Dhaka ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাগুরায় ধর্ষনের অভিযুক্তদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা আছিয়ার বাড়িতে গেলেন আফরোজা আব্বাস

মাগুরায় ধর্ষণের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় শহরের নোমানী ময়দানে জানাজা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। শুক্রবার আছিয়ার বাড়িতে যান জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস। তিনি আছিয়ার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এ  সময় কেন্দ্রীয় নেত্রী নেওয়াজ হালিমা আরলি, মাগুরা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী উম্মে কুলসুম উর্মিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের নিজনান্দুয়ালী চরপাড়ার ওই বাড়িতে বসবাস করতো শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বোনের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভাশুর। বোনের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতো। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালায়।

পুলিশ জানায়, জানাজার পরপরই স্থানীয় জনতা দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন তারা। এ সময় ধর্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।ভায়না মোড়ে সড়ক অবরোধ করে শ্লোগান দেয় ছাত্র জনতা।

মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে জানাজা শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ওই বাড়িটি পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

মাগুরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রিপন হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে জানতে পারি হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমরা অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি নিয়ে রওনা দিলেও মাঝপথে গ্রামের বিক্ষুব্ধরা আমাদের গতিরোধ করলে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। ফলে বাড়িতে এখনও আগুন জ্বলছে।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর পুলিশ কয়েক দফা সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বিক্ষুব্ধদের প্রতিরোধের মুখে সেটি সম্ভব হয়নি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে মাগুরায় পৌঁছে শিশুটির মরদেহ। হেলিকপ্টারটি মাগুরা স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। লাশ নিয়ে যায় নোমান ময়দানে। সন্ধ্যা ৭টায়  নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় যোগ দিয়েছেন  বিভিন্ন শ্রেণিপেশার কয়েক হাজার মানুষ। চোখের জলে শিশুটিকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন তারা।

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তারাবির নামাজের পর তার গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এই জানাজার পর পার্শবর্তী সোনাইকুন্ডি গ্রামের  কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুল সেনসিটাইজেসন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত

মাগুরায় ধর্ষনের অভিযুক্তদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা আছিয়ার বাড়িতে গেলেন আফরোজা আব্বাস

Update Time : ০৭:৫০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

মাগুরায় ধর্ষণের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় শহরের নোমানী ময়দানে জানাজা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। শুক্রবার আছিয়ার বাড়িতে যান জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস। তিনি আছিয়ার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এ  সময় কেন্দ্রীয় নেত্রী নেওয়াজ হালিমা আরলি, মাগুরা জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী উম্মে কুলসুম উর্মিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের নিজনান্দুয়ালী চরপাড়ার ওই বাড়িতে বসবাস করতো শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বোনের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ভাশুর। বোনের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতো। তারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যাচেষ্টা চালায়।

পুলিশ জানায়, জানাজার পরপরই স্থানীয় জনতা দোষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন তারা। এ সময় ধর্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।ভায়না মোড়ে সড়ক অবরোধ করে শ্লোগান দেয় ছাত্র জনতা।

মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে জানাজা শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ওই বাড়িটি পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

মাগুরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রিপন হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে জানতে পারি হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমরা অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি নিয়ে রওনা দিলেও মাঝপথে গ্রামের বিক্ষুব্ধরা আমাদের গতিরোধ করলে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। ফলে বাড়িতে এখনও আগুন জ্বলছে।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর পুলিশ কয়েক দফা সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বিক্ষুব্ধদের প্রতিরোধের মুখে সেটি সম্ভব হয়নি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে মাগুরায় পৌঁছে শিশুটির মরদেহ। হেলিকপ্টারটি মাগুরা স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। লাশ নিয়ে যায় নোমান ময়দানে। সন্ধ্যা ৭টায়  নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় যোগ দিয়েছেন  বিভিন্ন শ্রেণিপেশার কয়েক হাজার মানুষ। চোখের জলে শিশুটিকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন তারা।

শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তারাবির নামাজের পর তার গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এই জানাজার পর পার্শবর্তী সোনাইকুন্ডি গ্রামের  কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।