প্রকৃত ভালবাসার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বগুড়ার নন্দীগ্রামের সালাম-ফারহানা দম্পতি। ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে নিজের কিডনি দান করেছিলেন স্ত্রী, কিন্তু তবুও স্বামীকে বাঁচানো সম্ভব হলো না। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামে।
আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসকরা দ্রæত কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। তখন তার স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন নিজের কিডনি দানের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ভারতের একটি হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচারের পর কিছুদিন স্বাস্থ্যের উন্নতি হলেও, পরবর্তীতে সংক্রমণসহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার ২৮ ফেব্রæয়ারি দুপুরে ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এই দম্পতির একমাত্র পুত্রসন্তান আব্দুল্লাহ আল রাফিউল বগুড়া জিলা স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবার মৃত্যুতে সে গভীর শোকে মূহ্যমান। পরিবারের সদস্যরা জানান, স্ত্রীর একমাত্র ইচ্ছা ছিল স্বামীকে সুস্থ জীবন দেওয়া, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তা সম্ভব হলো না। এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনরা এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং স্ত্রীর আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছেন।
পারিবারিক সুত্রে জানান গেছে ১ মার্চ ভারতীয় সময় বেলা ১১টার ফ্লাইটে তার লাশ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবে সালামের স্ত্রী ফারহানা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম কামাল আব্দুস সালামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার চিকিৎসার জন্য বগুড়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন ও আমিসহ এলাকার সকল মানুষ এবং তার বন্ধুবান্ধব,আত্মীয়স্বজন আন্তরিক ভাবে সহযোগিতা করেছেন। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি সেই সাথে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। তিনি আরও বলেন, সালামের স্ত্রীর স্বামীর প্রতি যে ভালবাসা তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
এছাড়াও বগুড়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারে প্রাতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।