আশানুরুপ বাজার মূল্য না পাওয়া ও হিমাগারে পর্যাপ্ত জায়গার সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন বগুড়ার নন্দীগ্রামের আলু চাষিরা। ন্যায্য মূল্য না পাওয়াই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে কৃষকরা। উপযুক্ত দামের আশায় তারা মাঠেই আলু নিয়ে রাত্রি যাপন করছে।
আলু চাষিরা জানিয়েছেন, উৎপাদন ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের বীরপলি গ্রামের আলু চাষি আলমগীর হোসেন জানান, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম উৎপাদন খরচের তুলনায় কম। অন্যদিকে, সংরক্ষণের জন্য হিমাগারগুলোতেও পর্যাপ্ত জায়গা নেই, যার ফলে বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে । যা আমাদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এবার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আলুর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩০৫০ হেক্টর থাকলেও চাষাবাদ হয়েছে ৫০০৫ হেক্টর। এরমধ্যে কার্ডিনাল ৫৪৫ হেক্টর, এস্টারিক্স ৮১৫ হেক্টর, ডায়মন্ড ২৬৭০ হেক্টর, পাকড়ি ৯৬৫ হেক্টর ও ক্যারেজ ১০ হেক্টর।
আলু চাষি মকবুল হোসেন বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে আলু উৎপাদন করেছি। ফলনও ভাল হয়েছে। আলু তোলার পূর্বেই আমি হিমাগরে বুকিং দিয়েও জায়গা সংকটের কারণে আলু রাখতে পারিনি। বর্তমানে বাজারে আলুর দাম কম। এই দামে আলু বিক্রয় করলে আমাদের লোকশান গুনতে হবে। তাই ন্যায্যমুল্যের আশায় মাঠেই আলু নিয়ে রাত্রি যাপন করছি।
প্রতি বিঘা জমিতে এবার আলু চাষাবাদে খরচ হয়েছে ৫৫-৬০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ১০০-১১০ মণ হারে আলুর ফলন হলেও আলুর পাইকারি বাজার মূল্য আশানুরুপ নয়। বর্তমানে প্রতি মণ আলু ৪শ থেকে ৪ শ ৮০ টাকা দয়ে বিক্রয় হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের দাবী, সরকার যদি আলুর ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে, তবে তারা উপকৃত হবেন। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, এবার নন্দীগ্রাম উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজার মূল্য অনেকটা স্বাভবিক রয়েছে। তবুও কৃষকরা লাভবান হবে। তিনি আরও বলেন, হিমাগারে জায়গা সংকটের কারণে কৃষকরা বাড়িতে মাচা করে সারা বছর আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন। এব্যাপারে আমার বিভিন্ন মিটিং ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।