Dhaka ০৩:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে গডফাদার আজাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সিলেট নগরীর কোতোয়ালী থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আগ্নেয়াস্ত্রের যোগানদাতা সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই গডফাদার সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের মৃত বদ মিয়ার ছেলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনার সাড়ে ৬মাসের মাথায় আদালতের নির্দেশে এই মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। দায়েরকৃত মামলাটিতে আগ্নেয়াস্ত্রের যোগানদাতা সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদ (তোতলা আজাদ) ছাড়াও সাবেক ৪ জন মন্ত্রী-এমপি ও মেয়রসহ ৪৭৭জনকে আসামী করা হয়েছে। আসামীরা সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আওয়ামীলীগ নেতা ও সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদ আওয়ামীলীগ সরকারের শুরু থেকেই দলীয় প্রভাব খাটিয়ে একাধিক মামলার আসামীদের নিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় সিন্ডিকেড তৈরি করে। এরপরে সরকারের কোটিকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ কয়লা, চুনাপাথর, ফুছকা, চিনি, কসমেটিকস, গরু, মহিষ ও মাদকদ্রব্যসহ অস্ত্র পাচাঁর করাসহ পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবিসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর নাম ভাংগিয়ে তার সোর্সদের দিয়ে চাঁদা উত্তোলন করে অল্প দিনের মধ্যে হয়ে যায় কোটিপতি। এরপর তাহিরপুরের প্রভাবশালী দলীয় নেতাদের নিয়ে সীমান্ত নদী জাদুকাটা, মাহারাম, কলাগাঁও ও বিশ^ম্ভরপুরের চলতিসহ আরো একাধিক নদীর তীর কেটে ও শতশত গভীর কোয়ারী (মৃত্যুকূপ) তৈরি করে দিনরাত অবৈধ ভাবে বালি ও পাথর বিক্রি করতে থাকে।

গডফাদার তোতলা আজাদ ও তার চাঁদা উত্তোলনকারী সোর্স বাহিনীর নেতৃত্বে নদীর তীর কেটে বালি ও পাথর উত্তোলন নিয়ে একাধিক সংঘর্ষে ও সীমান্ত চোরাচালান করতে গিয়ে চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে, বিএসএফের গুলিতে ও তাড়া খেয়ে নদীতে ডুবে এপর্যন্ত শতাধিক শিশু, কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু গডফাদার আজাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরং এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় একাধিক সাংবাদিককে শারীরিক নির্যাতন করাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে করা হয়েছে হয়রানী। এমতাবস্থায় গত ৬বছর আগে স্থানীয় জনতা ইয়াবার চালানসহ মাতাল অবস্থায় গডফাদার আজাদকে গণধৌলাই দিয়ে তাহিরপুর থানায় সোর্পদ করে। কিন্তু পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে এই ঘটনাটি এড়ানোর জন্য মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।

এঘটনায় ভোক্তভোগী জনসাধারণ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করে। এছাড়া গডফাদার আজাদের ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপুর সীমান্তের টেকেরঘাট মসজিদের তালা ভেঙ্গে ইমামের নতুন মোটর সাইকেল চুরি ভারতে পালানোর সময় বীরেন্দ্রনগর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা গ্রেফতার করে এবং থানায় মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠায়। কিন্তু সেই মামলার বিচার আদালতে শুরু হওয়ার আগেই মামলার বাদীকে হুমকি-দমকি দিয়ে, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আপোষনামা নেয়। তবে কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপুর বিরুদ্ধে তার বারার মতো নারী কেলেংকারীসহ আরো অনেক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে শিপু নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সিলেট এমসি কলেজ শাখার সহ-সভাপতি পদে রয়েছে। এদিকে গডফাদার তোতলা আজাদ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় তার স্ত্রী মামাতো বোন মনোয়ারা বেগমকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষিকা পদে নিয়োগ এনে দেয়।

