রাজশাহীর তানোরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত বিএনপি কর্মী গানিউল জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থান দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। তার বাড়ি উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন ইউপির মোহনপুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার বিকেল প্রায় সোয়া চারটার দিকে নিজগ্রামে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাযার নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, ও বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন।
জানাযায় অংশ গ্রহণ করেন রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিশিষ্ট শিল্পপতি এডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক, গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাওয়াল, তানোর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান, সাবেক সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হযরত আলী, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আলমগীর হোসেন, পৌর বিএনপির আহবায়ক একরাম আলী মোল্লা, বাধাইড় ইউপির সিনিয়র নেতা সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান হেনা, সাবেক ইউপি নেতা প্রভাষক মফিজ উদ্দিন, Strictly ইউপি জামায়াতের আমীর জুয়েল রানা সহ দুই উপজেলার শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জানাযায় দুই উপজেলার বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ অংশ নেয় ।
জেলা বিএনপির আহবায়ক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, যারা এহত্যার সাথে জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। যত বড়ই নেতা হোন তাকে বিচারের আওতায় আসতেই হবে এবং দলীয় ভাবেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, বিএনপি কর্মী গানিউল হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই ইউপি বিএনপির একাংশের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মমিনুল হক মমিন বাদী হয়ে বুধবার দিবাগত রাতে সাবেক মেয়র জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান কে প্রধান ও পাঁচন্দর ইউপি বিএনপির একাংশের সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমান কে দুই নম্বর আসামী সহ ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দলীয় নেতারা জানান, গত বুধবার বিকেল তিনটার দিকে গানিউল মারা গেছেন। অথচ হাসপাতালে না গিয়ে মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন সরনজাই ইউপিতে দলীয় ইফতারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এসব নিয়ে তৃনমূলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। কারন ইফতার মাহফিলে শরিফ উদ্দিন কে বরণ করা নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে মাথা সহ শরীরে মারাত্মক আঘাত পেয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গানিউল। হাসপাতালেও দেখতে যাননি শরিফ উদ্দিন। এছাড়াও উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইফতার বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
ওসি আফজাল হোসেন জানান, আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার উপজেলায় পাঁচন্দর ইউনিয়ন ইউপি বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন কে বরণ করা নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মমিনুল হক মমিন ও কয়েল হাট ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মজিবুর রহমানের গ্রুপের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মমিনের ভাই গানিউলের মাথাসহ শরীরে বেধড়ক আঘাত করে মজিবুরের লোকজন। আঘাতে মাটিতে নুযে পড়েন গানিউল। তাকে মাটিতে ফেলে সাবেক চেয়ারম্যান মমিনকে তেড়ে তেড়ে পেটায়। এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়।