Dhaka ০৪:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীসমাজ যাতে বঞ্চিত না হয়, সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আহ্বান জানিয়েছেন, নারীসমাজ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখার। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৭ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে এ আহ্বান জানান তিনি। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি অত্যন্ত তাৎপর্যময় দিন। বিশ্বব্যাপী নারীদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠা গুরুত্ব পায়। এ দিবসটি নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনে সচেতনতা সৃষ্টি করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারী সমাজের অগ্রগতি সাধিত হলে জাতির সামগ্রিক বিকাশ সম্ভব হবে। এ সত্যটি উপলব্ধি করেই শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সেটির ধারাবাহিকতায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার এ দেশের নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ নারী সমাজের অশিক্ষার অন্ধকার ঘুচিয়ে শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের জন্য অনেক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। তার শাসনামলে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তির হার ৯৭ শতাংশে উন্নীত হয়। ছাত্রীকে শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হয় এবং স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। মেয়েদের জন্য দুটি নতুন ক্যাডেট কলেজ ও তিনটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় চট্টগ্রামে এশিয়ার ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

তারেক রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সরকার একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এবং উচ্চশিক্ষা উৎসাহিত করার জন্য ব্যক্তিখাতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেয়। যাতে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগও বৃদ্ধি পায়। দেশের মানুষকে দ্রুততম সময়ে স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একট পৃথক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালের ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা লাভে আগ্রহী করে তুলতে বেগম খালেদা জিয়া সরকার ১৯৯৩ সালে শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি চালু করে। পল্লী অঞ্চলে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা অবৈতনিক করা হয় এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রীদের জন্য দেশব্যাপী একটি উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করা হয়। ফলে নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় তাদেরকে সম্পৃক্ত করার কারণে তাদের মধ্যে আত্মপ্রত্যয় জেগে উঠে। একই সঙ্গে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নারীদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুরুষদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার সমান সুযোগে সমাজের অগ্রগতি ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। বদলে যাওয়া বিশ্বের কর্মপরিবেশে নারীর সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়নে বৈশ্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে অপরিহার্য শর্ত হলো নারীর অধিকার। নারীসমাজ যাতে অবহেলা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বৈশ্বিক কর্মযজ্ঞে নারীর সমতায়ন এখন সর্বপ্রথম এজেন্ডা হওয়া উচিত।

নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আজকের এই শুভ দিনে আমি নারীসমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাই। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল থিম ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’-এর সফলতা কামনা করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

নারীসমাজ যাতে বঞ্চিত না হয়, সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে: তারেক রহমান

Update Time : ১০:৩২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আহ্বান জানিয়েছেন, নারীসমাজ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখার। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৭ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে এ আহ্বান জানান তিনি। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি অত্যন্ত তাৎপর্যময় দিন। বিশ্বব্যাপী নারীদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠা গুরুত্ব পায়। এ দিবসটি নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনে সচেতনতা সৃষ্টি করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে দিবসটির গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারী সমাজের অগ্রগতি সাধিত হলে জাতির সামগ্রিক বিকাশ সম্ভব হবে। এ সত্যটি উপলব্ধি করেই শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সেটির ধারাবাহিকতায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার এ দেশের নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ নারী সমাজের অশিক্ষার অন্ধকার ঘুচিয়ে শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের জন্য অনেক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। তার শাসনামলে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তির হার ৯৭ শতাংশে উন্নীত হয়। ছাত্রীকে শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হয় এবং স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। মেয়েদের জন্য দুটি নতুন ক্যাডেট কলেজ ও তিনটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় চট্টগ্রামে এশিয়ার ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

তারেক রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সরকার একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এবং উচ্চশিক্ষা উৎসাহিত করার জন্য ব্যক্তিখাতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেয়। যাতে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগও বৃদ্ধি পায়। দেশের মানুষকে দ্রুততম সময়ে স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একট পৃথক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।

তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালের ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা লাভে আগ্রহী করে তুলতে বেগম খালেদা জিয়া সরকার ১৯৯৩ সালে শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি চালু করে। পল্লী অঞ্চলে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা অবৈতনিক করা হয় এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রীদের জন্য দেশব্যাপী একটি উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করা হয়। ফলে নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় তাদেরকে সম্পৃক্ত করার কারণে তাদের মধ্যে আত্মপ্রত্যয় জেগে উঠে। একই সঙ্গে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নারীদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুরুষদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার সমান সুযোগে সমাজের অগ্রগতি ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। বদলে যাওয়া বিশ্বের কর্মপরিবেশে নারীর সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়নে বৈশ্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে অপরিহার্য শর্ত হলো নারীর অধিকার। নারীসমাজ যাতে অবহেলা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বৈশ্বিক কর্মযজ্ঞে নারীর সমতায়ন এখন সর্বপ্রথম এজেন্ডা হওয়া উচিত।

নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আজকের এই শুভ দিনে আমি নারীসমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাই। এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল থিম ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’-এর সফলতা কামনা করছি।