Dhaka ১২:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালিয়াকৈরে আক্রোসে ভবনের সামনে টিনের বেড়া, অনিরাপত্তায় শিক্ষার্থীরাও

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আক্রোসে তিন তলা ভবনের সামনে টিনের বেড়া দিয়ে একটি এজেন্টে ব্যাংকিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ একটি পরিবারকে অবরোদ্ধের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। আক্রোসের জেরে বেড়া দেয়ায় স্কুল মাঠের ভিতরেই পাঁকা সড়কটি থাকায় পূর্ণরায় অনিরাপত্তায় থাকবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও।এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী পরিবার ও স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯৭৩ সালে কালিয়াকৈর উপজেলার বেনুপুর এলাকায় বেনুপুর বজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত করা হয়। প্রায় ১ একর ৩৫ সতাংশ সরকারি জমি লিজ নিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

কিন্তু ওই স্কুলের উপর দিয়ে বয়ে গেছে দেওয়ার বাজার-বেনুপুর আঞ্চলিক সড়ক। ওই সড়ক দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করায় দুর্ঘটনা জনিত অনিরাপত্তায় ভুগছিলেন স্কুলটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীরাও। কিন্তু ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর বিভিন্ন সময় সড়কটি সরানোর দাবী জানিয়ে আসছিলেন। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদের হস্তক্ষেপে স্কুলের পূর্ব পাশ দিয়ে সড়কটি পাঁকা করে উপজেলা এলজিইডি অফিস। সড়কের এক পাশে স্কুল ও তার মাঠ এবং অপর পাশে এলাকাবাসীর রেকর্ডীয় জমি ও বাড়িঘর। এর মধ্যে সড়কের অপর পাশে পার্শ্ববর্তী

সাভারের আশুলিয়া থানার নৈহাটি এলাকার গোলাম মোস্তফা শাকিলের তিন তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। তিনি গত ১৫ বছর আগে ওই ভবনটি করেন। বর্তমানে ওই ভবনের ২য় তলায় এমপিবি নৈহাটি এবিসি এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম ও নিচতলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন মোস্তফা। কিন্তু আক্রোসের জেরে সড়কের অপর পাশে তার তিন তলা ভবনের সামনে শুধুমাত্র ২০ থেকে ২২ ফুট টিনের বেড়া দিয়ে দেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ। সপ্তাহখানেক আগে স্থানীয় ঢালজোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আফসার উদ্দিন বাবুলের নিদের্শনায় ওই প্রধান শিক্ষক ১০/১২ জন লোক নিয়ে সড়কের অপর পাশে মাত্র ৩/৪ ফুটের মধ্যে ওই টিনের বেড়াটি দেন।

শুধুমাত্র মোস্তফার ভবনের সামনে বেড়া দিয়ে এজেন্টে ব্যাংকিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ তার পরিবারকে অবরোদ্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সড়কের অপর পাশে বেড়া দেওয়ার পায়তারায় স্কুলের ভিতরেই থেকে যাচ্ছে ওই সড়কটি। ফলে আবারো ওই সড়কে দুর্ঘটনাজনিত অনিরাপত্তায় পড়বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। অপরদিকে গত ৫ জুলাইয়ের পর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোনের মুখে ওই প্রধান শিক্ষক পালিয়ে যান। পরে তাকে ওই স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হলে গত ২৪ নভেম্বর তিনি আবারো স্কুলে যোগদান করেন। আক্রোসে তিন তলা ভবনের সামনে টিনের বেড়া দিয়ে আবারো বিতর্কিত হন প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ। প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় বিএনপির নেতা মিলেমিশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সেখানে দোকান বরাদ্দের পায়তারা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ওই ভবনের মালিক গোলাম মোস্তফা শাকিল বলেন, সড়কের এ পাশে মাত্র তিন ফুট স্কুলের জমি হলেও সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। তারপরও সরকারী সড়কের এ পাশে আক্রোসের জেরে তারা এভাবে টিনের বেড়া দিয়েছেন।

অভিযুক্ত ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ও মাঠটি বড় করতেই সড়কটি সরিয়ে এক পাশে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সড়কের ওই পাশেও স্কুলের কিছু জমি আছে, সে সীমানা দিয়ে বেড়া দিচ্ছি। তবে দোকান বরাদ্দের কথাটি অস্বীকার করেন তিনি।

অপর অভিযুক্ত স্থানীয় ঢালজোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আফসার উদ্দিন বাবুল জানান, স্কুলের ওই জমিটুকু তাকে (মোস্তফা) খেতে দিবো কেন? তাই স্কুল সেখানে বেড়া দিচ্ছে। তবে দোকান বরাদ্দের পায়তারার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহম্মেদ জানান, এটা সরকারি সড়ক। এ সড়কের ওই পাশে এভাবে বেড়া দিলে এটা সঠিক হয়নি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

