Dhaka ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলা, পুলিশসহ আহত ৫

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে ক্ষেতলাল থানায় এ ঘটনা ঘটে।

থানা পুলিশসুত্রে জানা যায়, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে ছিঁনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির  সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে থানায় আক্রমণ করে। দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্য বাঁধা দিলে তাদের মেরে আহত করে  থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে  ৩ জনকে আটক করে সেনাবাহিনী।

আহতরা হলেন, পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম (২৭), বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক (৩৭) ও আব্দুল মমিন (৩৮)। আহত দুই পুলিশ সদস্য কাজী জাফর ও সুমন। সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জে আহত হোন  উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক।

ভুক্তভোগী আহত রফিক সাংবাদিকদের জানান, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য ক্ষেতলাল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আসেন। এসময় স্থানীয় পৌর বিএনপির ৯ নং ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপিকর্মী মাসুদ চৌধুরী, গোলাম মওলা ও জুয়েল সেখানে উপস্থিত হয়ে তার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে তারা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থকে বিষয়টি জানায়।

খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ সেখানে উপস্থিত হয়ে চাঁদা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। তাকে বাধা দিতে গেলে তোফাজ্জলসহ তার চার আত্মীয়কে মারপিট করে রক্তাক্ত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ থানা থেকে তোফাজ্জলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।

থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা বাকি তিনজনকে ছিঁনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন  থানায় আক্রমণ করে দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্যকে আহত করে থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনীর ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকসহ ৩ জনকে আটক করে সেনাবাহিনী।

খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য থানায় অবস্থান নেয়।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, দলের যে কেউ হোক যে অপরাধ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া  হবে।

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযান অব্যাহত আছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আলোচিত

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলা, পুলিশসহ আহত ৫

Update Time : ১০:১৭:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই পুলিশ সদস্যসহ ৫ জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে ক্ষেতলাল থানায় এ ঘটনা ঘটে।

থানা পুলিশসুত্রে জানা যায়, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে ছিঁনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির  সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে থানায় আক্রমণ করে। দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্য বাঁধা দিলে তাদের মেরে আহত করে  থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে  ৩ জনকে আটক করে সেনাবাহিনী।

আহতরা হলেন, পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম (২৭), বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক (৩৭) ও আব্দুল মমিন (৩৮)। আহত দুই পুলিশ সদস্য কাজী জাফর ও সুমন। সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জে আহত হোন  উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক।

ভুক্তভোগী আহত রফিক সাংবাদিকদের জানান, ক্ষেতলাল পৌর এলাকার শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য ক্ষেতলাল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আসেন। এসময় স্থানীয় পৌর বিএনপির ৯ নং ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপিকর্মী মাসুদ চৌধুরী, গোলাম মওলা ও জুয়েল সেখানে উপস্থিত হয়ে তার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে তারা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থকে বিষয়টি জানায়।

খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ সেখানে উপস্থিত হয়ে চাঁদা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। তাকে বাধা দিতে গেলে তোফাজ্জলসহ তার চার আত্মীয়কে মারপিট করে রক্তাক্ত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ থানা থেকে তোফাজ্জলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।

থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা বাকি তিনজনকে ছিঁনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন  থানায় আক্রমণ করে দায়িত্বরত ২ পুলিশ সদস্যকে আহত করে থানা অবরুদ্ধ করে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে সেনাবাহিনীর ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকসহ ৩ জনকে আটক করে সেনাবাহিনী।

খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য থানায় অবস্থান নেয়।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, দলের যে কেউ হোক যে অপরাধ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া  হবে।

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযান অব্যাহত আছে।