Dhaka ১২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে সৈয়দপুরে মেরামত হচ্ছে ১২০ রেল কোচ

oppo_2

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রী সেবা দিতে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত করা হচ্ছে ১২০টি রেল কোচ। সেই সাথে নিয়মিত যাত্রী সেবা দিতে আরও ৬০ টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে কারখানায়। ১২ মার্চ বুধবার রেল কারখানায় গিয়ে দেখা যায় এমনই দৃশ্য।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি শপে তীব্র জনবল সংকটেও শ্রমিক-কর্মচারীরা দিনরাত অতিরিক্ত কাজ করে চলছে। মেরামতকৃত কোচ দিয়ে দুটি স্পেশাল ট্রেনসহ প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনের বহরে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে অধিক সংখ্যক যাত্রী সেবার মান বাড়াতে কারখানায় বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। জরাজীর্ণ কোচগুলো মরিচাধরা ইস্পাতের অংশ সেঁটে ফেলা হচ্ছে। সেই সাথে কোচে নতুন আসন স্থাপনের পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ অঙ্গসজ্জার কাজ চলছে জোরেশোরে।শুধু তা-ই নয় ২৮ টি উপ-কারখানায় রয়েছে কর্মমুখর অবস্থা।

সূত্রে জানা যায়, ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। শুরুতে এ কারখানায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করলেও বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৭০৭ জন। নতুন নিয়োগ না থাকায় এ কারখানায় জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নাম মাত্র জনবল দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রেলওয়ের বিশাল এই কারখানাটি।

ক্যারেজ শপের ইনচার্জ মমিনুল ইসলাম বলেন, জনবল সংকট থাকায় ১০ জনের জায়গায় কাজ করছেন মাত্র ২ জন দক্ষ শ্রমিক। এর পরেও আসন্ন ঈদে যাত্রী সেবা স্বাভাবিক রাখতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১২০ টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে ৯০ টি ব্রডগেজ(বড়) ও ৩০ টি মিটারগেজ (ছোট) কোচ।ইতিমধ্যে ৬৮ টি কোচ মেরামত শেষে রেলওয়ে পরিবহন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি গুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হস্তান্তর করা হবে।

রেল কারখানার শ্রমিকরা জানান, আমাদের জনবল সংকট থাকলেও ঈদে যাত্রীসেবা দেওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঈদে যাত্রীদের সেবা দেয়ার জন্য অতিরিক্ত শ্রম হলেও আমাদের কষ্ট নেই। ঈদে ঘরমুখো মানুষ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়িতে নিরাপদে ফিরতে পারে এজন্য আমরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকরা বলেন, কারখানায় কম শ্রমিক থাকা সত্বেও বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান সাহেবের কারনেই দুর্নীতি অনেকটা কমে গিয়েছিল। ২ বছরে প্রায় ৩ শতাধিক রেল কোচ নির্মাণ হয়েছে।  কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সঠিক সময়ে কারখানায় আসা যাওয়া করতেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চুরি চামারি। কিন্তু এই কারখানায় একটি কুচক্রী মহল তাদের স্বার্থ হাসিল করতে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তুলে ধরায় ডিএস সাহেবকে অনত্র বদলী করা হয়েছে। যার কারনে সৈয়দপুর রেল কারখানায় উন্নয়নে ভাটা পরবে বলে আশংকা করছেন তারা।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান বলেন, আমি যোগদানের আগ থেকে জনবল সংকট ছিল এই কারখানায়। এরপরেও  ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যৎ সামান্য লোক নিয়ে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছি।আশাকরি এবার ঈদে রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন রেলপথে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারবে। এছাড়া ঢাকা- খুলনা, ঢাকা-পার্বতীপুর রুটে ঈদ স্পেশাল দুইটি ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে কতৃপক্ষ। এ কারণে ১২০ টি কোচ মেরামতের পাশাপাশি আরও অতিরিক্ত ৬০ কোচ মেরামত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। । দুর্নীতিবাজদের যোগসাজশে তাঁকে অনত্র বদলী করায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে সৈয়দপুরে মেরামত হচ্ছে ১২০ রেল কোচ

