একটি সেতুর দাবীতে ৫৩টি বছর অপেক্ষা করেও রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের সীমান্তঘেষা ৫০ হাজার মানুষ। চরম দূর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ ৫০ মানুষ দেখার যেন কেউ নেই। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই সীমান্ত ঘেষা এলাকাটিতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা চর লাঠিয়ালডাঙ্গা ও আলগারচর গ্রামের মাঝ দিয়ে ভারত থেকে বয়ে যাওয়া জিঞ্জিরাম নদী। উপজেলা সদর হতে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা। গ্রামগুলো হচ্ছে-দক্ষিন আলগারচর, উত্তর আলগারচর, লাঠিয়ালডাঙ্গা, চরলাঠিয়ালডাঙ্গা, বাগানবাড়ী, বালিয়ামারী ও নয়াপাড়া। এ অঞ্চলের মানুষ গুলো জিঞ্জিরাম নদীর উপর দিয়ে পারাপারের জন্য একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বাঁশের সাঁকো। প্রতিবছর এঅঞ্চলের মানুষ গুলো দূর্ভোগ লাঘবে নিজস্ব অর্থে ও স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপারের ব্যবস্তা করে থাকেন।
প্রতিদিন কোমলমতি স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী, সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা,কৃষকসহ সকল পেশার মানুষ যোগাযোগ বিছিন্নতায় চরম দূর্ভোগে। সবচাইতে বড় কষ্ট হচ্ছে কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, বিভিন্ন মালামাল ও যানবাহনে নেয়ার সুযোগ না থাকায় বিপাকে পরেছে কৃষি উৎপাদনকারীরা।
অপরদিকে এঅঞ্চলের মানুষ গুলো সবসময়ই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষাকালে নৌকা ও শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হয়ে থাকে। সরেজমিনে দেখা যায় নৌকা কিংবা বাঁশের সাঁকো কোনটিও থাকে না এসময় কলাগাছের ভেলায় উঠে নদী পারাপার হয়ে থাকে। অপরদিকে মহাসড়কের সাথে সংযোগ রাস্তাটিরও বেহালদশা হওয়ায় যাতায়াতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। পাশাপাশি ওই আমলের কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিম উদ্দিন (৮৮), আক্ষেপ করে বলেন, দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও এঅঞ্চলে উন্নয়ন কি জিনিস দেখতে পারলাম না। কিন্তু আমাদের এই জিঞ্জিরাম নদের উপর একটি ব্রীজের দাবীতে বারবার আবেদন জানালেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই এলাকার বাসিন্দা আলহাজ্ব হাসেন আলী (৯০) বলেন, স্থানীয় ইউপি, উপজেলা পরিষদ ও সংসদ নির্বাচন আসলেই প্রার্থীরা রাস্তা, ব্রীজ, কালভার্ড, ¯ুইজগেটসহ নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রতি দেয়। কিন্তু যারা নির্বাচিত হন তারা পরবর্তী ৫ বছর তাদের আর দেখা পাওয়া যায় না। আমি এই নদীতে একটি ব্রীজের দাবী করছি।
পাহারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আছিয়া খাতুন বলেন, জিঞ্জিরাম নদীর উপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীসহ আমরা জীবনের ঝুকি নিয়ে পার হই। সরকারের কাছে একটি ব্রীজের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মনছুরুল কহ , জানান, ব্রীজের জন্য সকল কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে বরাদ্ধের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি আমি আমার স্বাধ্যমত দূর্ভোগ লাঘবে চেষ্টা করবো।