Dhaka ০২:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাতকে একটি রাস্তার জন্য ৯ গ্রামের মানুষের দূর্ভোগ: মাটি ভরাট করে দিচ্ছেন প্রবাসী

সুনামগঞ্জের ছাতকে একটি রাস্তার জন্য ৯টি গ্রামের মানুষের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হেমন্তে পায়ে আর বর্ষায় সৌকা চলতে হচ্ছে তাদের। এ দূর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছেনা। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা যেন ঘুরছেনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিরা অনেক সময় আশ্বাস দিলেও কোনদিন বাস্তবায়িত হয়না। ফলে তারা উন্নয়ন বঞ্চিত রয়েই যাচ্ছেন।

জানা যায়, উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের কালারুকা পয়েন্ট থেকে রামপুর হয়ে তাজপুর পর্যন্ত একটি রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তার দুই পাশে দিয়ে বয়ে গেছে সুরমা নদী। নদীর ভাঙ্গনে একাধিক স্থানে রাস্তা প্রায় বিলিন। যে কারণে এ অঞ্চলের রামপুর, সাহেবেরগাঁও, শেখকান্দি, কঠালপুর, মালিপুর, করছা, পৈলনপুর, উজিরপুর, আজিদরপুর গ্রামের মানুষরা রয়েছেন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নে। হেমন্তে পায়ে আর বর্ষায় চলতে হয় নৌকা। এই অঞ্চলের স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ চরম দূর্ভোগে রয়েছন। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা হওয়ায় অসুস্থ হলে রোগিদের হাসপাতালে পৌঁছা মুশকিল। বিকল্প হিসেবে রায়সন্তোপুর গ্রামের পূর্বের পাকা রাস্তা থেকে রামপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটারের একটি কাঁচা রাস্তা বিদ্যমান। সম্প্রতি সরকারি অর্থায়ে এ রাস্তায় তিনটি ব্রিজ নির্মিত হলেও মাটি ভরাট কিংবা পাকা করণে সরকার এগিয়ে আসেনি।

এলাকার মানুষ চাঁদা তুলে নিজেরাই প্রায় সময় রাস্তার বিভিন্ন অংশে মাটি ভরাট করে আসছেন। প্রতি বছর বৃষ্টি ও বন্যায় কাঁচা রাস্তাটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। চলাচলে মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে নিজের এবং পরিবারের অর্থায়নে রায়সন্তোপুর থেকে রামপুর ইউসুফ আলী এতিমখানা এলজিইডি রাস্তা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটারে মাটি ভরাট কাজ করে যাচ্ছেন রামপুর গ্রামের সমাজসেবি, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোশাহিদ আলী। গত ২০ জানুয়ারি তিনি উপস্থিত থেকে মাটি ভরাট কাজের সূচনা করে চলে যান বিলেতে। সেদিন থেকে দীর্ঘ একমাস ব্যাপী এ জনবহুল রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ চলমান রয়েছে। সপ্তাহ খানেকের ভেতরে রাস্তার কাজ শেষ হবে। প্রবাসীর অর্থায়নে রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজে স্বেচ্ছায় শ্রম দিচ্ছেন এলাকাবাসী।

রামপুর গ্রামের মাওলানা শাহীন আলম, সিরাজ উদ্দিন, সুনাফর আলী, আবদুস সালাম, আবদুল  হান্নান, সামছুল হক, এখলাছুর রহমান ও নোমান আহমদ, করছা গ্রামের আজাদ মিয়া, আবুল কালাম, মুজিবুর রহমান, তাজ মিয়া, শেখকান্দি গ্রামের আলিম উদ্দিন, মাসুক মিয়া, কফিল মিয়াসহ স্থানীয় লোকজনরা জানান, গেল বছর ওই প্রবাসী ৫০ হাজার টাকার মাটি ভরাটের কাজ করে ‌দেয়। এ বছর রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগি হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী তাঁর কাছে আবেদন করি। এর প্রেক্ষিতে তিনি এবং তার পরিবারের উদ্যোগে পুরো রাস্তায় মাটি ভরাট করে দিচ্ছেন। বৃষ্টি বা বন্যায় রাস্তাটির ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। এ কারণে স্থায়ী ভাবে রাস্তাটি পাকা করণের আওতায় এনে দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগি এলাকাবাসী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ছাতকে একটি রাস্তার জন্য ৯ গ্রামের মানুষের দূর্ভোগ: মাটি ভরাট করে দিচ্ছেন প্রবাসী

