টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সংলগ্ন বয়ে যাওয়া বংশাই নদীর তীর থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকটি চক্র অবৈধ ভাবে মাটি বিক্রি করে চলছে অনেক দিন যাবত। ফলে নদীর নিকটবর্তী রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি আগামী বর্ষায় ভাঙ্গনের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই চক্রগুলো অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় কিছু বলতে সাহস পান না এলাকাবাসী। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের উত্তর পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীর গোড়াইল এবং ত্রিমোহন এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে নির্বিঘ্নে মাটি কেঁটে চলছে এই সিন্ডিকেট। সন্ধ্যা হলেই মহাসমারোহে শুরু হয় তাদের মাটি কাঁটার মহোৎসব; চলে ভোর পর্যন্ত। ভেক্যু আর ড্রাম ট্রাকের লাল নীল বাতি দূর থেকে দেখে মনে হয় নদীর পাশে এটা কোন ট্রাক অথবা বাসস্ট্যান্ড। কিছু কিছু ড্রাম ট্রাক মাটি বোঝাই করে রাতের বেলা ঢাকা-টাঙ্গাইল হাইওয়ের উপর দিয়ে চলাচল করে থাকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলকাবাসীর কয়েকজন এই প্রতিবেদককে বলেন, সারারাত ভেক্যু আর ড্রাম ট্রাকের শব্দে ঠিক মত ঘুমাতে পারি না।
সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় অসুস্থ রোগী, বৃদ্ধ এবং শিশুদের। মাঝে মধ্যে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বিভিন্ন জায়গায় অভিযানের খবর পেলেও আমাদের এখানে কেন আসে না বুঝিনা। একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ তামাশাচ্ছলে বলেন, মনে হয় টাকার বান্ডিল দিয়ে প্রশাসনের চোখ ঢেকে দিয়েছে, তাই এই এলাকা চোখে পড়ে না। এভাবে নদীর মাটি কাঁটা অব্যাহত থাকলে কোন এক সময় আমাদের বাপ-দাদার ভিটা মাটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাছাড়া ড্রাম ট্রাকের চাকায় রাস্তা-ঘাটগুলো ধূলাবালি আর খানাখন্দে যে অবস্থা হয়েছে, তাতে চলাচল করাও দায় হয়ে পড়েছে।
সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী এবং হাসপাতালে যাওয়া রোগীদের।বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড টাঙ্গাইল জেলার সাব ডিভিশনাল ইন্জিনিয়ার প্রান্ত পন্ডিত মুঠো ফোনে বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দায়িত্ব উপজেলার ইউএনও এবং এসি ল্যান্ডের। আমি উনাদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো। মির্জাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান কে অবহিত করলে তিনি খুব শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করবেন বলে জানান।