কালিয়াকৈরে আক্রোসে ভবনের সামনে টিনের বেড়া, অনিরাপত্তায় শিক্ষার্থীরাও

Update Time : ০৮:০৮:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আক্রোসে তিন তলা ভবনের সামনে টিনের বেড়া দিয়ে একটি এজেন্টে ব্যাংকিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ একটি পরিবারকে অবরোদ্ধের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। আক্রোসের জেরে বেড়া দেয়ায় স্কুল মাঠের ভিতরেই পাঁকা সড়কটি থাকায় পূর্ণরায় অনিরাপত্তায় থাকবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও।এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী পরিবার ও স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯৭৩ সালে কালিয়াকৈর উপজেলার বেনুপুর এলাকায় বেনুপুর বজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত করা হয়। প্রায় ১ একর ৩৫ সতাংশ সরকারি জমি লিজ নিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

কিন্তু ওই স্কুলের উপর দিয়ে বয়ে গেছে দেওয়ার বাজার-বেনুপুর আঞ্চলিক সড়ক। ওই সড়ক দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করায় দুর্ঘটনা জনিত অনিরাপত্তায় ভুগছিলেন স্কুলটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীরাও। কিন্তু ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর বিভিন্ন সময় সড়কটি সরানোর দাবী জানিয়ে আসছিলেন। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদের হস্তক্ষেপে স্কুলের পূর্ব পাশ দিয়ে সড়কটি পাঁকা করে উপজেলা এলজিইডি অফিস। সড়কের এক পাশে স্কুল ও তার মাঠ এবং অপর পাশে এলাকাবাসীর রেকর্ডীয় জমি ও বাড়িঘর। এর মধ্যে সড়কের অপর পাশে পার্শ্ববর্তী

সাভারের আশুলিয়া থানার নৈহাটি এলাকার গোলাম মোস্তফা শাকিলের তিন তলা বিশিষ্ট একটি ভবন। তিনি গত ১৫ বছর আগে ওই ভবনটি করেন। বর্তমানে ওই ভবনের ২য় তলায় এমপিবি নৈহাটি এবিসি এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম ও নিচতলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন মোস্তফা। কিন্তু আক্রোসের জেরে সড়কের অপর পাশে তার তিন তলা ভবনের সামনে শুধুমাত্র ২০ থেকে ২২ ফুট টিনের বেড়া দিয়ে দেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ। সপ্তাহখানেক আগে স্থানীয় ঢালজোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আফসার উদ্দিন বাবুলের নিদের্শনায় ওই প্রধান শিক্ষক ১০/১২ জন লোক নিয়ে সড়কের অপর পাশে মাত্র ৩/৪ ফুটের মধ্যে ওই টিনের বেড়াটি দেন।

শুধুমাত্র মোস্তফার ভবনের সামনে বেড়া দিয়ে এজেন্টে ব্যাংকিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ তার পরিবারকে অবরোদ্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সড়কের অপর পাশে বেড়া দেওয়ার পায়তারায় স্কুলের ভিতরেই থেকে যাচ্ছে ওই সড়কটি। ফলে আবারো ওই সড়কে দুর্ঘটনাজনিত অনিরাপত্তায় পড়বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। অপরদিকে গত ৫ জুলাইয়ের পর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোনের মুখে ওই প্রধান শিক্ষক পালিয়ে যান। পরে তাকে ওই স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হলে গত ২৪ নভেম্বর তিনি আবারো স্কুলে যোগদান করেন। আক্রোসে তিন তলা ভবনের সামনে টিনের বেড়া দিয়ে আবারো বিতর্কিত হন প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ। প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় বিএনপির নেতা মিলেমিশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সেখানে দোকান বরাদ্দের পায়তারা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

ওই ভবনের মালিক গোলাম মোস্তফা শাকিল বলেন, সড়কের এ পাশে মাত্র তিন ফুট স্কুলের জমি হলেও সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। তারপরও সরকারী সড়কের এ পাশে আক্রোসের জেরে তারা এভাবে টিনের বেড়া দিয়েছেন।

অভিযুক্ত ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ও মাঠটি বড় করতেই সড়কটি সরিয়ে এক পাশে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সড়কের ওই পাশেও স্কুলের কিছু জমি আছে, সে সীমানা দিয়ে বেড়া দিচ্ছি। তবে দোকান বরাদ্দের কথাটি অস্বীকার করেন তিনি।

অপর অভিযুক্ত স্থানীয় ঢালজোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আফসার উদ্দিন বাবুল জানান, স্কুলের ওই জমিটুকু তাকে (মোস্তফা) খেতে দিবো কেন? তাই স্কুল সেখানে বেড়া দিচ্ছে। তবে দোকান বরাদ্দের পায়তারার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহম্মেদ জানান, এটা সরকারি সড়ক। এ সড়কের ওই পাশে এভাবে বেড়া দিলে এটা সঠিক হয়নি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।