কিন্তু স্বামীর প্রভাব দেখিয়ে বছরের পর বছর স্কুলে না গিয়েই বেতন-ভাতা উত্তোলন করছে স্ত্রী মনোয়ারা। আওয়ামীলীগ সরকারে পতন হলেও স্বামী-স্ত্রীর অবৈধ ক্ষমতার পতন হয়নি। গডফাদার তোতলা আজাদের স্ত্রী সহকারি শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম কাগজেপত্রে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলেও বর্তমানে অবস্থান করছে সিলেটে। এই অনিয়মের কারণে শিক্ষিকা মনোয়ারাকে শোকজ করে তার স্বামীর তোপের মুখে পড়েছিলেন উপজেলা প্রাথমিক সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা। কারণ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সহযোগীতায় শিক্ষিকা মনোয়ারা স্কুলে না এসে শুধু ছুটির আবেদন দাখিল করে তার দায়িত্ব পালন করছে বছরের পর বছর। তার এই অবৈধ ছুটির প্রভাব ওই বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের মাঝে পড়ার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্টানটির শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হতে দেখে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে- গত ৩রা ফেব্রুয়ারী সিলেট জেলা যুবদলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও মোগলা বাজার থানার মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজিব আহমদ বাদী হয়ে, ১৯০৮ইং সনের অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ তৎসহ ৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৪ দন্ডবিধির ধারায় মামলাটি দায়ের করেছেন। ওই মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (৫৫) কে প্রধান করে, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সিলেট ৩ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট ৩ আসনের সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য সুভাস দাস, ইফজাল আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা ও সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদসহ ৭৭জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৪শ জনকে আসামী করা হয়।

এব্যাপারে মামলা সূত্রে আরো জানা গেছে- ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট বিকাল ৪টার দিকে সিলেট নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এক দফা ও ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন চলাকালীন সময় এই মামলার বাদী সাজিব আহমদ ও অংশ নেন। ওই সময় নগরীর রিকাবী বাজার থেকে মিছিল নিয়ে একদল ছাত্র চৌহাট্টায় অবস্থানরত বাদীর সমাবেশ স্থলে আসে। তখন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সীমান্ত গডফাদার তোতলা আজাদ ও দায়েরকৃত মামলার আসামীরা মামলার বাদীসহ ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। ফলে বাদী সাজিব আহমদসহ আরো অনেকেই গুরুতর আহত হয়। এঘটনার প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৯ই জানুয়ারী আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন সাজিব আহমদ। আদালত তার অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক মামলাটি রেকর্ড করতে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে গডফাদার আজাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

Update Time : ০৫:৩২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সিলেট নগরীর কোতোয়ালী থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আগ্নেয়াস্ত্রের যোগানদাতা সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই গডফাদার সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের মৃত বদ মিয়ার ছেলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনার সাড়ে ৬মাসের মাথায় আদালতের নির্দেশে এই মামলাটি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। দায়েরকৃত মামলাটিতে আগ্নেয়াস্ত্রের যোগানদাতা সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদ (তোতলা আজাদ) ছাড়াও সাবেক ৪ জন মন্ত্রী-এমপি ও মেয়রসহ ৪৭৭জনকে আসামী করা হয়েছে। আসামীরা সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আওয়ামীলীগ নেতা ও সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদ আওয়ামীলীগ সরকারের শুরু থেকেই দলীয় প্রভাব খাটিয়ে একাধিক মামলার আসামীদের নিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় সিন্ডিকেড তৈরি করে। এরপরে সরকারের কোটিকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ কয়লা, চুনাপাথর, ফুছকা, চিনি, কসমেটিকস, গরু, মহিষ ও মাদকদ্রব্যসহ অস্ত্র পাচাঁর করাসহ পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবিসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর নাম ভাংগিয়ে তার সোর্সদের দিয়ে চাঁদা উত্তোলন করে অল্প দিনের মধ্যে হয়ে যায় কোটিপতি। এরপর তাহিরপুরের প্রভাবশালী দলীয় নেতাদের নিয়ে সীমান্ত নদী জাদুকাটা, মাহারাম, কলাগাঁও ও বিশ^ম্ভরপুরের চলতিসহ আরো একাধিক নদীর তীর কেটে ও শতশত গভীর কোয়ারী (মৃত্যুকূপ) তৈরি করে দিনরাত অবৈধ ভাবে বালি ও পাথর বিক্রি করতে থাকে।

