Dhaka ০৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উদ্বোধন হলো দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেল সেতু

filter: 0; jpegRotation: 0; fileterIntensity: 0.000000; filterMask: 0;

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এবং বাংলাদেশের দীর্ঘতম ‘যমুনা রেলসেতু’ উদ্বোধন হলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের রেল চলাচল আরও সহজ হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে সেতু পূর্বপাড় ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন এলাকায় পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সেতুটির উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরয়ুকি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান।

এসময় রেল সচিব বলেন, উত্তরবঙ্গের ব্যবসা, বাণিজ্য ও মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে এই সেতু অনিবার্য ভূমিকা রাখবে। আগে যেখানে ডমনা নদী পাড়ি দিতে ২০-২৫ মিনিট সময় লাগতো এখস মাত্র ৩-৫- মিটিটেই নদী পার হচ্ছে মানুষ। মঙ্গলবার থেকে দুই লাইনেই ট্রেন চলাচল করবে বলেও জানান তিনি। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করেছিলো। এতে সেতুটি পাড়ি দিতে সময় লেগেছিলো প্রায় সাড়ে ৩ মিনিট।

৫০টি পিয়ার (পিলার) আর ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির অবকাঠামোতে দাঁড়িয়ে থাকা সেতুটির স্থায়িত্ব শত বছর বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডাবল ট্র্যাক রেল লাইন তৈরি করা হবে। এর ফলে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। তবে বর্তমানে সিঙ্গেল ট্র্যাকের রেল লাইন হওয়ায় সেতুটির পুরোপুরি সুফল এই মুহূর্তে মিলবে না বলেও স্বীকার করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, জাপান-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ ও আধুনিক রেল সেতুর এটি। চার দশমিক আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রায় ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুটি কেবল একটি প্রকৌশলগত বিস্ময় নয়। সেতুটি জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখবে। ভারত, মিয়ানমার ও নেপাল, ভুটানসহ এ অঞ্চলের ট্রানশিপমেন্ট কেন্দ্র ও ট্রান্সপোর্ট হাব হিসেবে গড়ে ওঠার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে দেশের। এছাড়া ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে এই সেতু।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

ফুলবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে লীজকৃত কানাহার পুকুর নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মত বিনিময় সভা

উদ্বোধন হলো দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেল সেতু

Update Time : ০২:২৮:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এবং বাংলাদেশের দীর্ঘতম ‘যমুনা রেলসেতু’ উদ্বোধন হলো। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের রেল চলাচল আরও সহজ হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে সেতু পূর্বপাড় ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন এলাকায় পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সেতুটির উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরয়ুকি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান।

এসময় রেল সচিব বলেন, উত্তরবঙ্গের ব্যবসা, বাণিজ্য ও মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে এই সেতু অনিবার্য ভূমিকা রাখবে। আগে যেখানে ডমনা নদী পাড়ি দিতে ২০-২৫ মিনিট সময় লাগতো এখস মাত্র ৩-৫- মিটিটেই নদী পার হচ্ছে মানুষ। মঙ্গলবার থেকে দুই লাইনেই ট্রেন চলাচল করবে বলেও জানান তিনি। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করেছিলো। এতে সেতুটি পাড়ি দিতে সময় লেগেছিলো প্রায় সাড়ে ৩ মিনিট।

৫০টি পিয়ার (পিলার) আর ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তির অবকাঠামোতে দাঁড়িয়ে থাকা সেতুটির স্থায়িত্ব শত বছর বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডাবল ট্র্যাক রেল লাইন তৈরি করা হবে। এর ফলে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। তবে বর্তমানে সিঙ্গেল ট্র্যাকের রেল লাইন হওয়ায় সেতুটির পুরোপুরি সুফল এই মুহূর্তে মিলবে না বলেও স্বীকার করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, জাপান-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ ও আধুনিক রেল সেতুর এটি। চার দশমিক আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রায় ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুটি কেবল একটি প্রকৌশলগত বিস্ময় নয়। সেতুটি জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ভূমিকা রাখবে। ভারত, মিয়ানমার ও নেপাল, ভুটানসহ এ অঞ্চলের ট্রানশিপমেন্ট কেন্দ্র ও ট্রান্সপোর্ট হাব হিসেবে গড়ে ওঠার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে দেশের। এছাড়া ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে এই সেতু।