Dhaka ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ লুট: ৬ জন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনায় লুন্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ডিবি।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মোঃ কাউছার (৩১), ২। মোঃ ফরহাদ (৬৪), ৩।  মোঃ খলিলুর রহমান (৫০), ৪। মোঃ সুমন (৩০), ৫। দুলাল চৌধুরী (৪৩) ও ৬। আমিনুল (৩৫)।

গতকাল ৭ মার্চ ২০২৫. রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর ও মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে লুষ্ঠিত স্বর্ণের মধ্যে ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, বিক্রিত স্বর্ণের মূল্যবাবদ নগদ দুই লক্ষ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা, ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ৭.৬২ এমএম রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৫) একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তিনি রামপুরা থানাধীন সি ব্লকের এভিনিউ রোড-৫ এর “অলংকার জুয়েলার্স” দোকানের মালিক। প্রতিদিনের ন্যায় তিনি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি. রাতে দোকান বন্ধ করে দোকানের ১৬০ ভরি স্বর্ণ যার আনুমানিক বাজার মূল্য দুই কোটি ৪৭ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা ও নগদ এক লক্ষ টাকাসহ বাসায় ফিরছিলেন। রাত ১০:৪৫ ঘটিকায় বনশ্রী ডি ব্লক ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির নিজ ভাড়া বাসার গেইটের সামনে পৌঁছামাত্র তিনটি মোটরসাইকেলে করে ৬/৭ জন দৃষ্কৃতকারী আগ্নেয়াস্ত্র ও চাপাতিসহ তার গতিরোধ করে। তার কাছে থাকা স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় আনোয়ার হোসেন বাধা প্রদান করলে দৃষ্কৃতকারীরা তাকে ৪/৫ রাউন্ড গুলি করে। দৃষ্কৃতকারীদের ছোড়া গুলি আনোয়ার হোসেনের বাম হাঁটু ও বাম পায়ের উরুতে আঘাত করে। এ সময় দৃষ্কৃতকারীরা তাদের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে আনোয়ার হোসেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে তার সাথে থাকা সাইড ব্যাগে রক্ষিত স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত ভিকটিম আনোয়ার হোসেনকে রামপুরার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে রামপুরা থানায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি. তারিখে একটি মামলা দায়ের করেন।

উক্ত ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য কাজ আরম্ভ করে। পূর্বাপর বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনা বিশ্লেষণ, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বরিশাল হতে একজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে বনশ্রীতে ডাকাতি ঘটনার পূর্বে উক্ত ঘটনায় জড়িতরা একটি প্রস্তুতি বৈঠক করে। প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডিবির চারটি আভিযানিক দল নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর এবং মাদারীপুরে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত দলকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে মর্মে জানা যায় এবং তাদের অপরাধের ধরণও একই রকম। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ লুট: ৬ জন ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

Update Time : ০৩:৫৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনায় লুন্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ডিবি।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মোঃ কাউছার (৩১), ২। মোঃ ফরহাদ (৬৪), ৩।  মোঃ খলিলুর রহমান (৫০), ৪। মোঃ সুমন (৩০), ৫। দুলাল চৌধুরী (৪৩) ও ৬। আমিনুল (৩৫)।

গতকাল ৭ মার্চ ২০২৫. রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর ও মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে লুষ্ঠিত স্বর্ণের মধ্যে ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, বিক্রিত স্বর্ণের মূল্যবাবদ নগদ দুই লক্ষ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা, ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ৭.৬২ এমএম রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৫) একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তিনি রামপুরা থানাধীন সি ব্লকের এভিনিউ রোড-৫ এর “অলংকার জুয়েলার্স” দোকানের মালিক। প্রতিদিনের ন্যায় তিনি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি. রাতে দোকান বন্ধ করে দোকানের ১৬০ ভরি স্বর্ণ যার আনুমানিক বাজার মূল্য দুই কোটি ৪৭ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা ও নগদ এক লক্ষ টাকাসহ বাসায় ফিরছিলেন। রাত ১০:৪৫ ঘটিকায় বনশ্রী ডি ব্লক ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির নিজ ভাড়া বাসার গেইটের সামনে পৌঁছামাত্র তিনটি মোটরসাইকেলে করে ৬/৭ জন দৃষ্কৃতকারী আগ্নেয়াস্ত্র ও চাপাতিসহ তার গতিরোধ করে। তার কাছে থাকা স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় আনোয়ার হোসেন বাধা প্রদান করলে দৃষ্কৃতকারীরা তাকে ৪/৫ রাউন্ড গুলি করে। দৃষ্কৃতকারীদের ছোড়া গুলি আনোয়ার হোসেনের বাম হাঁটু ও বাম পায়ের উরুতে আঘাত করে। এ সময় দৃষ্কৃতকারীরা তাদের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে আনোয়ার হোসেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করে তার সাথে থাকা সাইড ব্যাগে রক্ষিত স্বর্ণ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত ভিকটিম আনোয়ার হোসেনকে রামপুরার স্থানীয় একটি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে রামপুরা থানায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি. তারিখে একটি মামলা দায়ের করেন।

উক্ত ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য কাজ আরম্ভ করে। পূর্বাপর বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনা বিশ্লেষণ, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বরিশাল হতে একজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে বনশ্রীতে ডাকাতি ঘটনার পূর্বে উক্ত ঘটনায় জড়িতরা একটি প্রস্তুতি বৈঠক করে। প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ডিবির চারটি আভিযানিক দল নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর এবং মাদারীপুরে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত দলকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে মর্মে জানা যায় এবং তাদের অপরাধের ধরণও একই রকম। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।