Dhaka ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাইকগাছায় দূর্নীতিবাজ ওলামা লীগ নেতা অধ্যক্ষে’র অপসারণের দাবীতে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া পাইকগাছার কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওলামা লীগ নেতা মাওঃ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়মসহ বহুবিধ অভিযোগ এনে তার অপসারণ দাবীতে রবিবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

এসময় মানববন্ধন চলাকালে অধ্যক্ষ সাত্তার কৌশলে পালিয়ে গেলেও পরে আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ছাত্র-জনতা, জমিদাতা ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে রবিকার সকালে উপজেলার কপিলমুনিতে জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার পাশে প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন ছাত্র জনতার পাশাপাশি, জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, জমিদাতা ও সাধারণ জনাতার উপস্থিতিতে মানববন্ধন শেষে জনসভায় রুপ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মাদ্রাসার জমি দাতা শেখ সাহাজুদ্দিন, উপজেলা নিরাপদ সড়কের সভাপতি এইচএম শফিউল ইসলাম, জমিদাতা শেখ ইউনুস আলী, পাইকগাছা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শেখ সেকেন্দার আলী, শেখ বাবু ,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের, মোঃ সোহেল গাজী, মোঃ বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।

এসময় বক্তারা মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাওঃ আব্দুস সাত্তারকে নারী লিপ্সু, ভন্ড কবিরাজ, দূর্নীতি- অনিয়ম ও মাদ্রাসা ধ্বংসের মাইন্ড আখ্যা দিয়ে তার অপসারণের দাবী করেন। তারা আরো বলেন, অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া ওলামা লীগ নেতা মাওঃ আব্দুস সাত্তার বিভিন্ন সময় অর্থেও বিনিময়ে অদক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসাটি ধ্বংস করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি স্বল্প মূল্যে মাদ্রাসায় জমি দানের কথা বলে নিজ নামে অধিক মূল্য দেখিয়ে সাড়ে ৪ শতক জমি লিখে নিয়েছেন। গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিজের পছন্দের অদক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। চাকরির সুবাদে মাদ্রাসা চত্ত্বরে রুম ভাড়া নিয়ে মাদ্রাসা ফাঁকি দিয়ে সকাল থেকে মধ্য রাত অবধি কবিরাজি ব্যবসা পরিচালনা করেন। তার এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে নানা উপায়ে তাকে প্রশমনের পাশাপাশি শিক্ষকদের সাথে হাতাহাতি ও রক্তাক্ত করেন। জনপদের ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠটি রক্ষায় তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রসঙ্গত, অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির আগে তিনি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার লাউড়ী রামনগর কামিল এম,এ মাদ্রাসায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ঐ প্রতিষ্ঠানে ১/৭/১৯৯৪ সালে যোগদান করেন এবং ১৬/১১/১৯৯৭ সালে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যার ইনডেক্স নং-৩৬৪৩৮২। এরপর ২০১৩ সালের ৩ মে কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে ঐ বছরের ৬ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষায় তাকে উত্তীর্ণ করা হয়। যদিও সরকারী পরিপত্র সর্বশেষ জনবল কাঠামোর পরিশিষ্ট ১১(২) ’ঘ’তে বর্ণিত কাম্য সংখ্যক অভিজ্ঞতা ১৫ বছর থাকার কথা থাকলেও তার অভিজ্ঞতা ছিল ১৪ বছর ২ মাস। এছড়া জনবল কাঠামো ২০১০ এর পরিশিষ্ট ১১(২) অনুচ্ছেদেও বর্ণনামতে তিনি ঐ পদে নিয়োগ পেতে পারেননা। ১৯৯৫ সালের জনবলকাঠামোর ১৪ নং ধারায় ‘এক প্রতিষ্ঠান থেকে চাকুরী ত্যাগ করার পর অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগদানকালীণ সময়ের ব্যবধান ৬ মাসের অধিক হলে উক্ত মেয়াদ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে গণ্য হবেনা।’ সে আলোকে তার ব্রেক অব সার্ভিস (চাকুরি বিরতি) হয়েছে এবং একই কারণে তার পূর্বের অভিজ্ঞতা গণনা যোগ্য হবেনা। অর্থাৎ ১৭/১১/১৯৯৭ থেকে ২৮/২/১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে তিনি চাকুরি বিরতি কালীণ সময়কে চাকুরিকাল দেখিয়ে প্রভাষকের টাইম স্কেল গ্রহনপূর্বক একইভাবে চাকুরি বিরতি সময়কে অভিজ্ঞতা গণনা করে সেখানে অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন। যার ফলে তার আবেদনপত্রটি বাছাই পর্বে বাতিল হওয়ার কথা ছিল। অথচ তৎকালীণ নিয়োগ কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে সেখানে নিয়োগ দেন। এসময় বক্তব্যরা আরো বলেন, অনতিবিলম্বে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার অপসারিত না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

এসময় বক্তারা আরো বলেন, অনতিবিলম্বে দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মাও: আব্দুস সাত্তারকে অপসারন করা না হলে পরবর্তীতে তারা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