গডফাদার তোতলা আজাদ ও তার চাঁদা উত্তোলনকারী সোর্স বাহিনীর নেতৃত্বে নদীর তীর কেটে বালি ও পাথর উত্তোলন নিয়ে একাধিক সংঘর্ষে ও সীমান্ত চোরাচালান করতে গিয়ে চোরাই কয়লার গুহায় মাটি চাপা পড়ে, বিএসএফের গুলিতে ও তাড়া খেয়ে নদীতে ডুবে এপর্যন্ত শতাধিক শিশু, কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু গডফাদার আজাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরং এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় একাধিক সাংবাদিককে শারীরিক নির্যাতন করাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে করা হয়েছে হয়রানী। এমতাবস্থায় গত ৬বছর আগে স্থানীয় জনতা ইয়াবার চালানসহ মাতাল অবস্থায় গডফাদার আজাদকে গণধৌলাই দিয়ে তাহিরপুর থানায় সোর্পদ করে। কিন্তু পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে এই ঘটনাটি এড়ানোর জন্য মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।

এঘটনায় ভোক্তভোগী জনসাধারণ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করে। এছাড়া গডফাদার আজাদের ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপুর সীমান্তের টেকেরঘাট মসজিদের তালা ভেঙ্গে ইমামের নতুন মোটর সাইকেল চুরি ভারতে পালানোর সময় বীরেন্দ্রনগর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা গ্রেফতার করে এবং থানায় মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠায়। কিন্তু সেই মামলার বিচার আদালতে শুরু হওয়ার আগেই মামলার বাদীকে হুমকি-দমকি দিয়ে, দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আপোষনামা নেয়। তবে কিশোর গ্যাং লিডার শিহাব সারোয়ার শিপুর বিরুদ্ধে তার বারার মতো নারী কেলেংকারীসহ আরো অনেক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে শিপু নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সিলেট এমসি কলেজ শাখার সহ-সভাপতি পদে রয়েছে। এদিকে গডফাদার তোতলা আজাদ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় তার স্ত্রী মামাতো বোন মনোয়ারা বেগমকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষিকা পদে নিয়োগ এনে দেয়।

কিন্তু স্বামীর প্রভাব দেখিয়ে বছরের পর বছর স্কুলে না গিয়েই বেতন-ভাতা উত্তোলন করছে স্ত্রী মনোয়ারা। আওয়ামীলীগ সরকারে পতন হলেও স্বামী-স্ত্রীর অবৈধ ক্ষমতার পতন হয়নি। গডফাদার তোতলা আজাদের স্ত্রী সহকারি শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম কাগজেপত্রে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলেও বর্তমানে অবস্থান করছে সিলেটে। এই অনিয়মের কারণে শিক্ষিকা মনোয়ারাকে শোকজ করে তার স্বামীর তোপের মুখে পড়েছিলেন উপজেলা প্রাথমিক সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা। কারণ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সহযোগীতায় শিক্ষিকা মনোয়ারা স্কুলে না এসে শুধু ছুটির আবেদন দাখিল করে তার দায়িত্ব পালন করছে বছরের পর বছর। তার এই অবৈধ ছুটির প্রভাব ওই বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের মাঝে পড়ার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্টানটির শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হতে দেখে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে- গত ৩রা ফেব্রুয়ারী সিলেট জেলা যুবদলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও মোগলা বাজার থানার মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজিব আহমদ বাদী হয়ে, ১৯০৮ইং সনের অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ তৎসহ ৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৪ দন্ডবিধির ধারায় মামলাটি দায়ের করেছেন। ওই মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (৫৫) কে প্রধান করে, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সিলেট ৩ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট ৩ আসনের সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য সুভাস দাস, ইফজাল আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা ও সীমান্ত গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদসহ ৭৭জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৪শ জনকে আসামী করা হয়।

এব্যাপারে মামলা সূত্রে আরো জানা গেছে- ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট বিকাল ৪টার দিকে সিলেট নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এক দফা ও ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন চলাকালীন সময় এই মামলার বাদী সাজিব আহমদ ও অংশ নেন। ওই সময় নগরীর রিকাবী বাজার থেকে মিছিল নিয়ে একদল ছাত্র চৌহাট্টায় অবস্থানরত বাদীর সমাবেশ স্থলে আসে। তখন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সীমান্ত গডফাদার তোতলা আজাদ ও দায়েরকৃত মামলার আসামীরা মামলার বাদীসহ ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। ফলে বাদী সাজিব আহমদসহ আরো অনেকেই গুরুতর আহত হয়। এঘটনার প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৯ই জানুয়ারী আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন সাজিব আহমদ। আদালত তার অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক মামলাটি রেকর্ড করতে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।