Update Time : ০৩:০৫:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সুনামগঞ্জের ছাতকে একটি রাস্তার জন্য ৯টি গ্রামের মানুষের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হেমন্তে পায়ে আর বর্ষায় সৌকা চলতে হচ্ছে তাদের। এ দূর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছেনা। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা যেন ঘুরছেনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিরা অনেক সময় আশ্বাস দিলেও কোনদিন বাস্তবায়িত হয়না। ফলে তারা উন্নয়ন বঞ্চিত রয়েই যাচ্ছেন।

জানা যায়, উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের কালারুকা পয়েন্ট থেকে রামপুর হয়ে তাজপুর পর্যন্ত একটি রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তার দুই পাশে দিয়ে বয়ে গেছে সুরমা নদী। নদীর ভাঙ্গনে একাধিক স্থানে রাস্তা প্রায় বিলিন। যে কারণে এ অঞ্চলের রামপুর, সাহেবেরগাঁও, শেখকান্দি, কঠালপুর, মালিপুর, করছা, পৈলনপুর, উজিরপুর, আজিদরপুর গ্রামের মানুষরা রয়েছেন সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নে। হেমন্তে পায়ে আর বর্ষায় চলতে হয় নৌকা। এই অঞ্চলের স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ চরম দূর্ভোগে রয়েছন। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা হওয়ায় অসুস্থ হলে রোগিদের হাসপাতালে পৌঁছা মুশকিল। বিকল্প হিসেবে রায়সন্তোপুর গ্রামের পূর্বের পাকা রাস্তা থেকে রামপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটারের একটি কাঁচা রাস্তা বিদ্যমান। সম্প্রতি সরকারি অর্থায়ে এ রাস্তায় তিনটি ব্রিজ নির্মিত হলেও মাটি ভরাট কিংবা পাকা করণে সরকার এগিয়ে আসেনি।

এলাকার মানুষ চাঁদা তুলে নিজেরাই প্রায় সময় রাস্তার বিভিন্ন অংশে মাটি ভরাট করে আসছেন। প্রতি বছর বৃষ্টি ও বন্যায় কাঁচা রাস্তাটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। চলাচলে মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে নিজের এবং পরিবারের অর্থায়নে রায়সন্তোপুর থেকে রামপুর ইউসুফ আলী এতিমখানা এলজিইডি রাস্তা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটারে মাটি ভরাট কাজ করে যাচ্ছেন রামপুর গ্রামের সমাজসেবি, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোশাহিদ আলী। গত ২০ জানুয়ারি তিনি উপস্থিত থেকে মাটি ভরাট কাজের সূচনা করে চলে যান বিলেতে। সেদিন থেকে দীর্ঘ একমাস ব্যাপী এ জনবহুল রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ চলমান রয়েছে। সপ্তাহ খানেকের ভেতরে রাস্তার কাজ শেষ হবে। প্রবাসীর অর্থায়নে রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজে স্বেচ্ছায় শ্রম দিচ্ছেন এলাকাবাসী।

রামপুর গ্রামের মাওলানা শাহীন আলম, সিরাজ উদ্দিন, সুনাফর আলী, আবদুস সালাম, আবদুল  হান্নান, সামছুল হক, এখলাছুর রহমান ও নোমান আহমদ, করছা গ্রামের আজাদ মিয়া, আবুল কালাম, মুজিবুর রহমান, তাজ মিয়া, শেখকান্দি গ্রামের আলিম উদ্দিন, মাসুক মিয়া, কফিল মিয়াসহ স্থানীয় লোকজনরা জানান, গেল বছর ওই প্রবাসী ৫০ হাজার টাকার মাটি ভরাটের কাজ করে ‌দেয়। এ বছর রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগি হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী তাঁর কাছে আবেদন করি। এর প্রেক্ষিতে তিনি এবং তার পরিবারের উদ্যোগে পুরো রাস্তায় মাটি ভরাট করে দিচ্ছেন। বৃষ্টি বা বন্যায় রাস্তাটির ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। এ কারণে স্থায়ী ভাবে রাস্তাটি পাকা করণের আওতায় এনে দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগি এলাকাবাসী।