Dhaka ০৯:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাউড়গড়ে অবৈধ বাণিজ্য জমজমাট: ইঞ্জিনের নৌকাসহ ৩জন আটক

সুনামগঞ্জের লাউড়গড় সীমান্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে অবৈধ কয়লা, পাথর ও বালি বাণিজ্য। এই সীমান্তে চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজদের নেতৃত্বে অবৈধ ভাবে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করতে গিয়ে ভারতীয় খাসিয়াদের হাতে খুন হওয়াসহ বিএসএফের গুলিতে ও তাড়া খেয়ে নদীতে ডুবে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন লাখলাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। কিন্তু দেখার কেউ নাই।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) ভোর ৬টা থেকে জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাটা নদী ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোস্টের সামনে দিয়ে ভারত থেকে ৩-৪শ লোক দিয়ে ওপেন কয়লা ও পাথর পাচাঁর শুরু করে স্থানীয় চিহ্নিত প্রভাবশালী চোরাকারবারীরা। তারা সন্ধ্যায় পর্যন্ত শতাধিক ঠেলাগাড়ি বোঝাই করে পাচাঁরকৃত কয়েক হাজার মেঃটন পাথর ও ২০-৩০টা মোটর সাইকেল দিয়ে শতশত মেঃটন কয়লাসহ বিজিবি ক্যাম্পের ২শ গজ পিছন থেকে জাদুকাটা নদীর তীর কেটে ২০-৩০টা পিকআপ ও মাহিন্দ্র গাড়ি বোঝাই করে লাখলাখ ঘনফুট বালি পাচাঁর করে ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে ওপেন পরিবহণ করলেও কোন পদক্ষেপ নেয়না বিজিবি। এই সীমান্তের চোরাকারবারীরা সিন্ডিকেডে তৈরি করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রায় ১৫বছর যাবত ওপেন বাণিজ্য করছে। তাদের নেতৃত্বে সীমান্ত চোরাচালান করতে গিয়ে একদিকে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে খুন হওয়াসহ বিএসএফের তাড়া খেয়ে জাদুকাটা নদীতে ডুবে ও গুলিতে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিদিন লাখলাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তারপরও চিহ্নিত চোরাকারবারী ও সোর্স পরিচয়ধারী চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করাসহ তাদের কোটিকোটি টাকার অবৈধ অর্থ-সম্পদ উদ্ধারের নেই কোন অভিযান। এরফলে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বাণিজ্য দিনদিন শুধু বেড়েই চলেছে।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় এই সীমান্তের রাজারগাঁও, বিন্নাকুলী ও বড়টেক এলাকা দিয়ে জাদুকাটা নদীর তীর কেটে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের সময় অভিযান চালিয়ে ৩টি ইঞ্জির নৌকাসহ উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামের রাখাব উদ্দিন, কাঞ্চনপুর গ্রামের ফারুক মিয়া ও মাহতাবপুর গ্রামের আলেক শাহকে আটক করা হয়। এবং রাতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আটককৃত ৩জনকে ১৫দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে থানায় হস্থান্তর করেন। কিন্তু লাউড়গড় বাজার ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোস্ট এলাকার অবৈধ কয়লা, পাথর ও বালিসহ চোরাকারবারী ও সোর্স পরিচয়ধারীদের গ্রেফতারে কোন উদ্যোগ নেই। তবে ওই সব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করলে কোটিকোটি টাকার অবৈধ মালামাল জব্দ করাসহ সম্ভব হতো বলে জানাগেছে।

লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাট নদী থেকে নৌকাসহ ৩জনকে আটককের সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম সাংবাদিকদের জানান- এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

লাউড়গড়ে অবৈধ বাণিজ্য জমজমাট: ইঞ্জিনের নৌকাসহ ৩জন আটক

Update Time : ০৫:৪৭:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সুনামগঞ্জের লাউড়গড় সীমান্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে অবৈধ কয়লা, পাথর ও বালি বাণিজ্য। এই সীমান্তে চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজদের নেতৃত্বে অবৈধ ভাবে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করতে গিয়ে ভারতীয় খাসিয়াদের হাতে খুন হওয়াসহ বিএসএফের গুলিতে ও তাড়া খেয়ে নদীতে ডুবে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন লাখলাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। কিন্তু দেখার কেউ নাই।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) ভোর ৬টা থেকে জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাটা নদী ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোস্টের সামনে দিয়ে ভারত থেকে ৩-৪শ লোক দিয়ে ওপেন কয়লা ও পাথর পাচাঁর শুরু করে স্থানীয় চিহ্নিত প্রভাবশালী চোরাকারবারীরা। তারা সন্ধ্যায় পর্যন্ত শতাধিক ঠেলাগাড়ি বোঝাই করে পাচাঁরকৃত কয়েক হাজার মেঃটন পাথর ও ২০-৩০টা মোটর সাইকেল দিয়ে শতশত মেঃটন কয়লাসহ বিজিবি ক্যাম্পের ২শ গজ পিছন থেকে জাদুকাটা নদীর তীর কেটে ২০-৩০টা পিকআপ ও মাহিন্দ্র গাড়ি বোঝাই করে লাখলাখ ঘনফুট বালি পাচাঁর করে ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে ওপেন পরিবহণ করলেও কোন পদক্ষেপ নেয়না বিজিবি। এই সীমান্তের চোরাকারবারীরা সিন্ডিকেডে তৈরি করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রায় ১৫বছর যাবত ওপেন বাণিজ্য করছে। তাদের নেতৃত্বে সীমান্ত চোরাচালান করতে গিয়ে একদিকে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে খুন হওয়াসহ বিএসএফের তাড়া খেয়ে জাদুকাটা নদীতে ডুবে ও গুলিতে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিদিন লাখলাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তারপরও চিহ্নিত চোরাকারবারী ও সোর্স পরিচয়ধারী চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করাসহ তাদের কোটিকোটি টাকার অবৈধ অর্থ-সম্পদ উদ্ধারের নেই কোন অভিযান। এরফলে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বাণিজ্য দিনদিন শুধু বেড়েই চলেছে।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় এই সীমান্তের রাজারগাঁও, বিন্নাকুলী ও বড়টেক এলাকা দিয়ে জাদুকাটা নদীর তীর কেটে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের সময় অভিযান চালিয়ে ৩টি ইঞ্জির নৌকাসহ উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামের রাখাব উদ্দিন, কাঞ্চনপুর গ্রামের ফারুক মিয়া ও মাহতাবপুর গ্রামের আলেক শাহকে আটক করা হয়। এবং রাতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আটককৃত ৩জনকে ১৫দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে থানায় হস্থান্তর করেন। কিন্তু লাউড়গড় বাজার ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোস্ট এলাকার অবৈধ কয়লা, পাথর ও বালিসহ চোরাকারবারী ও সোর্স পরিচয়ধারীদের গ্রেফতারে কোন উদ্যোগ নেই। তবে ওই সব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করলে কোটিকোটি টাকার অবৈধ মালামাল জব্দ করাসহ সম্ভব হতো বলে জানাগেছে।

লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাট নদী থেকে নৌকাসহ ৩জনকে আটককের সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম সাংবাদিকদের জানান- এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।