Dhaka ১১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোর শহরে দিনে-দুপুরে দোকান লুট

যশোর শহরের বঙ্গবাজারে দিনে-দুপুরে একটি ওষুধের দোকানের তালা ভেঙে নগদ টাকা ও মালামাল লুটের অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ ঘটনায় দুর্বৃত্তরা ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন চৌধুরী ফার্মেসী অ্যান্ড সার্জিক্যালসের মালিক সোহেল রানা। এর আগে মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি।

সোহেল রানার অভিযোগে যাদের নাম উঠে এসেছে, তারা হলেন কাজীপাড়া কাঠালতলা এলাকার কাজী শহিদুল হক নাদিম, রাজারহাটের মো. আহাদ ও ঝুমঝুমপুরের মো. রাজু আহম্মেদ। পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সোহেল রানা জানান, বঙ্গবাজারে তার চৌধুরী ফার্মেসী অ্যান্ড সার্জিক্যালস নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে দোকান বন্ধ থাকাকালীন অভিযুক্তরা এসে তালা ভেঙে দোকানে প্রবেশ করে এবং বস্তায় করে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ওষুধ নিয়ে যায়। এছাড়া, ক্যাশ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও জরুরি কাগজপত্রও লুট করা হয়।

প্রতিবেশীরা এ ঘটনায় বাধা দিলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সোহেল রানা দ্রুত দোকানে এসে দেখেন, মালামাল লুট হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, ওই দোকানটি তিন মাস আগে ৭০ লাখ টাকায় নাদিমের কাছ থেকে ক্রয় করেন এবং তার প্রয়োজনীয় দলিলপত্রও রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন আগে নাদিম আরও ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। সোহেল রানা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নাদিম মূল স্ট্যাম্প ছিঁড়ে ফেলে এবং আদালতে মামলাও করা হয়, যা বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।

বঙ্গবাজারের একটি সূত্র জানিয়েছে, নাদিম প্রথমে ৭০ লাখ টাকায় দোকানটি বিক্রি করেন এবং দলিল সম্পন্ন করেন। তবে পরবর্তীতে আরেকজন ক্রেতা নাদিমকে বেশি মূল্যের প্রলোভন দেখায়, ফলে নাদিম অতিরিক্ত ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। সোহেল রানা টাকা না দেওয়ায় নাদিম ভয়ভীতি দেখিয়ে চুক্তিপত্র ছিঁড়ে ফেলেন এবং দোকান থেকে তাকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেন।

পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ স্বপন কুমার দাশ জানান, তারা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। অভিযুক্ত নাদিম বর্তমানে সিলেটে অবস্থান করছেন এবং তাকে শনিবারের মধ্যে হাজির হতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্ত শহিদুল হক নাদিম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, দোকানটি তারই ছিল। তবে ভিডিওর প্রমাণ থাকার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, যা ঘটেছে তা বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের জ্ঞাতসারে হয়েছে। তবে ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

যশোর শহরে দিনে-দুপুরে দোকান লুট

Update Time : ১০:০৩:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

যশোর শহরের বঙ্গবাজারে দিনে-দুপুরে একটি ওষুধের দোকানের তালা ভেঙে নগদ টাকা ও মালামাল লুটের অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ ঘটনায় দুর্বৃত্তরা ৫৫ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন চৌধুরী ফার্মেসী অ্যান্ড সার্জিক্যালসের মালিক সোহেল রানা। এর আগে মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন তিনি।

সোহেল রানার অভিযোগে যাদের নাম উঠে এসেছে, তারা হলেন কাজীপাড়া কাঠালতলা এলাকার কাজী শহিদুল হক নাদিম, রাজারহাটের মো. আহাদ ও ঝুমঝুমপুরের মো. রাজু আহম্মেদ। পুলিশ ইতোমধ্যে অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সোহেল রানা জানান, বঙ্গবাজারে তার চৌধুরী ফার্মেসী অ্যান্ড সার্জিক্যালস নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে দোকান বন্ধ থাকাকালীন অভিযুক্তরা এসে তালা ভেঙে দোকানে প্রবেশ করে এবং বস্তায় করে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ওষুধ নিয়ে যায়। এছাড়া, ক্যাশ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও জরুরি কাগজপত্রও লুট করা হয়।

প্রতিবেশীরা এ ঘটনায় বাধা দিলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সোহেল রানা দ্রুত দোকানে এসে দেখেন, মালামাল লুট হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, ওই দোকানটি তিন মাস আগে ৭০ লাখ টাকায় নাদিমের কাছ থেকে ক্রয় করেন এবং তার প্রয়োজনীয় দলিলপত্রও রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন আগে নাদিম আরও ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। সোহেল রানা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নাদিম মূল স্ট্যাম্প ছিঁড়ে ফেলে এবং আদালতে মামলাও করা হয়, যা বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।

বঙ্গবাজারের একটি সূত্র জানিয়েছে, নাদিম প্রথমে ৭০ লাখ টাকায় দোকানটি বিক্রি করেন এবং দলিল সম্পন্ন করেন। তবে পরবর্তীতে আরেকজন ক্রেতা নাদিমকে বেশি মূল্যের প্রলোভন দেখায়, ফলে নাদিম অতিরিক্ত ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। সোহেল রানা টাকা না দেওয়ায় নাদিম ভয়ভীতি দেখিয়ে চুক্তিপত্র ছিঁড়ে ফেলেন এবং দোকান থেকে তাকে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করেন।

পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ স্বপন কুমার দাশ জানান, তারা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। অভিযুক্ত নাদিম বর্তমানে সিলেটে অবস্থান করছেন এবং তাকে শনিবারের মধ্যে হাজির হতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্ত শহিদুল হক নাদিম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, দোকানটি তারই ছিল। তবে ভিডিওর প্রমাণ থাকার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, যা ঘটেছে তা বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের জ্ঞাতসারে হয়েছে। তবে ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা জানান, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।