Dhaka ০৩:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টাকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি

প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া চিঠিতে কী লিখেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চিঠি দিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। চিঠিতে তিনি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে চলমান সংস্কারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।

চিঠিটি প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা হয়েছে।

এর আগে জাতিসংঘের মহাসচিবের উদ্দেশে একটি চিঠি লেখেন প্রধান উপদেষ্টা। জাতিসংঘের মহাসচিব ২৫ ফেব্রুয়ারি এর উত্তর দিয়েছেন।

চিঠিতে লিখেছেন, ৪ ফেব্রুয়ারি আপনি যে চিঠি দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, যা ৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষাতের সময় আপনার রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি খলিলুর রহমান আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। আমি বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং আপনার নেতৃত্বে সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতে চাই।

আন্তোনিও গুতেরেস লিখেছেন, বাংলাদেশ ও ওই অঞ্চলের ওপর রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাবের পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনি (ড. ইউনূস) যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমিও তার সঙ্গে একমত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের কাজ অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘ। মিয়ানমারের সংকট রাজনৈতিকভাবে সমাধানের লক্ষ্যে আঞ্চলিক সংস্থা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ান এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা হবে।

রাখাইনের সম্প্রদায়গুলোর কাছে মানবিক সহায়তা এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়ে মহাসচিব লেখেন, আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছি তারা যেন, রাখাইনের সম্প্রদায়গুলোর কাছে মানবিক সহায়তা এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য সর্বাধিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জাতিসংঘের স্থানীয় টিমগুলোকে নির্দেশ দেন। এ সকল বিষয়ে সম্পৃক্ত প্রতিটি বিষয়কেই অগ্রাধিকার দেবে জাতিসংঘ। রাখাইন এবং সমগ্র মিয়ানমারের অভাবী মানুষের কাছে নিরাপদ, টেকসই এবং বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সমন্বয়কে অগ্রাধিকার দেবে জাতিসংঘ। এই অগ্রাধিকারের মধ্যে মিয়ামারের জন্য জরুরি ত্রাণ এবং আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারী এ.আই. অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

চিঠির শেষ অংশে মহাসচিব লিখেছেন, আমি আশাবাদী যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ স্তরের সম্মেলনটি নতুন করে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করবে। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য বিস্তৃত সমাধান বিকাশে অবদানের সুযোগ তৈরি হবে। সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শের পর জাতিসংঘ কীভাবে সর্বোত্তম পথে বিষয়টিকে সমর্থন করতে পারে তার জন্য সম্মেলনের ফলাফল এবং পরিকল্পনার অপেক্ষা করছি।

আগামী ১৩ মার্চ ঢাকা সফর করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব। ওই সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে লিখেছেন, মার্চে, পবিত্র রমজান মাসে আমার আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এই আলোচনা আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

প্রধান উপদেষ্টাকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি

Update Time : ০৩:১৮:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চিঠি দিয়েছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। চিঠিতে তিনি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে চলমান সংস্কারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।

চিঠিটি প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা হয়েছে।

এর আগে জাতিসংঘের মহাসচিবের উদ্দেশে একটি চিঠি লেখেন প্রধান উপদেষ্টা। জাতিসংঘের মহাসচিব ২৫ ফেব্রুয়ারি এর উত্তর দিয়েছেন।

চিঠিতে লিখেছেন, ৪ ফেব্রুয়ারি আপনি যে চিঠি দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, যা ৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষাতের সময় আপনার রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি খলিলুর রহমান আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। আমি বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং আপনার নেতৃত্বে সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতে চাই।

আন্তোনিও গুতেরেস লিখেছেন, বাংলাদেশ ও ওই অঞ্চলের ওপর রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাবের পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনি (ড. ইউনূস) যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমিও তার সঙ্গে একমত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের কাজ অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘ। মিয়ানমারের সংকট রাজনৈতিকভাবে সমাধানের লক্ষ্যে আঞ্চলিক সংস্থা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ান এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা হবে।

রাখাইনের সম্প্রদায়গুলোর কাছে মানবিক সহায়তা এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়ে মহাসচিব লেখেন, আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছি তারা যেন, রাখাইনের সম্প্রদায়গুলোর কাছে মানবিক সহায়তা এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য সর্বাধিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জাতিসংঘের স্থানীয় টিমগুলোকে নির্দেশ দেন। এ সকল বিষয়ে সম্পৃক্ত প্রতিটি বিষয়কেই অগ্রাধিকার দেবে জাতিসংঘ। রাখাইন এবং সমগ্র মিয়ানমারের অভাবী মানুষের কাছে নিরাপদ, টেকসই এবং বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সমন্বয়কে অগ্রাধিকার দেবে জাতিসংঘ। এই অগ্রাধিকারের মধ্যে মিয়ামারের জন্য জরুরি ত্রাণ এবং আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারী এ.আই. অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

চিঠির শেষ অংশে মহাসচিব লিখেছেন, আমি আশাবাদী যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ স্তরের সম্মেলনটি নতুন করে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করবে। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য বিস্তৃত সমাধান বিকাশে অবদানের সুযোগ তৈরি হবে। সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শের পর জাতিসংঘ কীভাবে সর্বোত্তম পথে বিষয়টিকে সমর্থন করতে পারে তার জন্য সম্মেলনের ফলাফল এবং পরিকল্পনার অপেক্ষা করছি।

আগামী ১৩ মার্চ ঢাকা সফর করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব। ওই সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে লিখেছেন, মার্চে, পবিত্র রমজান মাসে আমার আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এই আলোচনা আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।