পাইকগাছায় দূর্নীতিবাজ ওলামা লীগ নেতা অধ্যক্ষে’র অপসারণের দাবীতে ছাত্র জনতার মানববন্ধন

Update Time : ০৮:২৬:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া পাইকগাছার কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওলামা লীগ নেতা মাওঃ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়মসহ বহুবিধ অভিযোগ এনে তার অপসারণ দাবীতে রবিবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

এসময় মানববন্ধন চলাকালে অধ্যক্ষ সাত্তার কৌশলে পালিয়ে গেলেও পরে আন্দোলনকারীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ছাত্র-জনতা, জমিদাতা ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে রবিকার সকালে উপজেলার কপিলমুনিতে জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার পাশে প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন ছাত্র জনতার পাশাপাশি, জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, জমিদাতা ও সাধারণ জনাতার উপস্থিতিতে মানববন্ধন শেষে জনসভায় রুপ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, মাদ্রাসার জমি দাতা শেখ সাহাজুদ্দিন, উপজেলা নিরাপদ সড়কের সভাপতি এইচএম শফিউল ইসলাম, জমিদাতা শেখ ইউনুস আলী, পাইকগাছা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শেখ সেকেন্দার আলী, শেখ বাবু ,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের, মোঃ সোহেল গাজী, মোঃ বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।

এসময় বক্তারা মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মাওঃ আব্দুস সাত্তারকে নারী লিপ্সু, ভন্ড কবিরাজ, দূর্নীতি- অনিয়ম ও মাদ্রাসা ধ্বংসের মাইন্ড আখ্যা দিয়ে তার অপসারণের দাবী করেন। তারা আরো বলেন, অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া ওলামা লীগ নেতা মাওঃ আব্দুস সাত্তার বিভিন্ন সময় অর্থেও বিনিময়ে অদক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসাটি ধ্বংস করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি স্বল্প মূল্যে মাদ্রাসায় জমি দানের কথা বলে নিজ নামে অধিক মূল্য দেখিয়ে সাড়ে ৪ শতক জমি লিখে নিয়েছেন। গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিজের পছন্দের অদক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। চাকরির সুবাদে মাদ্রাসা চত্ত্বরে রুম ভাড়া নিয়ে মাদ্রাসা ফাঁকি দিয়ে সকাল থেকে মধ্য রাত অবধি কবিরাজি ব্যবসা পরিচালনা করেন। তার এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে নানা উপায়ে তাকে প্রশমনের পাশাপাশি শিক্ষকদের সাথে হাতাহাতি ও রক্তাক্ত করেন। জনপদের ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠটি রক্ষায় তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রসঙ্গত, অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির আগে তিনি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার লাউড়ী রামনগর কামিল এম,এ মাদ্রাসায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ঐ প্রতিষ্ঠানে ১/৭/১৯৯৪ সালে যোগদান করেন এবং ১৬/১১/১৯৯৭ সালে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যার ইনডেক্স নং-৩৬৪৩৮২। এরপর ২০১৩ সালের ৩ মে কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে ঐ বছরের ৬ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষায় তাকে উত্তীর্ণ করা হয়। যদিও সরকারী পরিপত্র সর্বশেষ জনবল কাঠামোর পরিশিষ্ট ১১(২) ’ঘ’তে বর্ণিত কাম্য সংখ্যক অভিজ্ঞতা ১৫ বছর থাকার কথা থাকলেও তার অভিজ্ঞতা ছিল ১৪ বছর ২ মাস। এছড়া জনবল কাঠামো ২০১০ এর পরিশিষ্ট ১১(২) অনুচ্ছেদেও বর্ণনামতে তিনি ঐ পদে নিয়োগ পেতে পারেননা। ১৯৯৫ সালের জনবলকাঠামোর ১৪ নং ধারায় ‘এক প্রতিষ্ঠান থেকে চাকুরী ত্যাগ করার পর অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগদানকালীণ সময়ের ব্যবধান ৬ মাসের অধিক হলে উক্ত মেয়াদ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে গণ্য হবেনা।’ সে আলোকে তার ব্রেক অব সার্ভিস (চাকুরি বিরতি) হয়েছে এবং একই কারণে তার পূর্বের অভিজ্ঞতা গণনা যোগ্য হবেনা। অর্থাৎ ১৭/১১/১৯৯৭ থেকে ২৮/২/১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে তিনি চাকুরি বিরতি কালীণ সময়কে চাকুরিকাল দেখিয়ে প্রভাষকের টাইম স্কেল গ্রহনপূর্বক একইভাবে চাকুরি বিরতি সময়কে অভিজ্ঞতা গণনা করে সেখানে অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন। যার ফলে তার আবেদনপত্রটি বাছাই পর্বে বাতিল হওয়ার কথা ছিল। অথচ তৎকালীণ নিয়োগ কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে সেখানে নিয়োগ দেন। এসময় বক্তব্যরা আরো বলেন, অনতিবিলম্বে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার অপসারিত না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

এসময় বক্তারা আরো বলেন, অনতিবিলম্বে দূর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মাও: আব্দুস সাত্তারকে অপসারন করা না হলে পরবর্তীতে তারা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।