Dhaka ০৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্ম বিরতি অব্যাহত

পাঁচ দফা দাবিতে দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে গত রোববার সকাল দশটা থেকে টানা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন কমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কাউকে চিকিৎসকের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ (কমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকেরা।

গত সোমবারও তারা কাজে যোগ দেননি। ফলে রোগীদের সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের স্থায়ী চিকিৎসকদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।পাঁচ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলছে কমেক শিক্ষার্থীদের। গতকাল  থেকে তাঁরা শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাক্তার হিসাম ও সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার ত্বোহা এর নেতৃত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। ওই সমাবেশ থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় এবং বিক্ষোভ মিছিলোত্তর সকল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।কমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডাক্তার হিসাম বলেন, দ্বিতীয় দিনের মতো টানা কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা।

অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলোর ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। যদি কেন্দ্রীয়ভাবে নতুন কোনো কর্মসূচি বা সিদ্ধান্ত আসে তাহলে তা পালন করা হবে। ইন্টার্ন চিকিৎসক ডাক্তার ত্বোহা বলেন, আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আপাতত মেডিকেল অফিসার দিয়ে ইনডোরে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। যদি উচ্চ আদালত সন্তোষজনক রায় প্রদান না করে তাহলে ইনডোরে চিকিৎসারত মেডিকেল অফিসারদেরকে আমাদের আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করা হবে।এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় ব্যাঘাত ঘটেছে। সাধারণত ওয়ার্ডগুলোতে স্থায়ী চিকিৎসকদের পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন।

রোগীর কাছাকাছি থাকেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রোগীরা এখন ডাকাডাকি করেও সহজে চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না।জানতে চাইলে কমেক হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডাঃ মাহামুদুল হক বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সারা দেশের মতো এখানে ধর্মঘট করছেন। আমাদের স্থায়ী চিকিৎসকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগে উচ্চতর কোর্সে অধ্যয়নরত চিকিৎসকেরা যথাসম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সকল মেডিকেল অফিসারদের দ্বিগুণ সময় ডিউটি করতে হচ্ছে।কমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার এস, এম আশরাফুজ্জামান, যেখানে দশজন চিকিৎসক থাকার কথা সেখানে একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হচ্ছে।

ব্যাঘাত তো একটু ঘটবেই। একজন রোগীর কাছাকাছি মেডিকেল অফিসারের চেয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বেশি থাকেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।শিক্ষার্থীদের দাবি, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এই নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মোংলায় বিদেশী জাহাজে চুরির প্রস্তুতির সময় অস্ত্রসহ পাঁচ জন কে আটক করেছে কোস্টগার্ড

কক্সবাজারে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্ম বিরতি অব্যাহত

Update Time : ০৩:৩৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পাঁচ দফা দাবিতে দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে গত রোববার সকাল দশটা থেকে টানা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন কমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কাউকে চিকিৎসকের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ (কমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকেরা।

গত সোমবারও তারা কাজে যোগ দেননি। ফলে রোগীদের সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের স্থায়ী চিকিৎসকদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।পাঁচ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলছে কমেক শিক্ষার্থীদের। গতকাল  থেকে তাঁরা শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাক্তার হিসাম ও সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার ত্বোহা এর নেতৃত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। ওই সমাবেশ থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় এবং বিক্ষোভ মিছিলোত্তর সকল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।কমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ডাক্তার হিসাম বলেন, দ্বিতীয় দিনের মতো টানা কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা।

অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলোর ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। যদি কেন্দ্রীয়ভাবে নতুন কোনো কর্মসূচি বা সিদ্ধান্ত আসে তাহলে তা পালন করা হবে। ইন্টার্ন চিকিৎসক ডাক্তার ত্বোহা বলেন, আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আপাতত মেডিকেল অফিসার দিয়ে ইনডোরে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। যদি উচ্চ আদালত সন্তোষজনক রায় প্রদান না করে তাহলে ইনডোরে চিকিৎসারত মেডিকেল অফিসারদেরকে আমাদের আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করা হবে।এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় ব্যাঘাত ঘটেছে। সাধারণত ওয়ার্ডগুলোতে স্থায়ী চিকিৎসকদের পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন।

রোগীর কাছাকাছি থাকেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রোগীরা এখন ডাকাডাকি করেও সহজে চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না।জানতে চাইলে কমেক হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডাঃ মাহামুদুল হক বলেন, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সারা দেশের মতো এখানে ধর্মঘট করছেন। আমাদের স্থায়ী চিকিৎসকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগে উচ্চতর কোর্সে অধ্যয়নরত চিকিৎসকেরা যথাসম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সকল মেডিকেল অফিসারদের দ্বিগুণ সময় ডিউটি করতে হচ্ছে।কমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডাক্তার এস, এম আশরাফুজ্জামান, যেখানে দশজন চিকিৎসক থাকার কথা সেখানে একজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হচ্ছে।

ব্যাঘাত তো একটু ঘটবেই। একজন রোগীর কাছাকাছি মেডিকেল অফিসারের চেয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বেশি থাকেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।শিক্ষার্থীদের দাবি, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এই নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।