Dhaka ০২:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলায় নিখোঁজ লঞ্চ স্টাফের লাশ ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার

নিখোঁজের প্রায় ২২ ঘণ্টা পর ভোলায় এমভি মানিক-১ লঞ্চের স্টাফ তাজুল ইসলাম (৫০) এর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বরিশাল থেকে ডুবুরি দল এসে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত তাজুল ইসলাম লালমোহন উপজেলার চর কচ্ছপিয়া এলাকার মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার লঞ্চঘাটে নোঙ্গর করা এমভি মানিক লঞ্চ যাত্রার পূর্ব মুহূর্তে পাখা পরিস্কার করতে গিয়ে খালে নেমে তাজুল ইসলাম (বড় মিয়া) নামের এক ইঞ্জিন রুমের স্টাফ নিখোঁজ হন। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর খেয়াঘাটে এই ঘটনা ঘটে। পরে অনেক খোঁজা-খুজির পরও তার কোন হদিস মেলেনি।

এমভি মানিক লঞ্চের স্টাফরা জানান, বোরহানউদ্দিন উপজেলার খেয়াঘাট থেকে প্রতিদিন এমভি মানিক লঞ্চটি ছেড়ে যায়। বিকেল ৪টার দিকে লঞ্চ ছাড়ার পূর্বে চেকের অংশ হিসেবে যাত্রার পূর্ব মুহূর্তে লঞ্চের নিচে পাখা পরিস্কার করার জন্য তাজুল ইসলাম খালের পানিতে ডুব দেয়। কিন্তু ১০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পরও পানির নিচ থেকে উঠতে না দেখে বোরহানউদ্দিন ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও তার কোন হদিস পয়নি। পরে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বোরহানউদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বরিশাল থেকে ডুবরি আনার জন্য অপেক্ষা করে।

এরি মধ্য বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পর বাঁধে বিপত্তি। ইফতারের পর কিছু অতিউৎসাহী উৎসুক ইয়াং ছেলেরা এসে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে এক পর্যায়ে নিচ তালা থেকে শুরু করে ৩ তালা পর্যন্ত লঞ্চের বিভিন্ন সামগ্রী, কেবিনের গ্লাস, জানালা এবং দরজা ভাংচুর করে। ভাংচুর করতে গিয়ে তাদের মধ্যে একজন গুরুতর আহত হয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হয়, পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে রেফার করে। ভাংচুরের ঘটনা শুনে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে, লঞ্চের চারপাশে উৎসুক জনতা ঘিরে রাখে।

পরবর্তীতে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় বরিশাল থেকে ডুবুরি দল এনে বৃহস্পতিবার পুনরায় লঞ্চঘাটের আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালায়। লঞ্চটি যেখানে দাঁড়ানো ছিল সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র নেয়া অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তাজুল ইসলামের লাশ লঞ্চ ঘাট থেকে কিছুটা দূরে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে তীরে আনা হয়। বোরহানউদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবুল কালাম জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু ওই দিন রাত হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। তাই বৃহস্পতিবার পুনরায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে তাজুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত তাজুল ইসলামের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান জানান, নিহত তাজুল ইসলামের লাশ উপজেলার লঞ্চঘাট এলাকার নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন চলমান রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ভোলায় নিখোঁজ লঞ্চ স্টাফের লাশ ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার

Update Time : ০৪:৪৫:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

নিখোঁজের প্রায় ২২ ঘণ্টা পর ভোলায় এমভি মানিক-১ লঞ্চের স্টাফ তাজুল ইসলাম (৫০) এর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বরিশাল থেকে ডুবুরি দল এসে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত তাজুল ইসলাম লালমোহন উপজেলার চর কচ্ছপিয়া এলাকার মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার লঞ্চঘাটে নোঙ্গর করা এমভি মানিক লঞ্চ যাত্রার পূর্ব মুহূর্তে পাখা পরিস্কার করতে গিয়ে খালে নেমে তাজুল ইসলাম (বড় মিয়া) নামের এক ইঞ্জিন রুমের স্টাফ নিখোঁজ হন। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর খেয়াঘাটে এই ঘটনা ঘটে। পরে অনেক খোঁজা-খুজির পরও তার কোন হদিস মেলেনি।

এমভি মানিক লঞ্চের স্টাফরা জানান, বোরহানউদ্দিন উপজেলার খেয়াঘাট থেকে প্রতিদিন এমভি মানিক লঞ্চটি ছেড়ে যায়। বিকেল ৪টার দিকে লঞ্চ ছাড়ার পূর্বে চেকের অংশ হিসেবে যাত্রার পূর্ব মুহূর্তে লঞ্চের নিচে পাখা পরিস্কার করার জন্য তাজুল ইসলাম খালের পানিতে ডুব দেয়। কিন্তু ১০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পরও পানির নিচ থেকে উঠতে না দেখে বোরহানউদ্দিন ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও তার কোন হদিস পয়নি। পরে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বোরহানউদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বরিশাল থেকে ডুবরি আনার জন্য অপেক্ষা করে।

এরি মধ্য বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার পর বাঁধে বিপত্তি। ইফতারের পর কিছু অতিউৎসাহী উৎসুক ইয়াং ছেলেরা এসে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে এক পর্যায়ে নিচ তালা থেকে শুরু করে ৩ তালা পর্যন্ত লঞ্চের বিভিন্ন সামগ্রী, কেবিনের গ্লাস, জানালা এবং দরজা ভাংচুর করে। ভাংচুর করতে গিয়ে তাদের মধ্যে একজন গুরুতর আহত হয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হয়, পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে রেফার করে। ভাংচুরের ঘটনা শুনে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে, লঞ্চের চারপাশে উৎসুক জনতা ঘিরে রাখে।

পরবর্তীতে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় বরিশাল থেকে ডুবুরি দল এনে বৃহস্পতিবার পুনরায় লঞ্চঘাটের আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালায়। লঞ্চটি যেখানে দাঁড়ানো ছিল সেখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র নেয়া অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তাজুল ইসলামের লাশ লঞ্চ ঘাট থেকে কিছুটা দূরে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে তীরে আনা হয়। বোরহানউদ্দিন ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আবুল কালাম জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু ওই দিন রাত হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। তাই বৃহস্পতিবার পুনরায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে তাজুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত তাজুল ইসলামের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান জানান, নিহত তাজুল ইসলামের লাশ উপজেলার লঞ্চঘাট এলাকার নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন চলমান রয়েছে।