Update Time : ০১:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাত্রী সেবা দিতে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত করা হচ্ছে ১২০টি রেল কোচ। সেই সাথে নিয়মিত যাত্রী সেবা দিতে আরও ৬০ টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে কারখানায়। ১২ মার্চ বুধবার রেল কারখানায় গিয়ে দেখা যায় এমনই দৃশ্য।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি শপে তীব্র জনবল সংকটেও শ্রমিক-কর্মচারীরা দিনরাত অতিরিক্ত কাজ করে চলছে। মেরামতকৃত কোচ দিয়ে দুটি স্পেশাল ট্রেনসহ প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনের বহরে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে অধিক সংখ্যক যাত্রী সেবার মান বাড়াতে কারখানায় বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। জরাজীর্ণ কোচগুলো মরিচাধরা ইস্পাতের অংশ সেঁটে ফেলা হচ্ছে। সেই সাথে কোচে নতুন আসন স্থাপনের পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ অঙ্গসজ্জার কাজ চলছে জোরেশোরে।শুধু তা-ই নয় ২৮ টি উপ-কারখানায় রয়েছে কর্মমুখর অবস্থা।

সূত্রে জানা যায়, ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। শুরুতে এ কারখানায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করলেও বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৭০৭ জন। নতুন নিয়োগ না থাকায় এ কারখানায় জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নাম মাত্র জনবল দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রেলওয়ের বিশাল এই কারখানাটি।

ক্যারেজ শপের ইনচার্জ মমিনুল ইসলাম বলেন, জনবল সংকট থাকায় ১০ জনের জায়গায় কাজ করছেন মাত্র ২ জন দক্ষ শ্রমিক। এর পরেও আসন্ন ঈদে যাত্রী সেবা স্বাভাবিক রাখতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১২০ টি কোচ মেরামত করা হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে ৯০ টি ব্রডগেজ(বড়) ও ৩০ টি মিটারগেজ (ছোট) কোচ।ইতিমধ্যে ৬৮ টি কোচ মেরামত শেষে রেলওয়ে পরিবহন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি গুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হস্তান্তর করা হবে।

রেল কারখানার শ্রমিকরা জানান, আমাদের জনবল সংকট থাকলেও ঈদে যাত্রীসেবা দেওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঈদে যাত্রীদের সেবা দেয়ার জন্য অতিরিক্ত শ্রম হলেও আমাদের কষ্ট নেই। ঈদে ঘরমুখো মানুষ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়িতে নিরাপদে ফিরতে পারে এজন্য আমরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকরা বলেন, কারখানায় কম শ্রমিক থাকা সত্বেও বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান সাহেবের কারনেই দুর্নীতি অনেকটা কমে গিয়েছিল। ২ বছরে প্রায় ৩ শতাধিক রেল কোচ নির্মাণ হয়েছে।  কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সঠিক সময়ে কারখানায় আসা যাওয়া করতেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চুরি চামারি। কিন্তু এই কারখানায় একটি কুচক্রী মহল তাদের স্বার্থ হাসিল করতে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ তুলে ধরায় ডিএস সাহেবকে অনত্র বদলী করা হয়েছে। যার কারনে সৈয়দপুর রেল কারখানায় উন্নয়নে ভাটা পরবে বলে আশংকা করছেন তারা।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান বলেন, আমি যোগদানের আগ থেকে জনবল সংকট ছিল এই কারখানায়। এরপরেও  ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যৎ সামান্য লোক নিয়ে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছি।আশাকরি এবার ঈদে রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন রেলপথে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারবে। এছাড়া ঢাকা- খুলনা, ঢাকা-পার্বতীপুর রুটে ঈদ স্পেশাল দুইটি ট্রেন চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে কতৃপক্ষ। এ কারণে ১২০ টি কোচ মেরামতের পাশাপাশি আরও অতিরিক্ত ৬০ কোচ মেরামত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। । দুর্নীতিবাজদের যোগসাজশে তাঁকে অনত্র বদলী করায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।