙ্খা পুরণের জন্য। মানুষ যাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পার, যাতে ন্যায্যমূল্যে দ্রব্যাদি কিনতে পারে। আমার কৃষক যাতে তার ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় এবং অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যেন নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
তিনি বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সিরাজগঞ্জ শহরের ইসলামিয়া সরকারি কলেজ মাছে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, আমরা চাই যারা এত বছর ধরে মানুষকে খুন করেছে, অত্যাচার করেছে তাদের দ্রুত বিচার করতে হবে। তাদের রাজনীতি করার অধিকার আর কখনই আসবে। কিন্তু তার জন্য নির্বাচন অপেক্ষা করার কিছু নাই। যেই সরকারই আসুক, সবারই একই দায়িত্ব সেটা হলো ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার করতে হবে। যারা বলেন বিএনপি সংস্কার চায় না তারা মিথ্যা বলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ ঘোষণা একটি সংস্কার পস্তাব। তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন-সেটাও সংস্কার প্রস্তাব। দাবিনামা না, এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি। যারা নতুন নতুন দাবী করে মনে করছেন যে নতুন কিছু দাবী করছেন সেটা ভুল। উচ্চকক্ষের দাবী আমরা বহু আগেই করেছি, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার কথা অনেক আগেই বলেছি।
বাংলাদেশের মানুষ বারবার জীবন দিয়েছে পরিবর্তণের জন্য। কিন্তু পরিবর্তণ হয় নাই। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছে মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন। যে গণতন্ত্রের জন্য যে সাম্যের জন্য যে মানবিক মর্যাদার জন্য জীবন দিয়েছিলেন আমরা সেটা দিতে পারি নাই। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আইন করে দেশে একদলীয় স্বৈরশাসন কায়েম করা হয়েছিল।
জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইদুর রহমান বাচ্চুর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলিম।
সমাবেশে জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে বিএনপি ও তার সহযোগি সংগঠসের নেতাকর্মিরা মিচিল নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে সাবেক সংসদ সদস্য এম আকবর আলী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মজিবর রহমান লেবু, আজিজুর রহমান দুলাল, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, ভিপি অমর কৃষ্ণ দাস, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেত্রী কন্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাপাসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।