মাদ্রাসায় পড়ুয়া ১০ বছর বয়সী ছাত্রী সাদিয়া (ছদ্মনাম) নিজ বাড়ি থেকে সামান্য দূরে নানির বাড়িতে গিয়েছিলো বড়ই খাওয়ার জন্য। সাদিয়া যখন গাছ থেকে বড়ই পারতে ব্যস্ত তখন তার দিকে কুনজর পড়ে পাশেই ধান ক্ষেতে সার দিতে থাকা দুই সন্তানের জনক একই গ্রামের নওশের মিয়ার ছেলে ফিরোজের (৪৫)। পেশায় সিএনজি চালক। সে সাদিয়াকে বড়ই দেওয়ার কথা বলে নির্জনে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণ করেই সে ক্ষান্ত হয়নি। সাদিয়া বাড়ি আসার পথে তাকে নানা ভাবে ভয় ভীতি দেখাতে থাকে যেন বিষয়টি কাউকে না বলে। ফিরোজের কাছে ধর্ষণের ভিডিও আছে। সাদিয়া কাউকে বলে দিলে সে ভিডিও ভাইরাল করে দিবে বলে জানায় এবং তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। ফিরোজ এভাবে সাদিয়াকে ভয় দেখাতে দেখাতে সাদিয়ার বাড়ি পর্যন্ত চলে আসে। সাদিয়াদের বাড়ির সামনে ফিরোজ মুখ চেপে ধরলে সাদিয়ার চাচি বাড়ি থেকে দেখতে পায়। ফিরোজ কেন সাদিয়াকে মুখ চেপে ধরলো জিজ্ঞাসা করলে সাদিয়ার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। সাদিয়া তার মা এবং চাচীর কাছে সবকিছু খুলে বলে। অভাবের তাড়নায় সৌদি প্রবাসী বাবা ছাড়া ছোট ভাই এবং মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকতো সাদিয়া। লোক লজ্জার ভয়ে কাউকে জানাতে চাইনি পরিবার। ঘটনাটি ঘটে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়ি পাড়া গ্রামে গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি।
একপর্যায়ে এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় মাতব্বর মিলে একটি গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে। উক্ত সালিশে ফিরোজকে জুতো পেটা এবং দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। সাদিয়ার পরিবারকে নগদ বিরানব্বই হাজার টাকা দিয়ে আটান্ন হাজার টাকা বাকি রাখা হয়। এমন ঘটনা এবং বিচারে এলাকায় ক্ষোভ এর সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি লোক মারফত শুনেছি কিন্তু পরিবারে পক্ষ থেকে আমাকে কিছু বলেনি এবং সালিশেও আমাকে ডাকা হয়নি। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, ঘটনাটি জানার পর ভিকটিম এবং তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। গত শুক্রবার দিন ও রাতে অপরাধীকে ধরার জন্য অভিধান চালানো হয়েছে। এমন ঘটনায় এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভ এবং ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে।